গোলাপগঞ্জ (সিলেট) থেকে,আজিজ খান :  সিলেটের গোলাপগঞ্জে ভাদেশ্বর নাসির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের নবনির্মিত ভবনের ছাদ ভেঙ্গে পড়েছে এমন বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশে সর্বমহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা না বুঝে অনেকেই ফেইসবুকে ছবিসহ বিষয়টি প্রচার করতে থাকলে নব-নির্মিত ভবনের ছাদ ভেঙ্গে পড়েছে মর্মে কথাটি ব্যাপকভাবে প্রচার পায়। এতে শিক্ষা বিভাগ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মূলত ভবনের ছাদ নয় ঐ ভবনের সিঁড়ির ছাদ নির্মাণের এক সপ্তাহ পর রাজমিস্ত্রী কাউকে না বলে সিঁড়ির ছাদের নিচের বাঁশ খুলে ফেললে ঢালায়ের একটি অংশ দেবে যায়। সিঁড়ির উপরের ছাদকে অনেকেই মূল ভবন হিসেবে চিহ্নিত করে সংবাদ প্রচার করতে থাকলে সর্বমহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়াসহ বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।

গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাদেশ্বর নাসির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্প্রতি কোটি টাকা বরাদ্দে পূর্বের একতলা ভবনের উপর আরও দু’তলা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। দু’তলা ও তিন তলার নির্মাণ কাজ শেষে সিঁড়ির ছাদ ঢালাই করা হলে নিয়মানুযায়ী ২১ দিন পর ঢালাইয়ের ছাদের বাঁশ ও সাটার খোলার কথা। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বা মূল ঠিকাদারের সঙ্গে কোনরূপ যোগাযোগ না করে ঢালাইয়ের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে নির্মাণ শ্রমিক বাঁশ ও সাটার খুলে ফেললে এতে ঢালাইয়ের একটি অংশ নিচের দিকে ধাবিত হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে অপপ্রচার করতে থাকে। তারা প্রথমে ফেইসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়। বিভিন্ন সংবাদ পত্রে নতুন ভবনের ছাদ ধ্বসে পড়েছে মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ব্যপারে ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস স্থানীয় সাংবাদিকদের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বিদ্যালয়ের মূল ভবনের ছাদ ধ্বসে পড়েনি। তিন তলার নির্মাণ কাজ শেষে সিঁড়ির ছাদ ঢালাই করার পর নিয়ম মাফিক ভাবে বাঁশ ও সাটার না খুলে এক সপ্তাহ পর রাজমিস্ত্রী সেটি খুলে ফেলে। এতে সিঁড়ির ছাদের একটি অংশ ধেবে যায়। ভবনের মুল ছাদ ধাবিত হয়নি। বিষয়টি সটিক নয় বলে তিনি প্রেস বিজ্ঞপ্তি অবহিত করেছেন এবং বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশের জন্য তিনি সকল সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান।
গোলাপগঞ্জে ভাদেশ্বর নাসির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের মত একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নব-নির্মিত ভবনের ছাদ ভেঙ্গে পড়েছে এমন সংবাদে প্রশাসন সহ সর্বমহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সংবাদ শুনে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন। এদিকে গত বুধবার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিম ও জেলা প্রকৌশলী আবু সাইদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঐ রডের জালির মধ্যে ঢালাইয়ের কাজ করার নির্দেশ দেন। নির্ধারিত সময়ের পূর্বে বাঁশ ও সাটার খুলে ফেলায় ছাদ নিচের দিকে ধাবিত হয়েছে মর্মে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা জানান। বিষয়টি নিয়ে একটি মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে বলে অনেকের অভিযোগ। অনেকে স্থানীয় এমপি, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও তার ঘনিষ্ট জনদের অভিযুক্ত করে ফেইসবুকে বিভিন্ন পোষ্ট দিচ্ছেন। এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর বিশেষ প্রতিনিধি ও জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন প্রতিবেদককে জানান কোটি টাকা ব্যয়ে বহুতল বিল্ডিং নির্মাণের কাজ চলছে। একটি পক্ষ সিঁড়ির ছাদকে মুল ভবনের ছাদ হিসেবে উল্লেখ করে অপপ্রচারে লিপ্ত।
এ ব্যাপারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান। এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন প্রতিবেদককে জানান ঘটনার সংবাদ শুনে তিনি সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পান তৃতীয় তলা থেকে চতুর্থ তলায় উঠার সিঁড়ির ছাদের একটি অংশ দেবে গেছে। এ ব্যাপারে বাস্তব চিত্র তুলে ধরে তিনি একটি প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের বরাবরে পেশ করেছেন বলে জানান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে