SIRAJGONJ SENAMA HALL   PIC -01

বিডি নীয়ালা নিউজ(২৫ই মে১৬) মারুফ সরকার (বিভাগীয় প্রতিনিধি, রাজশাহী):

দর্শক সংকটের কারনে একের পর এক বন্ধ হচ্ছে সিরাজগঞ্জের সিনেমা হল গুলো। ভারতীয় সংস্কৃতির কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে সিনেমা হল মালিকদের দাবি। অপরদিকে সাধারণ দর্শকরা মনে করেন সুষ্ঠ চিন্তার চলচ্চিত্র বাংলাদেশ থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমা সংস্কৃতি এবং পার্শ্ববর্তী ভারতের আধুনিক সিনেমার নিকট বাংলাদেশের চলচ্চিত্র মারখাচ্ছে ।সরেজমিনে জানাগেছে,সিরাজগঞ্জের ৩৩ লাখ মানুষের বিনোদনের প্রধান ক্ষেত্র ছিলো সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার ৫টি এবং বিভিন্ন উপজেলার ২০টিসহ প্রায় ২৫টি সিনেমা হল । কিন্তু নানা সংকটের মধ্যে পড়ে এগুলো আজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দর্শক সংকট,নিম্নমানের চলচ্চিত্র,সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি,বিদ্যুেৎর মূল্য বৃদ্ধিসহ নানা মুখি কারনে সিনেমা হল গুলো আর চলছে না। কোন কোন মালিক সিনেমা হল গুলোকে খাদ্য গুদাম,কমিউনিটি সেন্টার,প্যাথলজি,মার্কেট এমনকি ছাত্রাবাস হিসেবে ভাড়া দিয়েছেন। ৯০দশকের শেষের দিক থেকে সিনেমা হল গুলো তাদের নিয়মিত দর্শক হারাতে বসেছেন বলে একাধিক মালিকের অভিযোগ। শহরের ইবি রোড়ের লক্ষী,মমতাজ,নীলা,বাহিরগোলা রোড়ের গোধূলী,এবং স্টেশন রোডের মৌসুমী সিনেমা হল গুলোতে এক সময় দর্শক সামাল দিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্যে নিতে হতো। কিন্তু বর্তমানে পুরোটাই তার উল্টোটা হচ্ছে। নীলা সিনেমা প্রায় ১৭ বছর ধরে বন্ধ,লক্ষী প্রায় ৪-৫ বছর,গোধূলী থেমে থেমে চললেও গত ৪মাস ধরে পুরোদমে বন্ধ ঘোষনা করে সেখানে খাদ্য গুদাম,ও ছাত্রাবাস ভাড়া দেয়ার জন্য সাইনবোর্ড দেয়া হয়েছে। আর খুঁড়িয়ে চলছে মমতাজ ও মৌসুমী। অপরদিকে জেলা শহরের বাহিরে তাঁত শিল্প ও শ্রমজিবী এলাকাখ্যাত বেলকুচি,শাহজাদপুর উল¬াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মাত্র ৪টি সিনেমা চালু আছে। তবে সেগুলোতে দর্শকের সংখ্যার ওপর নির্ভর করে ছবি প্রদর্শন চলে।তাঁত শিল্প এলাকাখ্যাত বেলকুচি উপজেলার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা রুবেল জানান,কেবল বেলকুচিতেই একসময় ১৭টি সিনেমা হল চালু ছিলো। এখন আছে মাত্র ২টি তাও আবার চলছে-চলছেনা অবস্থায়। ভিনদেশী সংস্কৃতির তোড়ে ভেসে যাচ্ছে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি। তাই সিনেমা হলে দর্শক ফেরাতে হলে আগে সুষ্ঠ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে।সিরাজগঞ্জ মমতাজ সিনেমা হলের এক কর্মচারী জানান,গত বৃহস্পতিবার ৪টি শো চলার মধ্যে চলছে ২টি। তারমধ্যে একটি ১২জন দর্শক অপরটিতে ১৭ জন। অতিতে আমরা দর্শকের নিকট থেকে বকশিস পেতাম। কিন্তু বর্তমানে মনে হয় দর্শকদের উল্টো দেয়া উচিত। সিরাজগঞ্জের দীর্ঘ দিনের সিনেমাহল ব্যবসায়ি মেখ ইমতাজ আলী কুমকুম বলেন,দেশের চলচ্চিত্র জগতে যেমন ধ্বস নেমেছে তেমনি সিনেমা হল গুলোর একই অবস্থা। পর্যাপ্ত দর্শকের অভাবে আমরা এ ব্যবসা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছি। একই সাথে সরকারি সুযোগ-সুবিধা না থাকা এবং অধিক হারে বিদ্যুতের মুল্যে বৃদ্ধিই এখন ব্যবসার প্রতিবন্ধকতার প্রধান কারণ। সচেতন সিরাজগঞ্জ বাসির পক্ষে কমরেড নব কুমার কর্মকার মনে করেন,যেভাবে সারা দেশের ন্যয় সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলাসহ জেলা সদরের সিনেমা হল গুলো বন্ধের মাধ্যমে হারিয়ে যাচ্ছে এক সময় সিরাজগঞ্জের সংস্কৃতিওনা হারিয়ে যায়। এবিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি দেয়া জরুরী। নতুবা এদশে সংস্কৃতি বলে কিছু ছিলো বা আছে তা কেউ বুঝতে পারবেনা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে