সোহেল রানা, রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘা পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২৯ ডিসেম্বর। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আক্কাছ আলী জগ প্রতিক নিয়ে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন। আক্কাছ আলীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী শাহিনুর রহমান পিন্টুর। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরের দিনই আক্কাছ আলীর কর্মী সমর্থকরা নৌকার কর্মীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে ।

গত শুক্রবার ৩০ ডিসেম্বর দুপুর ৪টায় বাঘা পৌর এলাকার কলিগ্রাম গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে শাহিনুর রহমান ডলার নৌকার পক্ষে ভোট করার অপরাধে তার বাড়িতে আক্কাছ আলীর সমর্থক দুলাল, মিনার, সজল ও রাজিব এর নেতৃত্বে আনুমানিক ৪০ থেকে ৪৫ জন দলবদ্ধ ভাবে হামলা করে ভাঙচুর চালায়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানাযায়।

স্থানীয় ভাবে জানাযায়, নির্বাচন এর দিন রাতে আক্কাছ আলী বিজয়ী ঘোষণা হওয়ার পর রাত্রি আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে সরকঘাট এলাকার মিল্টন ও দলিল লেখক জিল্লুর বাড়িতে ইট পাটকেল ছোড়ার পাশাপাশি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে আক্কাছ আলীর সমর্থকেরা। এছাড়াও এর পরের দিন দুপুরে গৌরাঙ্গপুর গ্রামে দুলাল, মিনার, সজল, রাজিব এর নেতৃত্বে ১৫/২০ টি মোটরসাইকেল এর বহর নিয়ে সুজন নামের নৌকার সমর্থককে মারপিট করে ও পানিকুমড়া বাজারে গিয়ে বিকাশ ব্যবসায়ী শিমুল কে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায় এবং পাকুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক নয়ন সরকার কে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে খোঁজাখুঁজির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার হুমকী-ধমকী প্রদান করে বলেও জানান স্থানীয়রা। এরপর কলিগ্রাম এলাকায় শাহিনুর রহমান ডলারের বাড়িতে হামলা চালায় তারা। এসময় আক্কাছ আলীর বোনের ছেলে মিনার হুজুর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ডলারের পরিবারের নারী সদস্য দের এবং নয়ন সরকার কে।

এদিকে ঘটনাটি জানার পরপরই রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী ঘটনার স্থল পরিদর্শন করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করে এবং ঘটনার সাথে জরিত চারজনকে উক্ত রাতেই আটক করে পুলিশ বলে জানান এলাকাবাসীরা। এছাড়াও পরবর্তী সহিংশতা এড়াতে বাঘা থানা পুলিশের টহল টিম সরকঘাট এলাকায় পাহারা রত অবস্থায় রয়েছে ।

এ বিষয়ে পাকুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক নয়ন সরকার জানান, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মানবতার জননী সফল রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি ও সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছি আমি সহ আমার কর্মী সমর্থকরা।প্রতীক নির্ধারণের পরের দিন থেকেই আমাকে মেরে ফেলার হুমকি হাত-পা কেটে নেওয়ার হুমকি আমার কাছের মানুষদের নানাভাবে ভয় ভীতি প্রদর্শন করেছে সবকিছু মাথায় নিয়ে ২৯ ডিসেম্বর নৌকা প্রতীকের বিজয় সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে দিনরাত পরিশ্রম করেছি। আর এ কারণেই আমার কর্মী ও সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট, পরিবারের নারী সদস্যদের গালিগালাজসহ লাঞ্ছিত, রাস্তাঘাটে আমার কর্মীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করছে আক্কাছ আলী ও মেরাজ চেয়ারম্যান এর লোকজন।৩০ শে ডিসেম্বর দুপুরের পর থেকে আমাকে মেরে ফেলার জন্য মেরাজ চেয়ারম্যান এর কথায় খোঁজাখুঁজি করছে তার লোকজন। আমি ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগকে বাঘা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে যারা নিরলস ভাবে পরিশ্রম করেছে তাদের পরিবারকে যেভাবে অত্যাচার ও নির্যাতন করছে তা টিভি সিরিয়ালের মত দেখার জন্য। হে জাতির পিতা আপনি এসে দেখে যান আপনার বাংলাদেশে আপনার প্রতীক নৌকার পক্ষে কাজ করে অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে আমাকে ও আমার কর্মীদের। সেই সাথে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মহোদয় আপনি সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেয়ার জন্য। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন। আমি নৌকার পক্ষে অতীতে ছিলাম, বর্তমানে আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।

এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, নির্বাচনের পরের দিন কলিগ্রাম এলাকায় নৌকার কর্মীর বাড়িতে হামলা সহ ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা। আমরা সরেজমিন তদন্ত করে এ বিষয়ে মামলা নিয়ে রাতে চারজানকে আটক করেছি। শনিবার(৩১-ডিসেম্বর) তাদেরকে জেল হাজতে পেরণ করা হয়েছে। এবং অন্যদের আটকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে