chinaa

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ আগামীকাল শুক্রবার বাংলাদেশে আসছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট বেশ কযেকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও সমঝোতা সই হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ ও চীনের ব্যবসায়িক বিনিয়োগের মোট পরিমাণ ছিল গত বছর ৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশে চীনের পণ্য রপ্তানির মোট পরিমাণ প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে চীনে পণ্য রপ্তানির হার এক বিলিয়ন ডলারেরও কম।

বলা যায়, বাংলাদেশের বাজারে চীনা পণ্যের ব্যবসা এতটাই রমরমা যে তাকে মোটামুটিভাবে চীনের দখলে বললেও ভুল হবে না। মোবাইল ফোন ও আনুষঙ্গিক গ্যাজেটের দোকানিরা জানান, এদেশে বেশিরভাগই পণ্যই চীনের তৈরি। কারণ ব্যাখ্যা করে একজন বিক্রেতা জানান, ‘ক্রেতারা পণ্যের পেছনে খুব একটা অর্থ ব্যয় করতে চান না। তাই চীনের পণ্যই বাংলাদেশে চলে বেশি।’

শুধু তাই নয়। আসবাবপত্রের বাজারের একটি বড় অংশই চীনের পণ্যের দখলে। ঢাকার পান্থপথ এলাকার আসবাবপত্রের দোকানগুলোতে এই চিত্র দেখা যায়।

এস আর ফরেন ফার্নিচারের বিক্রয়কর্মী সৈয়দ নুর বলেন, ‘এখানে আমাদের যা কিছু আছে অফিস ফার্নিচার, ডাইনিং টেবিল, সেন্টার টেবিল, টিভি ট্রলি, কাউন্টার টেবিল এসব আসবাবই চীনের তৈরি।

বাংলাদেশে এসব আসবাব তৈরি করা যায় কি না? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কিছু কিছু হয় কিন্তু ফিনিশিং ভালো হয় না।’ তবে বাংলাদেশে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে আনা হয় তার তুলনায় খুব সামান্যই রপ্তানি হয় চীনে।

সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, আমদানি প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার বিপরীতে রপ্তানি এক বিলিয়নও নয়। আসবাব থেকে প্রযুক্তি পণ্য, পোশাক থেকে গহনা, শিশুদের খেলনা থেকে জুতা সবকিছুই চীনের বাজার থেকে চলে আসছে বাংলাদেশের বাজারে।

পোশাকের বাজারেও যেসব বিদেশী কাপড়ের পোশাক বেশি বিক্রি হয তার মধ্যে চীনের পোশাকেরও রয়েছে আধিপত্য। মূলত চাকচিক্যময় ও নকশাদার হওয়ায় এগুলোর কদর বেশি। কোনও কোনও বিক্রেতা জানান, এসব পোশাকের ফেব্রিক্সও তুলনামূলক ভাল।

এছাড়া মেয়েদের ব্যাগ, বিভিন্ন ধরনার জুয়েলারিও আসছে চীন থেকে। থাইল্যান্ড ও ভারতের সাথেই চীনের এসব পণ্যের প্রতিযোগিতা। দেশীয় পণ্য এগোতে পারছে না খুব একটা। কেন? এ প্রশ্নের জবাবে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের মূল সমস্যা দক্ষ জনশক্তি ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব। সেইসাথে অবকাঠামোগত অসুবিধার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। যার কারণে ‌এই বিশাল ভারসাম্যহীনতা।’

তিনি বলেন, ‘চীনে এখন শ্রমের মূল্য বাড়ছে। ফলে তারা বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে আসছে বাংলাদেশের মত দেশগুলোতে। বাংলাদেশের এই সুযোগটি কাজে লাগানো দরকার।’

জানা গেছে, নিজ দেশের সাধারণ মানুষের জন্য তৈরি পোশাক পণ্য উৎপাদন থেকে সরে আসছে আসছে চীন। তবে চীনের বাজারে বাংলাদেশেরও সামনে সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোটামুটি সব পণ্যেই চীন শুন্য শুল্ক সুবিধা দিয়ে আসছে। তাই ভবিষ্যতে চীনে চামড়াজাত শিল্প এবং জুতার বাজার বাংলাদেশের জন্য হতে পারে একটি লাভজনক ক্ষেত্র। সূত্র: বিবিসি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে