কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী: প্রতিষ্ঠানের সভাপতির সাথে যোগসাজসে নিজের ভাতিজা ও ভাতিজার স্ত্রীকে লোক দেখানো পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ বাহাগিলী দারুস সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার সুপার শামছুল আলমের বিরুদ্ধে।
শুধু তাইনা তার আপন বড় ভাই মোসলেম উদ্দিনের ছেলে আল আমিনকে নিরাপত্তা কর্মী হিসাবে ও আর এক ভাই কেতাব উদ্দিনের ছেলে গোলাম মোস্তফার স্ত্রী কাছনাকে আয়া পদে নিয়োগের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।

এই দুইটি পদের জন্য শামসুল আলমের দেয়া নামধারী কতিপয় পরীক্ষার্থী শুক্রবার সকালে পরীক্ষায় অংশ নিলে সংবাদকর্মীরা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের লাইব্রেরিয়ান কাম ডকুমেন্টশন অফিসার (ডিজি প্রতিনিধি) মেহেরুন নেছাকে অবহিত করলে তিনি কারো কোন কথা না শুনিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে গোপনে পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন করেন। এদিকে নিয়োগের পূর্বে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল আমিন শাহ এর সাথে দর কষাকষি নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় গত মাসের ৭ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হয়। পরে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ টি এম নূরুল আমিন শাহকে ম্যানেজ করে গত শুক্রবার (০৬ অক্টোবর-২০২৩) তারিখে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে পরীক্ষা নেয়া হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

ইতিপূর্বে সুপার শামছুল আলম পরিবারের মোট ৩ জনকে এই মাদ্রাসায় নিয়োগ দিয়ে পরিবারতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। তিনি সহ-সুপার পদে তার আপন জামাতা আব্দুল কাদের,অফিস সহকারী পদে আপন ছোট ভাই লুৎফর রহমান ও নৈশ প্রহরী হিসাবে বড় ভাই আকতার হোসেনকে চাকুরী দেন। আবারও নিরাপত্তা কর্মী পদে আপন ভাতিজা আল আমিন ও ভাতিজা বউ কাছনাকে আয়া পদে নিয়োগ চুড়ান্ত করেছেন তিনি। কাছনা ও আল আমিনকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির তারিখ ও পত্রিকার নাম বলতে বললে তারা উত্তর দিতে পারেনি। কাছনা দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার স্থানে মানববন্ধন পত্রিকা বলে দেয়। একই ভাবে আল আমিনও পত্রিকার নাম মানববন্ধন বলে দেয়। এর ফলে যোগ্য প্রার্থীরা ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

অন্য দিকে মাদ্রাসাটির জমি দাতা আব্দুল করিম জানান, আমাকে চাকরি দেয়ার কথা বলে জমি নিয়েছে সুপার। দাতা সদস্য করার কথা থাকলেও জানি না রাতারাতি কিভাবে কখন, কোথায় ম্যানেজিং কমিটি হয়েছে, কিছুই জানিনা। আমার ছেলেকে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল কিন্তু তা না করে সুপার তার নিজস্ব ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়েছেন। গত শুক্রবার ওই প্রতিষ্ঠানে সকাল থেকে সাংবাদিকসহ স্থানীয় ব্যক্তিদের ভীড় জমাতে থাকে। জানতে পারলাম গোপনে নাকি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে, এলাকার কেউ জানে না।

আরেকজন জমিদাতা মোঃ আলী বলেন, সুপারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে অনিয়ম দূর্নীতিসহ নানান অভিযোগ আছে তার সঠিক তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে।

প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন বাজারে মুদি ব্যবসায়ী ছকিনুর ইসলামসহ অনেকে বলেন, মাদ্রাসার সুপার মাদ্রাসাটিকে নিজের বাপদাদার সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহৃত করে, কাউকে তোয়াক্কা করেন না। নিয়োগ হয়েছে কিনা কেউ জানেন না বলে জানান তাঁরা।

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের লাইব্রেরিয়ান কাম ডকুমেন্টশন অফিসার (ডিজি প্রতিনিধি) মেহেরুন নেছাকে প্রশ্ন করা হয় কত টাকার বিনিময় পকেট নিয়োগ দিয়েছেন? এ বিষয়ে কোন উত্তর না দিয়ে মুখ ঢেকে গাড়িতে উঠার চেষ্টা করনে তিনি। সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েন তিনি পরে তরিঘরি করে গাড়ীতে উঠে বসেন এবং ফলাফল প্রকাশ না করে দ্রæত ওই মাদ্রাসা থেকে চলে যান।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-ই-আলম সিদ্দিকী এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করলে ফোন রিসির্ভ করেন নি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে