আব্দুল আজিম, দিনাজপুর প্রতিনিধি: বৃক্ষপ্রেমী সকলেই হতে পারে না। এর জন্য প্রয়োজন স্বচ্ছ, ত্যাগী মনমানসিকতা। এমন মানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের শখ পূরণ করতেই ছুটির দিনে সরকারি চাকুরীজীবি আখতার হামিদ বিভিন্ন প্রকার গাছ রোপণ করে থাকেন। ফলে দিনাজপুরের মানুষ আখতার হামিদকে বৃক্ষপ্রেমী বলেন। নানা প্রজাতির গাছ, ফলদ-বনজ, সৌন্দর্য বর্ধক গাছ লাগানোই তার জীবনে সবচেয়ে বড় শখ। আখতার হামিদ দিনাজপুর শহরের উত্তর বালুবাড়ী এলাকায় বসবাস করেন।

এ বিষয়ে আখতার হামিদ সাহেবের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সরকারী চাকরি করি তাই ছুটির দিনে বা অবসর সময় পেলেই মানুষের কল্যাণে গাছ লাগাই। ছোট বেলা থেকেই বাবা-মা’র কাছে গাছ লাগানোর উৎসাহ পেয়েছি। ছোট বেলায় বাবার সাথে বাড়ির পার্শ্বে সরকারি রাস্তার ধারে ফাঁকা জায়গায়, পুকুর পাড়ে তাল, কড়ই, বাঁশ, বরই, বেল, আম, কাঁঠাল, লেবু এবং সৌন্দর্যবর্ধক বিভিন্ন চারা রোপণ করেছি।
যা এখনও দৃশ‍্যমান রয়েছে এবং কিছু গাছ দিয়ে বাড়ির আসবাবপত্রও তৈরি করেছি। যেখানে গাছ কেটেছি সেখানে পুনরায় গাছ লাগিয়ে দিয়েছি।

তিনি আরও জানান, যেখানেই চাকরির সুবাদে যেতে হয় আমি সেখানেই বৃক্ষ রোপণ করেছি। এই বৃক্ষ রোপণ যেন আমার রক্তে মিশে গেছে। নিজে গাছ লাগিয়ে সেই গাছের ফল খাওয়ার মত আনন্দ অন‍্যরকম। বৈচিত্র্যময় এই আনন্দ যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। উপলব্ধি করতে হয়।

জনাব মো: আখতার হামিদ দিনাজপুরে এসেও সেই গাছ লাগানোর কাজটি ভুলে যাননি তিনি। যথারীতি দিনাজপুর সদরের বিভিন্ন সরকারি জায়গায় যেমন- রামসাগর জাতীয় উদ‍্যানের প্রধান রাস্তায়, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডাম্পিং এরিয়া থেকে পূর্ব দিকে, শিশু পার্কের পুকুর পাড়ে, শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের ধারে তালসহ বিভিন্ন গাছ রোপন করেছেন। অনেককে তিনি ফল ও ফুলের চারা উপহার দিয়েছেন।

তিনি তার সন্তানদের কোন কোন জায়গায় তাল গাছ লাগিয়েছেন তা জানিয়েছেন। কারণ তার অবর্তমানে তার সন্তানরা সেই গাছের মধ‍্যে তার বাবার স্মৃতি খুঁজে পাবে।

তাছাড়া যেসব গাছ জনাব মো : আখতার হামিদ লাগিয়েছেন তা কিছুটা হলেও জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব থেকে পরিবেশকে রক্ষা করবে। এর পাশাপাশি মানব কল‍্যাণ ও সৌন্দর্য্য বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

এছাড়া তিনি গাছ লাগানোর একটা সুন্দর ধারণাও দিয়েছেন তা হলো- বট, পাকুর গাছের ডাল মাটিতে পঁতে দিলেও গাছ হয়ে যাবে যেমন ৮-১০ইঞ্চি মোটা এবং ৭-৮ফিট লম্বা বট,পাকুড় । বট,পাকুড় গাছের ডাল রাস্তার কোন মোড়ে বা ফাঁকা জায়গায় লাগালেই গাছ হয়ে যাবে। যার নীচে এক সময় মানুষ বিশ্রাম নিতে পারবে। এছাড়া পশু-পাখির বাসা বাঁধবে, ফল খাবে। সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পাবে।

আসলে গাছ আমাদের জীবনের সাথে অতঃপ্রতভাবে জড়িত। জনাব মো : আখতার হামিদ সাহেব গাছ লাগানোর এই অনুপ্রেরণা আমাদের সকলের জীবনের পাথেয় হয়ে থাক এটাই প্রত‍্যাশা। পরিবেশ রক্ষার আবাও তিনটা সাবাইকে গাছ লাগানোর অনুরোধ করেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে