জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ বিলকিস আকতার। এবারের(২০২১ এর) এসএসসি পরীক্ষার্থী। নীলফামারীর পলাশবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দেবে সে।করোনায় দীর্ঘ বন্ধের এই সময়টা নানা ভাবে কাটালেও সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়েছে সে। বই পড়া, অনলাইনে ক্লাশ, এ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করার পাশাপাশি সেলাই শিখে কাজে এসেছে তার।
বিলসিক আকতার জানান, বাবা একজন শ্রমজীবী মানুষ। সংসারে অভাব রয়েছে। সেলাই শিখে নিজের পোষাক তৈরি করার পাশাপাশি এখন থেকে অন্যের কাজও করে দেয়ার চেষ্টা করছি।
প্রতিবেশি একজনের কাছ থেকে সেলাই শিখেছি আমি।
আরেকজন মনি আক্তার। একই এলাকার কেবার উদ্দিনের মেয়ে সে। এ বছরই মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দেবে এসএসসির। সেও সেলাই শিখে অর্থ উপার্জনের সম্পৃক্ত হতে চায়।
মনি আক্তার জানায়, বন্ধের সময় কাজে লাগাতে পেরেছি। পড়াশোনার ক্ষতি হলেও সেলাই এর কাজ আমাকে উৎসাহ জুগিয়েছে। স্কুল এখন খুলেছে পড়াশোনার চাপ সামলে নিতে হবে।
সকাল দশটায় স্কুল শুরু হয় এই বিদ্যালয়ে। ঘন্টা বাজিয়ে ক্লাশ শুরুর আনুষ্ঠানিকতা রুপ পায়। পরে জাতীয় সঙ্গিত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ক্লাশ শুরু হয় এসএসসি ২০২১ শিক্ষার্থীদের।
আজ ৬১জনের মধ্যে উপস্থিত হয়েছিলো ৩৭জন।
সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্যালয়ে প্রবেশ কালে থার্মার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়। এরপর সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ক্লাশে প্রবেশ করানো হয়। শ্রেণীকক্ষে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বসানো হয় তাদের।
এছাড়া বিদ্যালয়ে ছিলো করোনা মোকাবেলায় সচেতনতা মুলক নানান বার্তা। তবে সবাই এসেছে মাস্ক পড়ে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তপন রায় বলেন, আজকে ক্লাশ শুরুর প্রথম দিন। অনেকটা জানা অজানার মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে অথবা কোথাও বেরাতে, কেউ হয়তো অসুস্থ্য একারণে অনেকে আসেনি। আজকে আড়াই ঘন্টা ক্লাশ করানো হবে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের।
দুপুর দুইটা থেকে ২০২২সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাশ শুরু হবে। তাদেরও দুই আড়াই ঘন্টা ক্লাশ করানো হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার রায় বলেন, আমরা সরকারী সকল নিয়ম অনুসরণ করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী ক্লাশ পরিচালনা শুরু হয়েছে। আমরা চাই যাতে কোন শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্থ না হোক।
তিনি বলেন, অন্যান্য শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে একদিন করে ক্লাশ নেয়া হবে। এজন্য রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে একই চিত্র দেখা গেছে জলঢাকা উপজেলার কালকেওট উত্তর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার পর এখানে শুরু হয়েছে পাঠদান কার্যক্রম। এ বিদ্যালয়ে আজ পঞ্চম শ্রেণীর ২০জন শিক্ষার্থী এসেছে। যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩১জন।
ঘন্টা বাজিয়ে, মাস্ক নিশ্চিত করে, হাত ধুয়ে এবং সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে শ্রেণী কক্ষে পাঠদান প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মল্লিকা রায় জানান, প্রথম দিনে অনেক জনই আসেনি। বিভিন্ন কারণ রয়েছে এর পিছনে। তবে স্বাভাবিক দু’একদিনের মধ্যে শিক্ষার্থী উপস্থিতি।
আমরা সরকারী সকল নিয়ম অনুসরণ করে বিদ্যারয় পরিচালনা করতে চাই। এজন্য শিক্ষক, অবিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের সাথে সমন্বয় করা হচ্ছে।
এদিকে পাঠদান প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর আজ সকাল থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শণ করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম। এছাড়াও শিক্ষা কর্মকর্তারাও পরিদর্শন করেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।