এম ডি বাবুল, চট্রগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ গত ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে দেশের ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় শীর্ষ ২০ জন ঋণ খেলাপীর নাম প্রকাশ করা হয়। যা নিয়ে সারাদেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। উক্ত প্রকাশিত তালিকায় চট্টগ্রামের আসলাম চৌধুরীর রাইজিং স্টিল লিমিটেডের ঋণ ১,১৪২ কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। মহান জাতীয় সংসদেও ঋণখেলাপীদের তথ্য উপস্থাপিত হওয়ার সাথে সাথে র‌্যাব ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে ছায়া তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তে রাইজিং স্টীল লিমিটেডের পরিচালক জসিম উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে বেসরকারী এবি ব্যাংকের নিকট থেকে ৩২৫,৭৬,৩০,৯৫৫.০০ (তিনশত পচিঁশ কোটি ছিয়াত্তর লক্ষ ত্রিশ হাজার নয়শত পঞ্চান্ন) টাকা আত্মসাতের দুদকের মামলার তথ্য পাওয়া যায়।

উক্ত ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই দুদক বাদী হয়ে চট্টগ্রামের হালিশহর থানায় একটি মামলা দায়ের করে যা বর্তমানে চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলায় রাইজিং স্টিল লিমিটেডের পরিচালক জসিম উদ্দীন চৌধুরীকে ৩নং আসামী করে ২০১৭ সালে চার্জশীট দাখিল করে। চার্জশীট গঠনের পর থেকেই জসিম উদ্দিন চৌধুরী পলাতক ছিল।

পরিশেষে অদ্য ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ রাত আনুমানিক রাত ১২:৩০ মিনিটের দিকে র‌্যাবের একটি বিশেষ আভিযানিক দল ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানাধীন মোহাম্মদআলী বাজার এলাকা হতে দেশের শীর্ষ ঋণ খেলাপি প্রতিষ্ঠান আসলাম চৌধুরীর রাইজিং ষ্টীল লিমিটেডের মালিকের ছোট ভাই পরিচালক জসিম উদ্দিন চৌধুরী(৬১), পিতা-মৃত গোলাম হোসেন চৌধুরী, সাং-দক্ষিণ ভাটিয়ারি, থানা-সীতাকুন্ড, জেলা-চট্টগ্রামকে গ্রেফতার করে।

উল্লেখ্য, আসলাম চৌধুরী, তার স্ত্রী জামিলা নাজনীন মাওলা, দুই ভাই জসিম উদ্দিন চৌধুরী ও আমজাদ হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে বেসরকারি এবি ব্যাংকের সোয়া ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলার বিচার কাজ শুরু হয়েছে গত ০৬ জানুয়ারি। আগামী ০২ মার্চ মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য আছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসলাম চৌধুরীর পারিবারিক মালিকানাধীন রাইজিং স্টিল লিমিটেড পুরনো জাহাজ কেনার জন্য ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনটি ঋণপত্রের (এলসি) বিপরীতে এবি ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৩২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৫ টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করেননি। ওই ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মানিকলাল দাশ বাদি হয়ে আসলাম চৌধুরী ও তার দুই ভাই জসিম চৌধুরী, আমজাদ চৌধুরী এবং আসলাম চৌধরীর স্ত্রী নাজনীন মাওলাকে আসামি করে মামলা করেন। গত ০৬ জানুয়ারি আদালত মামলাটির অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। অভিযোগ গঠনের দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন কারাগারে আটক আসলাম চৌধুরী। চট্টগ্রামের বিজ্ঞ বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত বৃহস্পতিবার আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য ২ মার্চ দিন রাখেন।

গ্রেফতারকৃত আসামীর নামে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানায় মামলা নং ১৩(৭) ১৬ জিআর মামলা নং ০৯/১৬, সিআর মামলা নং ৯১১/১৯, ৬৯৪/১৯, ২৭৮/২০, ২৭৭/২০ এবং মতিঝিল থানায় সিআর মামলা নং ২৮৭৬/১৮/, ২৮৭৫/১৮ সহ সর্বমোট ০৮ টি মামলার ওয়ারেন্ট পাওয়া যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সীতাকুন্ড থানার মামলা নং -১৯ তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৮ ধারা-২৮৫/৩৩৬/৩০৪(ক)/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ এর এজাহার ও ওয়ারেন্ট এর মূলে সীতাকুন্ড থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে