মো:সাব্বির হোসেন রনি, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার অন্তর্গত বড় জামালপুর গ্রামে অবস্থিত এই মসজিদটি। উপজেলা সদর হতে ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। লোকমুখে শোনা যায় ৯৩০ সালে পারস্য থেকে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে আসা হযরত শাহজামাল (র:) এর হাতেই নির্মিত হয় এই ঐতিহাসিক মসজিদ। তার নামানুসারে জামালপুরের ও নামকরণ করা হয়।

মুসলিম সাম্রাজ্যের পতনের পর ইংরেজ শাসন আমলে মসজিদটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে মাটির নিচে চাপা পড়ে। মসজিদ এলাকায় লোকবসতি না থাকায় বনজঙ্গল আচ্ছন্ন হয়ে মসজিদটি ঢাকা পড়ে। গত ৬০ দশকের প্রথম দিকে গাইবান্ধা মহকুমা প্রশাসক হক্কানী কুতুবউদ্দিন নামে এক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি এসডিও হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর স্থানীয় লোকদের কাছে শাহী মসজিদটির ইতিকথা শোনেন। লোকজনের কথা শুনে তিনি স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় মসজিদটি অনুসন্ধান করতে থাকেন। কিন্তু মসজিদটির জায়গায় বিশাল বটবৃক্ষ গজিয়ে ওঠায় মসজিদটি বটবৃক্ষের আড়ালে ঢাকা পড়ে গিয়েছিল। হঠাৎ একদিন প্রচন্ড এক ঝড়ে বটবৃক্ষটি ভেঙ্গে পড়লে স্থানীয় লোকজন মসজিদটি দেখতে পায়। সেই থেকে মানুষ মসজিদটিকে গায়েবী মসজিদ হিসাবে অবহিত করে। জামালপুর গায়েবী মসজিদের সামনে একটি বিশাল আকারের দীঘিও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। কথিত আছে আজ হতে সাতশত বছর পূর্বে এ এলাকায় খিরোধর (গঞ্জিও) নামে এক অত্যাচারী হিন্দু রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন তিনটি স্টেটের মালিক। সেই খিরোধর রাজার পাইক-পেয়াদা ছিল অনেক। রাজার পাইক-পেয়াদারা প্রজাদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালাত। পক্ষান্তরে প্রজারা রাজার নির্যাতন নিরবে সহ্য করত। লোকমুখে কথিত আছে, এমনি সময় সিলেটের কামেল ব্যক্তি হযরত শাহজামাল চৌধুরী (র:) স্বপরিবারে এ এলাকায় আগমন করেন বলে । সেই থেকে মসজিদটির নামকরণ হয় শাহজামাল শাহী মসজিদ এবং ইউনিয়নের নামকরণ জামালপুর হয় বলে জনশ্রুতি আছে।

বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকাবাসী মূল অবকাঠামো ঠিক রেখে মসজিদের সামনের অংশে বারান্দা নির্মাণ করে মসজিদের মেঝে সমপ্রসারণ করেছে।মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি মাজার। মাজারটি হযরত শাহ জামাল এর বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

মসজিদের মুল অবকাঠামোর কিছুটা ভুগর্ভে চলে গেলেও এখনো মাথা উঁচু করেই আমাদের ঐতিহ্যকে জানান দেয়। মসজিদের পাশেই বিশাল আকৃতির একটি দীঘি মসজিদ এর সৌন্দর্য কে করেছে আর বিকশিত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে