puja

ডেস্ক রিপোর্টঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর দ্বিতীয় দফা হামলার পর হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা এখন জমির দলিল, জরুরী কাগজপত্র, সোনা-দানা, নগদ টাকা নিরাপদে লুকিয়ে রাখছেন।

তারা বাড়ির কমবয়সী মেয়েদেরকে দূরে, নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দেবার কথা ভাবছেন।

নাম প্রকাশ না করবার শর্তে নাসিরনগরের এক হিন্দু যুবক বিবিসি বাংলাকে বলেন, তারা তাদের বাড়ির মূল্যবান দ্রব্যাদি ভবিষ্যৎ অনিষ্টের আশঙ্কায় নিরাপদে লুকিয়ে রেখেছেন।

তিনি শুনেছেন, তার প্রতিবেশীরা, যাদের মূল্যবান দ্রব্যাদি এখনো অক্ষত রয়েছে, তারাও সেগুলো লুকিয়ে রাখতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

যদিও পুলিশের ধরপাকড়ে সাময়িকভাবে আশ্বস্ত হয়েছেন এই যুবক, কিন্তু তিনি বলছেন, “যখন পুলিশ-বিজিবি থাকবে না তখন আমাদের কে বাঁচাবে”?

“যেহেতু চোরাগোপ্তা হামলা হচ্ছে, রাতের আঁধারে এসে আগুন দিয়েছে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে তারাই বা কতটা সুরক্ষা দিতে পারবে আমাদের”?

যদিও নাসিরনগরে হামলা পরবর্তী নানা মন্তব্যের কারণে বিরাট বিতর্কে পড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এমপি এবং মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক বিবিসিকে বলেছেন, নাসিরনগরে হিন্দুদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা বোধ নেই, কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই হিন্দু যুবকের কথায় তা মনে হচ্ছে না।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আমরা কি এদেশে থাকতে পারব আদৌ? এটা কি আমাদের দেশ না? আমাদের অপরাধটা কি? আমরা কি এদেশটাকে নিজেদের মনে করতে পারি না”?

এই যুবকের বাড়ি অবশ্য দুই বার হামলা হওয়া স্বত্বেও বেঁচে গেছে।

তারপরও তিনি প্রতিবার হামলা শুরু হবার পরই তার ছোট বোনকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এবং তাকে লুকিয়ে রাখতেই ব্যস্ত হয়েছে বলে বিবিসিকে জানান।

তিনি বলেন, আশপাশের সবাই বাড়ির কিশোরী ও তরুণীদের নিয়ে চিন্তিত।

অনেকের কাছেই তিনি শুনেছেন, তারা বাড়ির কমবয়সী মেয়েদের দূরের কোন আত্মীয়ের কাছে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দেবেন বলে ভাবছেন।

গত ২৮শে অক্টোবর শুক্রবার ফেসবুকে এক হিন্দু তরুণের প্রকাশ করা একটি ছবির জের ধরে ৩০শে অক্টোবর নাসিরনগরের হিন্দু মহল্লাগুলোতে হামলা, ঘরবাড়ি-মন্দির-প্রতিমা ভাংচুর, এলাকাবাসীকে মারধর ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটে।।

তারপর থেকেই ঘটনাপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে।

এর পর ওই এলাকায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হলেও এর মধ্যেই এক রাতে হিন্দুদের বহু ঘরবাড়ি ও মন্দিরে আগুন লাগিয়ে দেবার ঘটনা ঘটে।

এমনকি গত রাতেও (শনিবার) নাসিরনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় সাংবাদিক মাসুক হৃদয়।

ভাইস চেয়ারম্যান অঞ্জন কুমার দেব, যিনি উপজেলা যুবলীগেরও সভাপতি, তিনি সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন, শুরুতেই নজরে পড়ায় অগ্নিকাণ্ডে বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গেছে।

বি/বি/সি/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে