কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ কেবল লৈঙ্গিক ভিন্নতার কারণে আপনার-আমার অবহেলা ও বৈষম্যপূণ আচরণের শিকার হয়ে যাদের রাস্তাঘাটে হাত পাততে হয়,আমরা তাঁদের হিজড়া বলে চিনি।

মহামারির মধ্যে কেমন আছেন তাঁরা?কি ভাবে দিন কাটছে তাঁদের? আমার-আপনার সাহায্যের টাকায় যাঁরা দিন আনি দিন খাই ভিত্তিতে চলেন,না খেয়ে থাকলেও খোঁজ খবর নেয়ার কেহ নাই বা কী ভাবে তাঁদের পেট চলছে? হিজড়াদের ঐতিহ্য চাঁদা তোলা।

নব বিবাহিত দম্পতি অথবা সদ্যেজাত শিশুর বাড়িতে গিয়ে আশীবাদের সূত্রে তাঁরা অথ চান। এ ছাড়া তাঁরা বাজারে গিয়ে দোকান থেকে নগদ অথ সাহায্য প্রাথনা করে থাকেন।

অনেক সময় এ নিয়ে ব্যবসায়ী বা গৃহস্থদের সঙ্গে তাঁদের বাদানুবাদও হয়। তবে এসব সম্পূণ বন্ধ,হিজড়াদের একটি বড় অংশ যৌনবৃত্তিতে সম্পৃত্ত, লকডাউনের কারনে উপাজনের সে রাস্তাও বন্ধহয়ে যায়। হিজড়াদের অপর একটি অংশ, যাদের কোতি বলা হয়ে থাকে, তারা সাধারণত হিজড়াাদের পেশায় অংশ না নিয়ে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের পরিবার থেকে পরিত্যাজ্য, পরিবারের সঙ্গে তাঁদেরযোগাযোগ নেই। ব্যক্তিগতভাবে তাঁরা টিউশানি করেন অথবা নাচগান করেন অথবা যৌন ব্যবসার মাধ্যমে তাঁদের জীবন ও জীবিকা নিবাহ করে থাকেন। তাঁরা যেহেতু হিজড়াদের মতো চাঁদাকেন্দ্রিক পেশায় নিয়োজিত নন, তাঁরাযেহেতু রুপান্তকামী,তাদের নাজুকতা আরও বেশি।অনুসন্ধানে জানা যায় দেশেরঅনেক হিজড়া যেমন তাঁদের পরিবার থেকে বিছিন্ন আবার তাঁদের অনেকেই নিজ পরিবারের একমাত্র উপাজনকারী যে অথ দিয়ে তাঁরা মা-বাবর দেখাশুনা করেন। ভাই-বোনদের পড়ালেখার জোগান দিয়ে থাকেন।যেহেতু তাঁরা কোনো নিদিষ্ট এলাকা ভিত্তিক ভাবে এই কাজ করেন না,সে হেতু তাঁরা নানা ধরনের নানা পেশার মানুষের সংস্পশে আসেন। অনেক হিজড়া আছেন, যাঁরা পেশাগত কারণে নিয়মিত ভারত ভ্রমন করেন। যেহেতু ভারত বাংলাদেশের তুলনায় ধমীয় দৃষ্টিকোণে হিজড়াদের গুরুত্ব ভাবে মুল্যায়ন করা হয়ে থাকে,সে হেতু বাংলাদেশের অনেক হিজড়াাই বিভিন্ন পূজা-পাবণে ভিসা ও পাসপোট ছাড়া ভিন্ন ভিন্ন সীমানা-বন্দর অতিক্রম করে একটি নিদ্দিষ্ট সময়ের জন্য ভারতে পাড়ি জমান। আবার একটি নিদ্দিষ্ট সময় শেষে দেশে ফিরে আসেন। ফলে করোনা মহামারিকালে তাঁরা যে কোন স্বাস্থ্য ঝুকিতে রয়েছেন সেটি বিবেচনার করার অবকাশ নেই। সমাজসেবা অধিদপ্তরের জরিপমতে বাংলাদেশে হিজড়া সংখ্যা প্রায় দশহাজার। যদিও হিজড়াদের দাবি,তাঁদের সংখ্য্যা দেড় লাখেরও বেশি।দুই হাজার তের সালে বাংলাদেশ সরকার প্রথম হিজজড়াদের রাষ্ট্রীয় নারী-পুরুষ ভিন্নপৃথক লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।স্বীকৃতি প্রদান করা আর হিজড়াদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরার মধ্যে এবং বাস্তবায়নের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে