সিরাজগঞ্জ থেকে,মারুফ সরকারঃ শত বছরের পুরানো তাড়াশের বিনসাড়া হাটের জায়গা অবৈধ দখলে নিয়ে ঘর করে বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছে এক শ্রেণির প্রভাবশালী। মালিকানা ঠিক রাখার জন্য নির্মান করা হয়েছে লোক দেখানো ছোট-বড় প্রায় অর্ধ শতাধিক দোকান ঘর। হাটের জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার ওপর চলছে কেনা-বেচা। দখল মুক্ত করে হাটের স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরানোর জন্য করা হয়েছে লিখিত অভিযোগ।

উপজেলার বারুহাস ইউপির বিনসাড়া গ্রামে তাড়াশ-রাণী হাট রাস্তার পাশে সপ্তাহে রবিবার ও বুধবার বিনসাড়া হাট বসে। হাটে বিনসাড়া, কাজিপুর, আসানবাড়ি, পেঙ্গুয়ারি, বলভা, শিবপুর, মালশিন, বস্তুল, পালাশি, কহিত, কুসুম্বীসহ আশপাশের আরো ১০ গ্রামের হাজারো মানুষের আনাগোনা হয়। তুলনামূলক উপজেলা সদরের তাড়াশ বাজারটি দূরে হওয়ায় লোকজনের কাছে বিনসাড়া হাট-ই কেনা-বেচার প্রধান মাধ্যম। কৃষি প্রধান তাড়াশ উপজেলার সব থেকে বড় ধানের হাট বিনসাড়া। বছর জুড়ে টনকে টন ধান বেচি-কিনি হয় এই হাটে। সরেজমিনে দেখা যায়, হাটের মূল জায়গায় ৪৪ টি ঘর পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। মালামাল দোকান বিছিয়ে বসার জায়গা না থাকায় অনেকে বসে পড়েছেন অন্যের জমার জায়গা আর পতিত জমির মধ্যে।

জায়গা না পেয়ে ফিরে যায় দূর থেকে আসা অনেক দোকানি। হাটের সঙ্গে পাকা রাস্তার ওপর সপ্তাহে দুই দিন বসে ধানের হাট। ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে দিনভর চলে কেনা-বেচা এবং লোড-আন লোডের কাজ। উত্তর বঙ্গের একমাত্র প্রবেশদ্বার তাড়াশ-রাণী হাট রাস্তায় হাট বসার কারণে এই পথে যাতায়াতকারী হাজার হাজার মানুষের পোহাতে হয় দুর্ভোগ। হাটে আসা ভাসমান দোকানদার শাহাদত হোসেন, আবু সামাদ, হাফিজুর রহমান, মনি মিঞা জানান, দখলদাররা হাটের জায়গা অবৈধভাবে দখল নিয়ে ঘর নির্মাণ করে ফেলে রেখেছে। হাটে দোকান নিয়ে বসার জায়গা না থাকায় অন্যের জায়গা-জমি বা রাস্তায় দোকান বিছাতে হয়। কোন কোন হাটে বসার জায়গা না পেয়ে ফিরে যায় অনেকে।অভিযুক্ত আনছার আলী, জামাল হোসেন, গনি মিঞা, ফজর আলী জানান, অবৈধ ঘর হাটে আরো অনেক আছে। সরকারের নির্দেশনা পেলে ঘর ভেঙে হাটের জায়গা মুক্ত করে দেব।

হাটের ইজারাদার মো. আব্দুস সালাম (ভুট্র) জানান, দোকানিদের দোকান নিয়ে বসার জায়গা প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলে থাকায় হাটের কেনা-বেচা আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। সরকারের রাজস্ব নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে। হাটের জায়গা অবৈধ দখল মুক্ত করে স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে। শিগগিরই দখলমুক্ত করা না হলে জায়গা সংকটে একেবারে বন্ধ হয়ে যেতে পারে অতি প্রাচীণ বিনসাড়া হাট।এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ মনসূর উদ্দিন বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে