আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে চতুর্থদিনের মতো ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। এ দিন দেওয়া হচ্ছে ৩০ এপ্রিলের টিকিট। ৩০ এপ্রিলের টিকিট পেতে সোমবার (২৫ এপ্রিল) থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন হাজারো টিকিট প্রত্যাশী। যাদের একটা বড় অংশই স্টেশন এলাকাতেই সেরেছেন ইফতার ও সেহরি। অনেক নারীরাও এসেছেন সেহরির আগে থেকে। সবার লক্ষ্য ৩০ এপ্রিলের টিকিট প্রাপ্তি। সরেজমিন ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, এদিন টিকিট প্রত্যাশীরাই লাইনে সিরিয়াল লিখে রাখছেন। সবাই যাতে সিরিয়াল মেইনটেইন করতে পারে এটাই তাদের লক্ষ্য। লাইন ভেঙে কেউ দাঁড়াতে চাইলেই পেছন থেকে অন্য টিকিট প্রত্যাশীরা চিৎকার দিয়ে উঠছেন। এতে কেউ লাইনের আগে যেতে সাহস করছেন না।

ট্রেনের ৩০ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি শুরু, উপচেপড়া ভিড়

এছাড়া স্টেশন এলাকায় লাইন ঠিক রাখতে একটু পরপর বাঁশি বাজিয়ে সবাইকে সতর্ক করছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বা আরএনবি। কালো বাজারে যাতে কোনো টিকিট বিক্রি না হয় এজন্য স্টেশন এলাকায় রয়েছে র্যাব, পুলিশ, ডিএমপি পুলিশসহ আনসার সদস্যরা। র্যাব-পুলিশের বুথও রয়েছে স্টেশন এলাকায়।

মো. সোলাইমান ও আনাস ভূঁইয়া দুই বন্ধু। দুজনেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম চাকরি করছেন। প্রতিবারের মতো এবারও নিজ বাড়ি খুলনায় পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার কথা। ২৮ এপ্রিল থেকে তাদের অফিস ছুটি। কিছু কেনাকাটা সেরে ২৯ এপ্রিল ট্রেনে করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেবেন। কিন্তু রেলস্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে পাঁচঘণ্টা অপেক্ষার পরও মেলেনি আগাম টিকিট। কি আর করার টিকিট পাওয়ার প্রত্যাশায় লাইনে দাঁড়িয়েই অপেক্ষার পহর গুণছেন তারা। এখন তাদের লক্ষ্য ৩০ এপ্রিলের আগাম টিকিট। সেই জন্যই রেলস্টেশনে সেরেছেন ইফতার-সেহরি।

টিকিট প্রত্যাশী সোলাইমান বলেন, সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৪টার পর পরই স্টেশনে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে দেখি লাইনে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকশ টিকিট প্রত্যাশী। তারপরও মনে হয়েছিল টিকিট পাবো, কিন্তু পায়নি। সোমবার দুপুর থেকে আবারও লাইনে দাঁড়িয়েছি। আজ মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) কাউন্টারের সামনের সারিতে আছি। আশা করছি আজ টিকিট মিস হবে না। আমার মতো হাজারো টিকিট প্রত্যাশী অপেক্ষা করছেন।

ট্রেনের ৩০ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি শুরু, উপচেপড়া ভিড়

টিকিট প্রত্যাশী উম্মে হাবিবা, যাবেন রাজশাহী। তিনি সিল্কসিটি, ধুমকেতু বা পদ্মা এক্সেপ্রেসের টিকিট নিতে এসেছেন। হাবিবা জাগো নিউজকে বলেন, নারীদের জন্য এবার দু’টি কাউন্টারে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। তবে কাউন্টারের তুলনায় টিকিট প্রত্যাশীদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় রাত ২টার পর পরই আমরা কয়েকজন চলে এসেছি। এখানে সেহরি খেয়েছি, আনন্দ আর আড্ডায় সময় কেটে যাচ্ছে। ভালোই লাগছে, এখানে সেহরি খাওয়ার মজাটাও আলাদা। এখন টিকিটটা ঠিকঠাক পেলেই হয়।

এবারের ঈদযাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ১ মে থেকে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শনিবার (২৩ এপ্রিল) থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। রোববার (২৪ এপ্রিল) থেকে ২৮ এপ্রিলের টিকিট দেওয়া হয়, ২৫ এপ্রিল দেওয়া হয় ২৯ এপ্রিলের টিকিট, ২৬ এপ্রিল দেওয়া হবে ৩০ এপ্রিলের টিকিট।

আর ২৭ এপ্রিল দেওয়া হবে ১ মে’র টিকিট। এছাড়া ৩ মে ঈদ হলে ২৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ২ মে’র ট্রেনের টিকিট। ঈদযাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১ মে থেকে। এবারের ঈদযাত্রার সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। আজ থেকে বিশেষ ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হবে।

Jag/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে