ডেস্ক রিপোর্ট : ঈদ মানে আনন্দ, ঈদের আগে নতুন পোশাক কেনার আনন্দ। তাই ফুটপাত থেকে শুরু করে বিপণীবিতানগুলোতে চলছে জমজমাট বেচাকেনা। নতুন পোশাকের পাশাপাশি জুতা-স্যান্ডেল, স্বর্ণালংকার, মোটরসাইকেল ও টেলিভিশনের বেচাকেনাও চলছে। সকাল থেকে রাত অবধি নড়াইলের বিভিন্ন বিপণীবিতানগুলোতে ছুটছেন ক্রেতারা।

সর্বত্রই উপচেপড়া ভিড়। বিক্রেতারা জানান, এবার বেশ আগে থেকেই বেচাকেনা জমে উঠেছে। মাঝে-মধ্যে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করলেও ঈদ বাজারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। তাই নড়াইল সদরসহ লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলার সকল বিপণীবিতানগুলোতে সকাল থেকে রাত অবধি ভিড় করছেন সব বয়সের মানুষ।
নড়াইল রূপগঞ্জ বাজারের দীপক ষ্টোরের (গার্মেন্টস) স্বত্ত্বাধিকারী দীপক কুমার বলেন, ১০ রোজার পর থেকে এবার বেচাকেনা জমে উঠেছে। আশা করছি ক্রেতার চাপ আরো বাড়বে। তরুণ-তরুণীদের বিভিন্ন রকমের পোশাকের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের পোশাকও চলছে। বৈশাখী গার্মেন্টসের স্বত্ত্বাধিকারী প্রকাশ কুন্ডু জানান, মেয়েদের লং ও সর্টস্কাট, বাহুবলী, ডাউন ও স্ক্রিন ফ্রগসহ লেহাঙ্গার চাহিদা রয়েছে। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকার মধ্যে এসব পোশাক বিক্রি করছেন। নারীরা শাড়িও কিনছেন বেশ। রূপগঞ্জের সমীর কুমার রায় বলেন, বিভিন্ন নকশা ও কারুচার্যের পোশাক রয়েছে আমাদের দোকানে। সকাল থেকে রাত অবধি ক্রেতারা আসছেন। বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে। তবে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সমস্যা হচ্ছে। কালিয়া উপজেলার বেন্দা এলাকার সাদিয়া বলেন, ঈদের পোশাক কিনতে এবারই প্রথম জেলা শহরে এসেছি।

সাধ ও সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটা করে ভালো লাগছে। রূপগঞ্জের শেখ গামের্ন্টস অ্যান্ড পাঞ্জাবি ঘরের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক জানান, ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে ৩ হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন নকশার পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে। এ বছর পাঞ্জাবির দাম একটু বেশি। ভ্যাটের কারণে দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। লোহাগড়া উপজেলার কাশেম সুপার মার্কেটে কারিমা লেডিস কর্ণারের ক্রেতা মাহিমা ও শারমিন জানান, লং ও সর্টস্কাট এবং লেহাঙ্গা কিনতে পেরে আনন্দিত তারা। নড়াইলের রুপগঞ্জের ‘পায়ে পায়ে সু’ এর মালিক কাজী নূরুন্নবী বলেন, এ বছর বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। ঈদ যত এগিয়ে আসছে, ক্রেতা সমাগম তত বাড়ছে। দেশি জুতার পাশাপাশি ভারতীয় ও চায়না জুতা, স্যান্ডেল বিক্রি হচ্ছে। স¤্রাট সু বাজারের বিক্রেতা মশিয়ার রহমান বলেন, প্রথমদিকে শিশুদের জুতা ও স্যান্ডেলের চাহিদা বেশি ছিল; বর্তমানে নারীদের জন্য বেচাকেনা বেড়েছে। হুরইয়রা টেইলার্সের দর্জি পলাশ জানান, রোজার প্রথম থেকেই পোশাক তৈরির অর্ডার পেয়েছেন তারা। প্রচন্ড কাজের চাপে ১৫ রোজার পর থেকে পোশাক তৈরির অর্ডার বন্ধ রেখেছেন। তানহা টেইলার্সও অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

বিশেষ প্রয়োজনে দু’একটা অর্ডার নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। দর্জি একরাম হোসেন বলেন, প্রথম রোজা থেকে কাজ শুরু করেছি; চাঁদ রাত পর্যন্ত কাজ চলবে। অর্ডার নেয়া কাজগুলো ভালো ভাবে শেষ করাই আমাদের লক্ষ্য। আর যতগুলো পোশাক তৈরি করব, সেই হিসেবে মজুরি পাবো।রায় জুয়েলার্সের মালিক দিলীপ রায় বলেন, ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাকের পাশাপাশি স্বর্ণালংকার তৈরির কাজ মোটামুটি চলছে। সোনাতন ইমিটেশনের স্বত্ত্বাধিকারী সোনাতন সাহা বলেন, ঈদ উপলক্ষে নারীরা ইমিটেশনের গয়না কিনছেন।অন্যান্য সময়ের চেয়ে বর্তমানে বেচাকেনা ৫/৬ গুন বেড়েছে বলে জানান। এছাড়া নতুন পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে বিভিন্ন রঙের চুঁড়ি, ফিতা, লিপস্টিকসহ সাজ-সজ্জার সামগ্রী কিনে নিচ্ছেন তরুণীরা।
এদিকে, ঈদ উপলক্ষে তরুণদের পছন্দ হিসেবে মোটরসাইকেল বেচাকেনাও বেড়েছে। রূপগঞ্জের ভেনাস অটোর ব্যবস্থাপক নাজমুল আলম বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন ব্রান্ডের দুই থেকে তিনটি মোটরসাইকেল বিক্রি করছি। বিভিন্ন কোম্পানির বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতেও অন্য সময়ের তুলনায় মোটরসাইকেল বিক্রি বেড়েছে। এছাড়া ঈদে টেলিভিশন বেচাকেনাও চলছে। সবমিলে জমজমাট নড়াইলের ঈদ বাজার।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে