সাব্বির আলম বাবু, ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলার মেঘনা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির একটি কাঁকড়া। এটি দেখতে অনেকটা পানপাতা মাছের মতো। অশ্বক্ষুরের ন্যায় দেখতে উপবৃত্তাকার। শক্ত পিঠের ওপরে চোখ, নিচের অংশে মুখ ও ছোট ছোট অনেকগুলো পা। এবং পেছনে রয়েছে একটি সরু লেজ।

মঙ্লবার ভোলার তজুমদ্দিনের মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া গ্রামের ফারুক মাঝির জালে এটি ধরা পড়ে। বিরল কাঁকড়াটি এখন অনেকেই তার নৌকায় এসে দেখে যাচ্ছেন।
ফারুক মাঝি জানান, প্রতিদিনের ন্যায় ওইদিনও মাছ ধরতে মেঘনা নদীতে জাল ফেলি। নৌকায় জাল তোলার সময় এই কাঁকড়াটি দেখতে পাই। পরে নৌকায় তুলে একটি পাত্রে পানি রেখে সেটার মধ্যে রেখে দেই। এখনও সেটি জীবিত আছে। তিনি আরও জানান, এ রকম কাঁকড়া কোনো দিন দেখিনি। লোক মুখে শুনেছি এই কাঁকড়ার দাম নাকি কয়েক লাখ টাকা। তাই বিক্রির আশায় এখনো রেখে দিয়েছি। ধরা পড়া কাঁকড়াটির ওজন প্রায় ৩শ গ্রাম। সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নীল কমল পাল বলেন, এটিকে কাঁকড়া বলা হলেও প্রজাতিগত দিক থেকে মাকড়সার সঙ্গে বেশি মিল রয়েছে। এরা লিমুলিডি গোত্রের অন্তর্গত সামুদ্রিক সন্ধিপদী। এরা প্রধানত অগভীর সমুদ্র ও নরম বালি বা কাদা সমৃদ্ধ সমুদ্রতলে বাস করে।

মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কাঁকড়াটি হলো Horseshoe Crab লিমুলাস। এটি ‘রাজ কাঁকড়া’ নামেও পরিচিত। এরা প্রধানত অগভীর সমুদ্র ও নরম বালি বা কাদা সমৃদ্ধ সমুদ্রতলে বাস করে। আজ থেকে ৪৫ কোটি বছর আগে বিবর্তিত হয়ে এতদিন প্রায় অবিকৃত চেহারায় থেকে যাওয়ার জন্য এদের জীবন্ত জীবাশ্ম হিসেবে গণ্য করা হয়। এদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হওয়ায় অঙ্গসংস্থানিক পরিবর্তন ছাড়াই এরা পৃথিবীতে টিকে আছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ জানান, এটা Horseshoe Crab নামে এক ধরনের কাঁকড়া। ডাঙ্গায় এগুলো সচারচর দেখা যায় না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ এগুলো খেলেও আমাদের দেশে এগুলো কেউ খায় না। এগুলোর দাম নিয়ে লোক মুখে যা শোনা যায় সেগুলো গুজব। তার কোনো ভিত্তি নেই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে