বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে দু’দেশের ‘দৃঢ় সম্পর্ককে’ নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং কিউন।
২০২৩ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী দু’দেশের শক্তিশালী সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুই দেশকে এখন সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোকে বৈচিত্র্যময় করতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত অ্যাম্বাসেডর লেকচার সিরিজের ‘বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রখ্যাত কূটনীতিক এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান।

তিনটি মূল শব্দ-উদারতা, বৈচিত্র্য ও প্রজন্ম সবসময় বিবেচনায় রাখেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত লি বলেন, ‘বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যাদের অধিকাংশ জনসংখ্যাই বয়সে তরুণ, যারা এ বিষয়গুলোতে মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য। ’

আলোচক প্যানেলে আরও ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ইয়াংওয়ান কর্পোরেশন এবং কেইপিজেড কর্পোরেশন (বিডি) লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও সিইও কিহাক সুং, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের চেয়ারপারসন ড. রুবানা হক, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ইফতিখারুল করিম এবং রিসার্চ ফেলো ও বাংলাদেশ সেন্টার ফর টেররিজম রিসার্চের (বিসিটিআর) প্রধান শাফকাত মুনীর।

এনায়েতুল্লাহ খান রাষ্ট্রদূতের কথার সূত্র ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশ-কোরিয়া সম্পর্ক বেশ চমৎকার এবং ভবিষ্যতে আরও উজ্জ্বল হবে। আশা করি আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর এবং বিস্তৃত হবে। আমরা বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্কের একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব উপভোগ করব।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশ শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশের পরও দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারের পূর্ণ সুবিধা নিতে পারেনি এবং পোশাক ও চামড়ার বাইরে পণ্যের ক্ষেত্রে কোনো বৈচিত্র্য আনতে পারেনি। যেটা একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে তার জন্য খুবই বেদনার বিষয়।

সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, কোরিয়ান বিনিয়োগ নন-গার্মেন্টস, আইটি, টেকনোলজিক্যাল আপগ্রেডেশন এবং অন্যান্য সব বিষয়েও বৈচিত্র্য এনেছে, যেটা খুবই চমৎকার। আশা করি এফডিআইয়ের এই প্রক্রিয়া আরও গতি পাবে।

কিহাক সুং বলেন, চট্টগ্রামে কোরিয়ান ইপিজেডের টেক্সটাইল জোনটি বাংলাদেশে একটি ‘টেক্সটাইল হাব’ হয়ে ওঠবে, যা ব্যবসাকে আরও তরান্বিত করবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আরও ম্যানমেইড ফাইবার (এমএমএফ) উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য অনেক প্রচেষ্টা করতে হবে। যাতে এ ধরনের একটি সাপ্লাই চেইন এখানে সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

ড. রুবানা হক বলেন, বাংলাদেশ দ.কোরিয়ায় মাত্র ৩২৩ মিলিয়ন ডলারের পোশাক সরবরাহ করে। যেখানে তারা (কোরিয়া) অন্যান্য দেশ থেকে ৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি করে।

তিনি বলেন, তারা কী সরবরাহ করে এবং কোরিয়া কী কিনছে তার মধ্যে অমিল রয়েছে। আমাদের আরও ভালো বাজার ক্র্যাক করতে হবে এবং আমাদের মূল্য সংযোজন পণ্যগুলোতে আপনাদের সমর্থন প্রয়োজন। আমরা কোরিয়ার সঙ্গে আরও ভালো করছি এবং আরও বেশি কিছু করতে চাই।

ban/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে