মোঃ আমজাদ হোসেন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: মুজিববর্ষে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলা ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়ার লক্ষ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, গণমাধ্যম কর্মী, ও টাস্কফোর্স কমিটির সমন্বয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে কালাই উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ যৌথ সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও জান্নাত আরা তিথি এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) মো. মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রুহুল আমিন পাপন, উপজেলা প্রকৌশলী মকলেছুর রহমান সরদার, কালাই সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নাজিম উদ্দিন, হাতির কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আকবর মণ্ডল, মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনম শওগত হাবিব তালুকদার লজিক।

উদয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াজেদ আলী, জিন্দারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান, মুক্তি যোদ্ধা মণিশ চন্দ্র চৌধুরী প্রমুখ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে আশ্রয়নের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন অর্থাৎ যাঁদের জমিও নেই ঘরও নেই সেসব পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য সরকারি খাস জমিতে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়।

কালাই উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ১৫৫ টি ভূমিহীন পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে ৪২ টি পরিবার, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৮ টি পরিবার ও তৃতীয় পর্যায়ে ৫৫ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন। এছাড়াও বর্তমানে ২৫ টি ঘর নির্মাণাধীন আছে। নির্মাণাধীন ঘরগুলো হস্তান্তর করা হলে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হবে ১৮০ টি পরিবার।

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাত আরা তিথি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসনের দিকনির্দেশনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ১ম , ২য় ও ৩য় পর্যায়ের ঘর গুলো নির্মাণ সম্পন্ন করেন তার নেতৃত্বেই ভূমিহীনদের যাচাই-বাছাই শেষে বিভিন্ন ইউনিয়নের ছিন্নমূল মানুষের জন্য ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়।

নির্মাণাধীন ২৫ টি ঘর আবেদন কারীদের তালিকা যাচাই বাছাই শেষে ছিন্নমূল মানুষের জন্য ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে ১৫৫ টি ঘর নির্মাণ ও হস্তান্তর সম্পন্ন করা হয়েছে। বিধবা, প্রতিবন্ধী, চরম দরিদ্র, ভিক্ষুক সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এসব ঘরে জায়গা পেয়েছেন। যাঁদের নুন আন্তে পান্তা ফুরায়- তাঁরা বিল্ডিং ঘরে থাকার সুযোগ পেয়ে, খুশিতে আত্মহারা হয়েছেন।

এবিষয়ে সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণার প্রত্যয়ণ প্রদান করেছেন। তবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন সুধীজনের দাবি “ক” শ্রেণির ঘর নির্মাণের পর ভূমিহীন পাওয়া না গেলেও “খ” শ্রেণির অর্থাৎ যাদের জমি আছে ঘর নাই সেইসব পরিবারের জন্য নতুন করে উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। ভূমিহীন না থাকলেও জমি আছে কিন্তু ঘর নেই এসব পরিবারের সংখ্যা এখনো অনেক রয়েছে। তাই তারা প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি বিবেচনা করার করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও জান্নাত আরা তিথি জানান, সরকারের দেওয়া নির্দেশনা মোতাবেক স্থানীয় সংসদ সদস্য , জেলা প্রশাসক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে ক শ্রেণি ঘর গুলো নির্মাণ হয় এবং গৃহহীনদের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে এর সুফল পাচ্ছে ১৫৫ টি পরিবার। নির্মাণাধীন ২৫ টি ঘর আবেদন কারীদের তালিকা যাচাই বাছাই শেষে ছিন্নমূল মানুষের জন্য ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে।

তবে কালাই উপজেলায় আর কোন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার না থাকায় ইউএনও এই কর্মযজ্ঞে সহযোগিতার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে