ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশের গাজীপুরে উঁচুমাত্রায় নিরাপত্তা রয়েছে, এমন একটি কারাগার এলাকায় হঠাৎ করে অবতরণ করেছে একটি হেলিকপ্টার। পরে যাত্রীদের আটকের পর দেখা যায়, তারা বিয়ের দাওয়াতে এসেছেন, ভুলবশত কারাগারে নেমেছেন।বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে।

কারাগারের সীমানায় বৃহস্পতিবার একটি বেসরকারী হেলিকপ্টার অবতরণ করার পর যাত্রীদের সাময়িকভাবে আটক করে কারা কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষ বলছে, কারা এলাকার ভেতরে স্কুলের মাঠে ঐ হেলিকপ্টার অবতরণের বিষয়ে আগে থেকে তারা কিছু জানতেন না।কারাগারের মত একটি একটি স্পর্শকাতর সংস্থার এলাকায় হেলিকপ্টার অবতরণ বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে কাশিমপুরে কারা পাবলিক স্কুলের মাঠে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা এভিয়েশনের একটি হেলিকপ্টার পাঁচজন যাত্রীকে নিয়ে অবতরণ করে।

যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ান পুরুষ, তার মালয়েশিয়ান স্ত্রী এবং তিন সন্তান।কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক বলছিলেন, ঐ পরিবারটি একটি বিয়েতে অতিথি হিসেবে এসেছিলেন। হেলিকপ্টারে আসার বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে তারা জানিয়েছিলেন, কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতেন না।

 

মি. বনিক জানান, আশেপাশের নিরাপত্তারক্ষীরা কথা বলার আগেই হেলিকপ্টার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। বিষয়টি নিয়ে মেঘনা এভিয়েশনের সাথে যোগাযোগ করে কারা কর্তৃপক্ষ।যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা বিয়েবাড়ির অতিথি নিশ্চিত হলে সেখানে উপস্থিত বিয়ের আমন্ত্রণকারীদের কাছে তাদের হস্তান্তর করে কারা কর্তৃপক্ষ।

হেলিকপ্টারটির পাইলট অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সোহেল লতিফ বিবিসিকে বলেন, যেখানে হেলিকপ্টারটি অবতরণ করার কথা ছিল সেখানে পানি জমে থাকায় তিনি পার্শ্ববর্তী স্কুলের মাঠে অবতরণ করেন।তিনি বলেন, তিনি জানতেন যে এটি কারা কর্তৃপক্ষের এলাকা, তবে কারাগারের মূল স্থাপনা থেকে তারা দুরে ছিলেন।

“আবহাওয়া খারাপ থাকায় আমি কারাগারের কাছে পাবলিক স্কুলের মাঠে ল্যান্ড করি। কিন্তু কোন অবস্থাতেই কারাগারের মূল এলাকার উপর দিয়ে উড়ে যাইনি”।কর্তৃপক্ষের সাথে কথা না বলে ফিরে যাওয়ারও ব্যখ্যা দেন মি. লতিফ।

তিনি বলেন, যাত্রীরাই সাধারণত অবতরণস্থলে পুলিশ বা আনসারের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। তিনি সেখানে পোষাকধারী রক্ষীদের দেখে ভেবেছিলেন তারা যাত্রীদের সাথে যোগাযোগ করেই এসেছিলেন।কিন্তু কঠোর নিরাপত্তায় থাকা কারা এলাকায় হেলিকপ্টারটি নেমে আবার ফিরে গেল কীভাবে?

জানতে চাইলে জেল সুপার মি. বনিক বলছেন, এ ধরণের এলাকায় এ ঘটনা এই প্রথম। তবে কারাগারের মূল এলাকায় অবতরণ করলে ঘটনাটি ভিন্ন হতে পারত।”যদি কারাগারের মূল স্পর্শকাতর অংশে হেলকপ্টারটি ল্যান্ড করতো তাহলে নিরাপত্তারক্ষীদের রিঅ্যাকশনটাও অন্যরকম হতে পারতো”।

মি. বনিক বলছেন, বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে এবং দুখঃ প্রকাশ করে মেঘনা এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ তাদেরকে একটি চিঠি দিয়েছে এবং তারা সেটি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন।

বি/বি/সি/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে