potato

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর কৃষকরা এখন আলু চাষাবাদে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আলু চাষীরা গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে এবার ঘুরে দাঁড়াতে চান। তবু যেন শংকা আর ভয় তাদের কুড়ে খাচ্ছে। ফসলের দাম না পাওয়া আর চাপা কষ্টের পরও বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে চলতি মৌসুমে মাঠে আলু বীজ রোপণ আর জমি তৈরির কাজে উঠেপড়ে লেগেছে কৃষকরা। হরতাল-অবরোধ আর নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে গত বছর নীলফামারীর চাষীরা আলু উৎপাদন করে কাক্সিক্ষত মুনাফা পায়নি।

আলু রোপণের খরচ উঠানো তো দূরের কথা লাভের আশায় ঢাকা-খুলনায় গিয়েও দাম না পেয়ে সেখানেই ফেলে এসেছে নিয়ে যাওয়া আলু। আর একই কারণে আবাদি আলু ক্ষেতেই পড়ে ছিল দিনের পর দিন। তবে এবার বুক ভরা আশা নিয়ে গতবছরের লোকসান কাটিয়ে উঠার আশায় আলু চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষীরা। গতবারের চেয়ে এবারে আলু বীজ ও সারের দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় খরচ বেশি হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন তারা। নীলফামারীর সদর উপজেলার চাপড়া সরমজানী ইউনিয়নের নাছিরপাড়া গ্রামের আলু চাষী নজরুল ইসলাম জানান, গত বছর নীলফামারীতে দাম না পাওয়া না গেলেও খুলনা নিয়ে গিয়েছিলাম আলু বেশি দামের আশায়, কিন্তু সেখানেও একই অবস্থা হওয়ায় আলু ফেলে চলে আসি। গতবারের শংকা থাকলেও আবাদ তো ফেলে রাখা যায় না, করতে হচ্ছে দেখা যাক কি হয়।

একই কথা বললেন চাষী আবদুল মালেক, খবির উদ্দিনও। তারা বললেন, আলু ৫০ পয়সা কেজি দরে বিক্রি হলেও কেনার লোক ছিল না, কিন্তু আলু লাগাচ্ছি ৩০ টাকা কেজি দরে কেনার পর। তার ওপর এবার বীজ ও সারের দাম একটু বেশি। বিঘা প্রতি ১০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিভিন্ন কারণে গত মৌসুমে আলু চাষীরা আলুর ন্যায্য মূল্য না পেলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাবেন এমনটাই আশা করছে কৃষি বিভাগ। তাছাড়া আগাম জাতের আলু আবাদে সব রকম সহযোগিতা করছে দফতরটি। নীলফামারী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেরামত আলী বলেন, গতবারের চেয়ে এবার কৃষকরা লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে আলু আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা কৃষি সমৃদ্ধ নীলফামারী অঞ্চলের চাষীদের রক্ষায় সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি ক্ষেত মজুর সমিতির। উৎসাহ সৃষ্টিতে ব্যবস্থা নেয়া হলে কৃষকরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশ সমৃদ্ধ হবে দাবি নেতাদের।

বাংলাদেশ ক্ষেত মজুর সমিতি নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি শ্রীদাম দাস নীলফামারীনিউজ-কে বলেন, পরিবহন, বাজারজাত, রফতানি এবং প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা করা গেলে কৃষকরা শুধু নয় সার্বিক ভাবে দেশ উপকৃত হবে। অবিলম্বে সরকারের এ নিয়ে নজর দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে