ডেস্ক রিপোর্টঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিস্তা ইস্যু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে খুব শিগগির এ সমস্যার সমাধানে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। নয়াদিল্লী সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক বিবৃতিতে বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তিস্তা সমস্যা কেবলমাত্র আমার সরকার এবং শেখ হাসিনার সরকারই করতে সক্ষম হবে এবং যতশিগগির সম্ভব তিস্তার পানি বন্টন সমস্যার সমাধান হবে।

তিনি বলেন, আমাদের অভিন্ন স্থলসীমান্ত ও নদ-নদী রয়েছে। আমাদের জনগণ সেখানে বসবাস করে এবং জীবিকার্জন করে। প্রধানমন্ত্রী মোদি তিস্তাকে ভারতের জন্য, বাংলাদেশের জন্য এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন। তবে এ বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গের বিষয় বলেও উল্লেখ করে মোদি বলেন, আমি জানি, বাংলাদেশের জন্য মমতা ব্যানার্জীর দরদ আছে, আমারও আছে। আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং জনগণকে আশ্বস্থ করে বলছি, তিস্তা সমস্যা সমাধানে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমাদের দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘ সীমানা রয়েছে। তিনি ২০১৫ সালের জুন মাসে ঢাকা সফরের উল্লেখ করে বলেন, তার এ সফরের সময়ে স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয় এবং এই চুক্তি এখন বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ এই অঞ্চলের জন্য এখন একটি হুমকি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ ইস্যুতে তিনি ঢাকার অবস্থানের প্রশংসা করে বলেন, ভারত সন্ত্রাস মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগকে সমর্থন জানায়। তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রশ্নে শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি আমাদের সকলকে অনুপ্রাণীত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় এ অঞ্চলের জনগণের শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য তাদের প্রয়াস অব্যাহত রাখতে সম্মত হন। এতে বলা হয়, আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে আমাদের জনগণকে রক্ষা করতে এক সঙ্গে কাজ করব। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিস্তার শুধু বাংলাদেশ ও ভারতের জন্যই হুমকি সৃষ্টি করছে না, এই গোটা অঞ্চলের জন্যই হুমকি সৃষ্টি করছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দেশ সবসময় বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকবে। আমরা দীর্ঘদিন বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। তিনি বলেন, দু’দেশের সহযোগিতার সুফল অবশ্যই আমাদের জনগণ পাবে। তিনি বলেন, বৈঠকে আমাদের অংশীদারের বিষয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে আমরা আমাদের সহযোগিতার বিষয়ে একমত হয়েছি এবং আমাদের এই সহযোগিতাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এক সঙ্গে কাজ করতেও সম্মত হয়েছি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর দেশ নতুন নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে তুলতে চায়, বিশেষ করে, কিছু উচ্চ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে। যেখানে দু’দেশের যুবসমাজের সম্পৃক্ততা থাকবে। এ ছাড়া ইলেক্ট্রোনিক, তথ্য-প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা, মহাকাশ গবেষণা ও বেসামরিক পারমাণবিক শক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী। তাঁর দেশ দু’দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা সৃষ্টি করতে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সামগ্রী ক্রয়ে সহায়তায় ৫০০ মিলিয়ন মাকির্ন ডলারের একটি ঋণ ঘোষণা করতে পেরে আমি খুশি হয়েছি। বাংলাদেশের প্রয়োজন ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আমরা এটি বাস্তবায়ন করব।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে