মাফি মহিউদ্দিন ,কিশোরগঞ্জ,নীলফামারী থেকেঃ কৃষকের জমিতে সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত টারশিয়া ক্যানেলগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় চলতি মৌসুমে জমিতে সেচ দিতে পারছেনা কৃষক। ফলে নিরুপায় হয়ে কৃষকরা অতিরিক্ত টাকা ব্যায় করে বিদ্যুৎ চালিত মর্টার ও স্যালো মেশিত দিয়ে জমিতে সেচ দিচ্ছেন। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, সরকার কৃষকের সেচ ব্যাবস্থা নিশ্চিত করার জন্য নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কোটি কোটি টাকা খরচ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সেকেন্ডটারী, টারশিয়া,সহ বিভিন্ন ক্যানেল নির্মাণ করেন। কিন্তু সেগুলো সংস্কারের অভাবে কৃষকরা তাদের জমিতে সেচ দিতে পারছেনা। এলাকাবাসী আরো জানায়, বিভিন্ন সময় ওই সব ক্যানেলগুলো সংস্কারের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্দ আসলেও সংশ্লিষ্ট কৃতপক্ষ যেনতেভাবে দায়সারা কিছু কাজ করে বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করে আত্নসাৎ করে।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ১১ হাজার ১শত ৪৮ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল । কিন্তু অর্জিত হয়েছে ৯শত ৪৭ হেক্টর। ২ বছর আগে তিস্তা সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকরা ৪৩০০ হেক্টর জমিতে সেচ দিয়েছিল। কিন্তু এবারে তিস্তা প্রকল্পের মাধ্যমে ২৫২০ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার কথা থাকলেও ক্যানেলগুলো ভেঙ্গে যাওয়ায় কৃষকদের সে আশাতে গুরেবালি। তাই বাধ্য হয়ে কৃষকরা বিদ্যুৎ চালিত পাম্প ও স্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিচ্ছেন।
নিতাই পানিয়াল পুকুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম নামে এক কৃষক বলেন, গত দুই বছর আগে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় টারশিয়া ক্যানেল থেকে পানি নিয়ে বিঘা প্রতি ৫শ থেকে ৮ শ টাকা খরচ করে জমিতে সেচ দিতাম। কিন্তু বর্তমানে ক্যানেলে পানি না আসায় ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ করে প্রতিবিঘা জমিতে সেচ দিচ্ছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকতা জানায়, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ক্যানেলগুলো সংস্কারের জন্য সরকারীভাবে ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা কিছু কিছু জায়গায় নামমাত্র কাজ করে চুরান্ত বিল উঠে নিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন সাইট লাইন সুবিধাভোগী বকুল হোসেন জানান, আমি গত দুই বছর আগে আমার এলাকায় টারশিয়া ক্যানেলের পানি দিয়ে প্রায় ৫০ জন কৃষকের ১৫০ বিঘা জমিতে সেচ দিয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে ক্যানেল সংস্কার না করার কারনে পানি না আসায় সেকেন্ডডারী ক্যানেল থেকে অনেক কষ্ঠ করে শুরু নালা খুরে ১৫ থেকে ২০ জন গরীব কৃষকের ৩৫ বিঘা জমিতে পানি দিচ্ছি।

এদিকে কিশোরগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় কার্যালয়টি প্রায় একযুগ থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় পরে । অফিসটিতে কোন লোকজন না থাকায় সরকারের কোটি কোটি টাকার মুল্যবান সম্পদ নষ্ট হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাব এসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান বলেন, সেকেনন্ডারী ক্যানেলের বেডের মাটি উঠানোর জন্য সরকারী ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। কয়েক মাস আগে সে কাজ করেছি। কিন্তু টারশিয়া ক্যানেল সংস্কারের জন্য বরাদ্দ না থাকায় সেগুলো সংস্কার করা হয়নি।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে