ডেস্ক রিপোর্ট : জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ করা হচ্ছে। এর মধ্যে উফশী (উচ্চ ফলনশীল) রয়েছে ৩৪ হাজার ৫৭৮ হেক্টর ও স্থানীয় জাত রয়েছে ৫৩ হাজার ২৮১ হেক্টর জমি। ইতোমধ্যে ৮৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আবাদকার্য সম্পন্ন হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে আবাদ আরো বাড়বে। আর সরকারিভাবে জেলায় আউশের আবাদ বৃদ্দি করতে সাড়ে ৭ হাজারেরও বেশি কৃষককে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। তাই এখানকার ৭ উপজেলায় আউশ আবাদে ব্যস্ত সময় পার করেছে কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মোট ৮৭ হাজার ৮৫৯ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২১ হাজার ১৭৫ হেক্টর, দৌলতখান উপজেলায় ৮ হাজার ২৭৮, বোরহানউদ্দিনে ১৩ হাজার ২০০, তজুমুদ্দিনে ৪ হাজার ৪৫০, লালমোহনে ১৩ হাজার ৪০০, চরফ্যাশনে ২২ হাজার ৫০৬ ও মনপুরা উপজেলায় ৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদ চলছে। আর এবছর জেলায় মোট আউশ ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪০২ মেঃটন চাল।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, গত বছর জেলায় ৮০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে। আর চাল উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৯৬ মে. টন। প্রতি বছর জেলায় ১ থেকে দেড় লাখ মে. টন চাল অন্যন্য জেলায় রপ্তানী করা হয়। আর আউশ আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রায় সাড়ে ৫শ’ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে এবারের মৌসুমে। জেলায় সাধারণত উফশী’র মধ্যে ব্রি-ধান-২৭, ব্রি-ধান-৪৮, ইরাটম-২৪, ব্রি-ধান-৪৩, ভোজন জাতের চাষ বেশি হয়। এছাড়া স্থানীয় জাতের মধ্যে কালিশাটিয়ার আবাদ অধিক হয়।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মৃত্যুঞ্জয় তালুকদার বাসস’কে বলেন, সাধারণত জুন মাসের মধ্যে আউশ ধান রোপণ সম্পন্ন করা হয়। এসময় বৃষ্টির পানির কারণে চাষ ভালো হয়। আর আগস্টের শেষ দিক থেকে সেপ্টেম্বরের শুরুতে কৃষকরা ফসল তুলতে শুরু করে। কৃষকদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের মাধ্যমে সব ধরনের পরামর্শমূলক সেবা দেয়া হচ্ছে।
সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের কৃষক ফরাজ আলী, আজাহার আলী, আতাহার মিয়া ও মোস্তাফিজ হোসেন বলেন, তারা প্রত্যেকে দেড় একর করে জমিতে আউশ ধানের চাষ করছেন। ইতোমধ্যে আবাদ শেষ পর্যায় চলে এসেছে। সরকারি প্রণোদনা হিসাবে বীজ, সার ও নগদ অর্থ পেয়ে তারুন খুশি। কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের পরামর্শ পাচ্ছেন বলেও জানান এই কৃষকরা।
আলীনগর এলাকার কৃষক ফরিদ হাওলাদার ও আজগর মিঝি বলেন, এবছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য বোরো ধানে তেমন লাভ করতে পারেননি। তাই আউশ ধানের মাধ্যমে ক্ষতি পোষাণোর চেষ্টা করবেন। তাই আষাড়ের টিপ টিপ বর্ষণে ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রসান্ত কুমার সাহা বাসস’কে জানান, এবছর আউশের অবস্থান অনেক ভালো রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে বাম্পার ফলন হবে। চলতি বছর কৃষকদের জেলায় আউশ ধানের চাষে উৎসাহিত করার জন্য ৭ হাজার ৬০০ কৃষককে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এর মধ্যে ৭ হাজার ২’শ কৃষককে উফশীর জন্য প্রত্যেককে ১ বিঘা জমিতে চাষ করতে ৫ কেজি বীজ, ইউরিয়া সার ২০ কেজি, বিএপি ১০ কেজি, এমওপি ১০ কেজি ও সেচ সহায়তার জন্য নগত ৪০০ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া নেড়ীকার জন্য ৪০০ কৃষকের প্রত্যেককে ১০ কেজি বীজ, ইউরিয়া ২০ কেজি, বিএপি ১০ কেজি, এমওপি ১০ কেজি, সেচ সহায়তা ৪০০ টাকা ও আগাছা দমনের জন্য আরো ৪০০ টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে