ডেস্ক রিপোর্ট : বেসরকারি খাতের নতুন ব্যাংকসমূহ সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমে অস্বাভাবিক অর্থ ব্যয় করেছে। কোন কোন ব্যাংকের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ আগের বছরের নীট মুনাফার ২০৫ শতাংশ পর্যন্ত।
বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে‘নতুন বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের পারফরমেন্স মূল্যায়ন’ শীর্ষক কর্মশালায় এ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। বিআইবিএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধূরী সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর খোন্দকার ইব্রাহিব খালেদসহ ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখেন।
কর্মশালায় ‘নতুন বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের পারফরমেন্স মূল্যায়ন’ শীর্ষক’ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মো. সোহেল মোস্তফাসহ ৪ সদস্যের একটি টিম।
বিআইবিএমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইড লাইন অনুযায়ী নীট মুনাফার ১০ শতাংশ অর্থ সিএসআরে ব্যয় করতে হবে। কিন্তু ২০১৬ সালে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ২০৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় করেছে। যা খুবই অস্বাভাবিক।এছাড়া ২০১৫ সালে ইউনিয়ন ব্যাংক ৯৯ শতাংশ, মিডল্যান্ড ব্যাংক ৯২ শতাংশ,এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ৩৫ শতাংশ ব্যয় করেছে। ২০১৪ সালে এনআরবি গ্লোবাল ৪৯ শতাংশ, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ৩৭ শতাংশ এবং ইউনিয়ন ব্যাংক ১৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন,নতুন ৯ টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে দুই-তিনটির অবস্থা খুবই নাজুক। তবে এখনই বলার সময় আসেনি যে, নতুন এই ব্যাংকগুলোর অবস্থা খুবই দুর্বল বা ভালো। যে দুই-তিনটি ব্যাংকে বিচ্যুতি দেখা দিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। সার্বিকভাবে তাদের মনিটরিং করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, নতুন ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ এখনো অনেক কম।তাই এসব ব্যাংকের হতাশ হ্ওয়ার কিছু নেই।যেখানে ৬০ শতাংশ খেলাপি ঋণ থাকা স্বত্বেও বেসিক ব্যাংক এখনো বাঁচার স্বপ্ন দেখে। সেখানে নতুন ব্যাংকের খেলাপি ১ শতাংশেরও কম।
বিআইবিএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন,বাংলাদেশে ব্যাংক অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে নতুন ব্যাংকের আদৌ প্রয়োজন আছে কিনা খতিয়ে দেখতে হবে।একই সঙ্গে খারাপ করলে লাইসেন্স বাতিলের ব্যবস্থ্ওা রাখতে হবে।
ঋণ খেলাপিদের রাজনৈতিকভাবে বয়কটের দাবি জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) সাবেক সভাপতি ও মেঘনা ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল আমিন। তিনি বলেন,খেলাপি ঋণ আমাদের এখন ভাগ্য হয়ে গেছে। ঋণ খেলাপি হ্ওয়া এখন একটা কালচার হয়ে গেছে। ঋণ খেলাপিদের সামাজিক এবং রাজনৈতিকভাবে বয়কট করতে হবে।
কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মেহমুদ হুসাইন, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমেদ চৌধুরী ও অধ্যাপক ইয়াছিন আলি প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে