আন্তর্জাতিক রিপোর্ট : উইম্বলডনে যারা টেনিস খেলতে আসেন তাদের প্রায় সবার মধ্যেই কম বেশি কুসংস্কার রয়েছে। তারা মনে করেন, সেসব পালন করলে তারা হয়তো খেলায় জিততে পারবেন। টেনিস খেলার সময় মাঠে যেসব বল বয় বা বল গার্ল আছেন তারা এরকম কিছু কুসংস্কারের কথা তুলে ধরেছেন।অবশ্য এসব বিশ্বাস যে শুধু টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যেই আছে তা নয়, প্রায় সব খেলাতেই এই প্রবণতা চোখে পড়ে। ক্রীড়া জগতের এরকম কিছু তারকার মধ্যে এসব বিশ্বাস খুবই তীব্র।এখানে এরকম কিছু কুসংস্কার বা বিশ্বাসের কথা তুলে ধরা হলো।

রাফায়েল নাদাল

খেলা শুরুর আগে, এমনকি খেলা চলাকালেও টেনিস তারকা রাফায়েল নাদাল কিছু রুটিন নিয়মিত মেনে চলেন। এগুলোর জন্যে তিনি সুপরিচিত। তার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হচ্ছে, প্রত্যেকটি সার্ভের আগে নিচ দিয়ে তিনি যেভাবে তার শর্টস টেনে ধরেন, টি শার্টের কাঁধ টেনে ঠিক করেন এবং তারপর মুখ মুছেন।তবে এবছরের উইম্বলডনে এসব করেও রাফায়েল নাদালের খুব বেশি লাভ হয়নি।কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই তিনি এই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েছেন।

সেরেনা উইলিয়ামস

২০১৬ সালের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন সেরেনা উইলিয়ামসও তার কিছু কুসংস্কারের জন্যে বিখ্যাত। তিনি বিশ্বাস করেন তার কিছু মোজা আছে যেগুলো তার জন্যে সৌভাগ্য বয়ে নিয়ে আসে।সেই জোড়া মোজা পরেই খেলতে নামেন সেরেনা।এবং শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে যে সেরেনা উইলিয়ামস টুর্নামেন্ট শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি ওই মোজা ধুতেন না। এমনকি নতুন মোজাও পরেন না।কিন্তু এবারেও তার জন্যে এই বিশ্বাস সৌভাগ্য বয়ে আনতো পারতো কিনা সেটা পরিষ্কার নয়।সন্তানসম্ভবা হওয়ার কারণে এবারের টুর্নামেন্টে তিনি খেলতে পারেন নি।

নোভাক জোকোভিচ

নোভাক জোকোভিচের কুসংস্কার হলো প্রত্যেক সার্ভের আগে বলকে বারবার বাউন্স করা। এটা এক সময়ে তার অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।

কখনও কখনও তিনি বল ৩০ বারেরও বেশি বাউন্স করেছেন এমন নজিরও আছে।কেনো তিনি এরকম করেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, খেলায় মনঃসংযোগ করার জন্যেই তিনি এমনটা করে থাকেন।”আমি কাউকে বিরক্ত করতে চাই না। খেলায় মনোযোগ বাড়াতেই এই কাজটা করি,” বলেন তিনি।

গোরান ইভানিসেভিচ

উইম্বলডনের কোর্টে অনেক বেশি মজা করেন গোরান ইভানিসেভিচ। ২০০৪ সালে তিনি যখন শিরোপা জিতে নেন, তিনি বলেছিলেন প্রত্যেক ম্যাচের পরেই তিনি বিশ্রাম নিয়েছেন বলেই তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।তিনি বলেন, ম্যাচের পরে তিনি সবসময় টেলিভিশনে শিশুদের মধ্যে জনপ্রিয় এরকম একটি অনুষ্ঠান টেলিটাবিস দেখতেন।

ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো

ফুটবলার ওয়েন রুনি তার একটি বইয়ে লিখেছিলেন, ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো যখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলতেন তারও এরকম কিছু বিশ্বাস ছিলো। তার একটি হলো ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে আয়নায় নিজের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা।এর কারণ এও হতে পারে যে তিনি হয়তো আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে খেলার জন্যে নিজেকে কিছু বলতেন বা প্রস্তুত করতেন।

মাইকেল ফেল্পস

সাঁতারু মাইকেল ফেল্পসের মতো আর কেউ অলিম্পিকে এতো বেশি সোনা জিতে নি। তিনি জয় করেছেন ২৩টি স্বর্ণ পদক।কিন্তু এর পেছনে রহস্য কি? এও কি কোনো কুসংস্কারের কারণে?

সাঁতারের নামার আগে তিনি পুলের পাশে পায়চারি করেন এবং এসময় তিনি হেডফোনে মাইকেল জ্যাকসনের গান শোনেন।তারপর তিনি কান থেকে হেডফোন খুলে ফেলেন তারপর সেটা হাতের চারপাশে তিনবার ঘোরান।দু’বার নয়, চারবার নয়। তিন তিনবার। সবসময়।অনেকে মনে করেন, এটাই হয়তো তার সাফল্যের গোপন রহস্য!

বি/বি/সি/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে