কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শুণ্য থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান।

এতে করে পাঠদানসহ শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে ১৭৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩০ টি প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নেই। প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারি শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। যার ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সমস্যা হচ্ছে বলে অভিভাবকরা জানান।

একজন সহকারি শিক্ষকের যোগ্যতা ও প্রধান শিক্ষকের যোগ্যতা সমান নয়। কিভাবে সহকারি শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে পারে প্রশ্ন অভিভাবক মহলের মাঝে। সহকারি শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পরেই শুরু হয়েছে বিদ্যালয় গুলোতে অনিয়মের আখড়া।

পের টাকা আত্মসাৎ, সময়মতো স্কুলে না আসা, শিক্ষা র্থীদের ক্লাস না নেওয়া এসব অনিয়মের বিষয়গুলো পত্রিকায় প্রকাশ হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় নি কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে এ উপজেলায় ১৭৫টি বিদ্যালয়ে রয়েছে ২৪ হাজার শিক্ষার্থী। কিন্তু উপস্থিতির সংখ্যা ৬০% এর কম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে চাঁদখানা বাবু পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। এ স্কুলে হাজিরা খাতায় ১৩৫ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও প্রতিনিয়ত প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৮ থেকে ১০জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে।

এদিকে দক্ষিন সিঙ্গেরগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় ১১৭ জন শিক্ষার্থীর নাম থাকলেও প্রতিনিয়ত ১৬ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকেন। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি না থাকার কারন হিসেবে লক্ষ্য করা যায় যে, ওই বিদ্যালয় গুলোতে কোন অভিভাবক কিংবা মা সমাবেশ এবং এসএমসি মিটিংসহ কোনটি করা হয় না,এমনকি হোম ভিজিট করার নিয়ম থাকলেও সেটি করেন না তারা।

কয়েক জন অভিভাবক জানান সহকারি শিক্ষক থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ায় এবং বিদ্যালয়ে লেখাপড়া মান কমে যাওয়ায় আমাদের সন্তানকে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিয়েছি।

যে বিদ্যালয়ে লেখাপাড়া নেই সেই বিদ্যালয়ে অহেতুক আমাদের সন্তানকে রেখে লাভ কি। বিদ্যালয় গুলোর ক্যাচমেন্ট এলাকার সচেতন মহল জানান,আসলেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষারমান বাড়ানো সম্ভব নয়।

তাছাড়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর তেনারা সহজেই ঐ দায়িত্ব থেকে সরে আসতে চান না এমনকি কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজকরে দীর্ঘ সময় ধরে থাকার চেষ্টা করে।

যার ফলে আমরা বাচ্চাদের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান গুলোতে ভর্তি করে দিচ্ছে। উপজেলার যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছে, মাগুড়া মাষ্টারপাড়া বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন চাঁদখানা বাবু পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন সিঙ্গেরগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর বড়ভিটা মধ্য পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পুটিমারী ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন ভেড়ভেড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিতাই ছলিমের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন দুরাকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিশামত রনচবন্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দলিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজেডুমরিয়া ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুশা-পুষনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর গাড়াগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর ভেড়ভেড়ী কামাল উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পূর্বদলিরাম গোস্বামী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,উত্তর বদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিতাইগাংবের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,গাড়াগ্রাম চিরাতী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর বড়ভিটা চন্দনপাঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন বদি বড়গঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম বদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর মাষ্টারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘোন পাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বদি শিশু কল্যান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বানিয়াপাড়া নিউ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পানিয়াল পুকুর দোলা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেশবা উদয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,বাংলাদেশ শিশু সৈনিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দরগার পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শরীফা আখতার এর সাথে একাধিকবার মুঠো-ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে