marriage

ডেস্ক রিপোর্টঃ নীলফামারী, গাইবান্ধা এবং কুড়িগ্রামে তিনটি ইউনিয়নের সাড়ে চার হাজার বিবাহিত কিশোরীর বিয়ের গড় বয়স ১৪ বছর বলে একটি গবেষণা কার্যক্রমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ইনেশিয়েটিভ ফর ম্যারিড অ্যাডোলেসেন্ট গার্লস এমপাওয়ারমেন্ট- ‘ইমেজ’ প্রকল্প। এদের মধ্যে ইতোমধ্যে ৮৯% অন্তত একবার গর্ভধারণ করেছে বলেও নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পটির কর্মকর্তারা জানান।

বুধবার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনের আজিমুর রহমান হলে বিবাহিত কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার বিষয়ক একটি গোল টেবিল বৈঠকে ওই গবেষণা কার্যক্রম থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। ‘বিবাহিত তবুও শিশু’ স্লোগান নিয়ে হওয়া এই গোল টেবিল বৈঠকটি ‘ইমেজ’র সপ্তাহব্যাপী ‘তোমার জন্য আমরা’ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়।

আর বিবাহিত কিশোরীদের উপর পরিচালিত ‘নলেজ, অ্যাটিচিউড অ্যান্ড প্র্যাকটিস’ শীর্ষক ওই গবেষণাও চালানো হয়ও ইমেজ প্রকল্পের আওতায়।

গবেষণায় বিবাহিত কিশোরীদের শিক্ষা ও উপার্জন, সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ, যৌন স্বাস্থ্য, গর্ভনিরোধক ব্যবহারে সচেতনতা, শিশু জন্মদানের স্থান, সন্তান গ্রহণের সিদ্ধান্ত, চলাফেরার স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নোত্তরে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব বিষয়ে খুব কম সংখ্যক কিশোরী অবহিত বলে দেখা যায়।

বাল্যবিয়ে রোধে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন প্রকল্প কাজ করলেও যাদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে সেইসব কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা মত প্রকাশের অধিকার তথা তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ হচ্ছে না বলে গোলটেবিল বৈঠক থেকে অভিযোগ করেন ইমেজের প্রকল্প পরিচালক ফারহানা জেসমিন হাসান।

এ পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারসহ সবার সাহায্য প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ সম্পূর্ণভাবে রোধের আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেই অনেক কিশোরীর ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়ে যাবে।”

সারা দেশে থাকা লাখ লাখ বিবাহিত কিশোরী তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে প্রতিনিয়ত অসহনীয় জীবন কাটাচ্ছে জানিয়ে বৈঠকের অন্য বক্তারাও এ বিষয়ে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতার দাবি জানিয়ে সবাইকে এক হওয়ার আহ্বান জানান। ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে চলমান ইমেজ প্রকল্পে টেরেডেস হোম নেদারল্যান্ডস এবং রেড অরেঞ্জ মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস জাতীয় পর্যায়ে সমন্বয় সাধন, সচেতনতা বাড়ানো এবং পরামর্শের জন্য কাজ করছে।

বিবাহিত কিশোরীদের পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য ইমেজ ইতোমধ্যে বিবাহিত কিশোরী ও তার পরিবারকে সম্মিলিতভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বিভিন্ন সচেতনতামূলক সভা করেছে, যার মাধ্যমে তারা নির্দিষ্ট কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশেষত যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

রেডঅরেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অর্ণব চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় গোল টেবিল বৈঠকে সরকারের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের এমইএস এর পরিচালক ড. মো. শরিফ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসাইন এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. শিমুল কলি হোসাইনসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বি/ডি/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে