বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাওয়া, হতাশাগ্রস্ত, উচ্চশিক্ষা নিয়ে জীবনমরণ সন্ধিক্ষণে কিংবা স্নাতক শেষ করে বিদেশে স্নাতকোত্তর করার ইচ্ছা। কিন্তু মধ্যবিত্তের জীবনের আশা-দুরাশার খেলায় হয়ে ওঠে না। সাধ আছে তো সাধ্য নেই। আশার দুয়ারে আমি আনিব আজ রাঙা প্রভাত!

মনে পড়ে সেই বিজ্ঞাপন চিত্রের কথা—সাধ্যের মধ্যে সবটুকু সুখ। হ্যাঁ আপনার মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যেই রাশিয়ার উচ্চশিক্ষার সবটুকু সুখ এনে দিতে পারে। রাশিয়ার উচ্চশিক্ষার উন্মোচিত ভাবে ডাকছে আপনাকে নবদিগন্তের উদ্বেলিত সূর্যের মতো।
উচ্চবিত্তের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা কিংবা অস্ট্রেলিয়া। ব্যয়বহুল ওই সব দেশের উচ্চশিক্ষা দিন দিন সংকুচিত হয়ে পথ রুদ্ধ করে দিচ্ছে। স্থূলকায় সাদা হাতির মতো ব্যয়বহুল ওই সব দেশের উচ্চশিক্ষা যদিও নিঃসন্দেহে ভালো কিন্তু মধ্যবিত্তের আশায় গুঁড়েবালি। সাম্প্রতিককালে মালয়েশিয়া কিংবা সিঙ্গাপুরে অবস্থা আশাব্যঞ্জক নয়। সেদিক থেকে রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা আশার স্তিমিত হয়ে যাওয়া পালে হাওয়া দেয়।
রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা তুলনামূলক কম খরচ উন্নত ও নির্বিঘ্ন শিক্ষা ব্যবস্থা, উচ্চতর নিরাপত্তা খুবই কম ব্যয়বহুল জীবনযাত্রা সর্বোপরি আধুনিক মননশীলতার পরিবেশে সমৃদ্ধ শিক্ষার সুযোগ। প্রথমেই বলব, জ্ঞান অর্জনের বা শিক্ষার জন্য সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দূর প্রবাসে আসতে পারেন। মূল লক্ষ্য যদি থাকে ভালো পরিবেশে উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থায় জ্ঞান অর্জন করে ভালো মানুষ হওয়া, তবে আপনাকে সাদর সম্ভাষণ ও স্বাগতম। কিন্তু শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যের বাইরে যদি থাকে অন্য কোনো কিছু বা অন্য কোনো কার্যকারণ তাহলে আপনাকে এখানেই থামতে হবে ট্রাফিক সিগনালের লাল বাতির মতো।
কাজের কথায় আসি। রাশিয়ায় শিক্ষাবর্ষ শুরু হয় সেপ্টেম্বরের শুরুতে ঐতিহ্য ও রীতি অনুযায়ী। রাশিয়ান ও ইংরেজি উভয় মাধ্যমে পড়াশোনা করা যায়। ইংরেজি মাধ্যমের জন্য IELTS ৬.৫ পেতে হবে বা সমমানের TOFEL। কিন্তু ইংরেজি মাধ্যম অপেক্ষা রাশিয়ান মাধ্যমে পড়ালেখা করাই উত্তম। কেননা সর্বত্র রাশিয়ান ভাষা। অ্যাটম বোমা ফাটালেও রাশিয়ানরা ইংরেজি বলে না কিংবা বলতে চায় না বা পারে না। সুতরাং রাশিয়ান ভাষায় পড়ার জন্য প্রথমে প্রস্তুতিমূলক কোর্স সম্পন্ন করতে হয় এক বছর। এ সময়ে আপনাকে রাশিয়ান ভাষা, রাশিয়ান ভাষায় পদার্থ, রসায়ন, গণিত ও অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টিউশন ফি বিশ্ববিদ্যালয়, বিষয় ও শহর-নগর ভেদে ভিন্ন। তবে তা বাৎসরিক ১৬০০$ থেকে ৫৬০০$ এর মধ্যে। কিন্তু অধিকাংশই ২০০০$ বা তার কাছাকাছি কোনো সংখ্যায়। বাংলাদেশি টাকায় এক লাখ ৪০ হাজার ৫০০ থেকে চার লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে। গড়পড়তায় দুই লাখ টাকার কমবেশি। আপনি চাইলে টিউশন ফি রাশিয়ায় এসেও প্রদান করতে পারেন কিংবা টিউশন ফির একটি অংশ প্রদান করে আসতে পারেন। কোনো প্রকার ব্যাংক ব্যালেন্স দেখাতে হয় না। ব্লক অ্যাকাউন্ট বা অন্য কিছু প্রয়োজন নেই। বছরে চার ধাপে ফি দেওয়ার সুযোগ আছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাত খরচ বাবদ কিছু বৃত্তি প্রদান করা হয়, তা দিয়ে টুকিটাকি খরচ চলে যায়।
জীবনযাত্রার খরচ বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাকা) পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চেয়ে কম। বলতে গেলে পাঁচ হাজার টাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করা যায়। বাকিটুকু নিজের ওপরে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নামমাত্র মূল্যে আবাসন ব্যবস্থা প্রদান করা হয়। বিদেশি শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নত ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আবাস প্রদান করে থাকে। বলে রাখা দরকার, এখানে একজন মেয়ে শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে অধিক নিরাপত্তা, অগ্রাধিকার ও সম্মান পেয়ে থাকেন।ভর্তি প্রক্রিয়া একটু সময়সাপেক্ষ ও ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে হয়। তাই বলছি পর্যায়ক্রমে নিচের ধাপ অনুসরণ করুন।
প্রথমে আপনার সকল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট সত্যায়িত করতে হবে শিক্ষাবোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। তারপর তা অনুবাদ করতে হবে রাশিয়ান ভাষায়। অনুবাদ করা কপিগুলো রাশিয়ান দূতাবাস থেকে সত্যায়িত করতে হবে। পরবর্তী ধাপে আপনার পাসপোর্ট ও ইংরেজি জন্মসনদও রাশিয়ান ভাষায় অনুবাদ করতে হবে। শেষ ধাপে সমস্ত কাগজপত্র ন্যূনতম চার সেট ফটোকপি করে রোটারি করতে হবে। এ ছাড়া মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রয়োজন—যাতে আপনার এইচআইভি (HIV) ও অন্যান্য জটিল কিছু রোগ ব্যাধি নেই প্রমাণের জন্য। এবার আপনার সমস্ত কাগজপত্র মোটামুটি তৈরি হয়ে গেছে।
এরপর আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করে পছন্দের বিষয় সম্পর্কে জেনে ইমেইল করবেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের ডিনকে। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একজন ডিন ও তার সহযোগী থাকেন। আপনি ইমেইলের মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। ইমেইল অ্যাড্রেস পেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাডমিশনের ভেতর থেকে আন্তর্জাতিক বিভাগের ডিনের নাম, ফোন ও ইমেইল অ্যাড্রেস পেয়ে যাবেন। এখন ইমেইল করে নিজে নিজে সম্পন্ন করবেন ভর্তি প্রক্রিয়ার কাজটা। তাতে কিছু খরচ হতে পারে।
ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনার নামে একটি অফার লেটার প্রেরণ করবে। অফার লেটার পেতে ৪০-৬০ দিন সময় লাগতে পারে। ধৈর্য হারাবেন না। অফার লেটার পাওয়ার পর রাশিয়ান দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করবেন নিয়ম অনুসারে। সবকিছু ঠিক থাকলে ভিসা পাওয়া কোনো প্রকার ঝামেলা নয়। নিয়মানুযায়ী আপনি সহজেই ভিসা পেয়ে যাবেন। এ ক্ষেত্রে এক বছরের টিউশন ফি প্রদান করাই উত্তম। তাহলে আর কোনো বাধাই রইল না।
আরও বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন –

বিল্ডিং-এর নামঃ “ভালোবাসা” গ্রেট ওয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার, ৬১(৪র্থ), গাউসুল আজম এভিনিউ, সেক্টর #১8, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০। (১৪নং সেক্টর মিনা বাজার থেকে ২টি বিল্ডিং পূর্বদিকে), greatwallbdlc@gmail.com, mahfuz.spnn@yahoo.com, www.greatwall.com.bd মোবা: ০১৮৪১৯২৯০৬৯, ০১৯১১৯২৯০৬৯, ০১৬৭৫৫৮২৩৪০ ।

P/A/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে