জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী, জেলাঃ স্বর্ণালংকার বিক্রির কথা বলে বাসায় ডেকে নিয়ে জিম্মি করে ৩ লাখ টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করেছে একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। সাংবাদিকের সাথে এমন অঘটন ঘটিয়ে উল্টো শ্লিলতাহানীর মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে ওই প্রতারক নারী। ফলে চরম বিপাকে পড়ে সপরিবারে হয়রানী ও হতাশায় এবং জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে।

শনিবার (১২ আগস্ট) বেলা ৩ টায় সৈয়দপুর প্রেসক্লাবে এই প্রতারণার প্রতিকারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের দলুয়া মুন্সিপাড়ার মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে এবং দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সদস্য জয়নাল আবেদীন হিরো। এর আগে সৈয়দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার হাসিমপুর গ্রামের বঙ্কিম চন্দ্র রায়ের মেয়ে লিপি রানী রায় (৩৩) ও রমা রানী রায় (২৫)। তারা দুইবোন সৈয়দপুর শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কে ইসলামী ব্যাংকের পাশে শহিদুল প্রফেসরের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। লিপি রানী রায় আমার বাড়ির পাশে অসুরখাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। সেই সুবাদে তাদের সাথে পরিচয় ও সুসম্পর্ক। এমনকি উভয় পরিবারে যাতায়াত, খাওয়া দাওয়া বিদ্যমান।

আমি প্রায়শই তার বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াই এবং সাধ্যমত সহযোগীতা করি। সম্প্রতি লিপি রানী রায় কয়েকটা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় ৩০-৪০ লাখ টাকার খেলাপি হয়। তখন এনজিও গুলোর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সময় নেয়াসহ দুই ধাপে ৩ লাখ টাকা দিয়েছি। বিনিময়ে সে আমাকে তার একটি চেকও দিয়েছে। কিন্তু ৬ মাস পার হলেও টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। আমি তার পরিস্থিতি জানি সেকারণে কখনো চাপও দেইনি।

এমতাবস্থায় গত ৯ আগস্ট রাতে লিপি রানী মোবাইল করে বলে তার এক আত্মীয় বিশেষ প্রয়োজনে কিছু স্বর্ণালংকার বিক্রি করবে। প্রায় ৬-৭ টাকার জিনিশ মাত্র ৩ লাখ টাকায় পাওয়া যাবে। নিলে বেশ লাভবান হওয়া যাবে। আমি প্রথমে সম্মত না হওয়ায় লিপি ও তার বোন রমা পরদিন। ১০ আগস্ট সকালে আমার বাড়িতে এসে আমার স্ত্রী কেও অনুরোধ জানায়। পরে টাকা সংগ্রহ করে রাত সাড়ে ৯ টায় আমি টাকা নিয়ে শহরে তাদের বাসায় যাই।

এসময় তারা গলার হার, হাতের বালা ও কানের দুল দেখায় কিন্তু সেগুলো আমার হাতে না দিয়েই অজ্ঞাত পরিচয় দুইজন পুরুষের সহায়তায় আমার ৩ লাখ ও ১৫ হাজার টাকা দামের মোবাইল (এন্ড্রোয়েড ভিভো মডেল ওয়াই ৯৩) ছিনিয়ে নেয় এবং আমাকে ঘরে রেখে বাহির হয়ে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে অনবরত দরজায় ধাক্কাধাক্কি করতে থাকলে কে বা কারা ছিটকিনি খুলে দিয়ে পালায়। দরজা খোলা পেয়ে আমি বের হয়ে বাড়ি ফিরি।

এই ঘটনায় আমি হতভম্ব হয়ে পড়েছি। লিপি ও রমা আমার সাথে এমন প্রতারণা করায় কোন ভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিনা। তবে আইন বহির্ভূত এই কর্মকাণ্ড সংঘটনের পরও তারা উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিচ্ছে। মূলতঃ প্রতারণা করে ছিনতাইকৃত টাকা ও মোবাইল আত্মসাৎ করার জন্যই মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে হয়রানী করতে এভাবে হুমকি দিচ্ছে। যা চরম অপরাধ। লিপি ও রমা আরও নানা অন্যায় কাজে জড়িত। তারা চিরাচরিত অপরাধ প্রবণতা থেকে বের হতে পারেনি। তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন। তাই প্রতিকারের জন্য প্রশাসনের সহায়তা পেতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। এখন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মিডিয়ার সহযোগীতা চাচ্ছি।

এব্যাপারে লিপি রানীর সাথে মোবাইলে কথা হলে বলেন, উল্লেখিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। মেনে না নেয়ায় অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং মিথ্যে অভিযোগ দিয়েছে। আমি লোকলজ্জার ভয়ে নিশ্চুপ ছিলাম। কিন্তু মিথ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাই সত্য ঘটনা উল্লেখ করে আমিও মামলা করবো।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে