ডেস্ক রিপোর্টঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, বিশ্বব্যাংককে পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করে জাতি হিসেবে আমাদেরকে অপমান করার কারণ জানাতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক সন্দেহের বশবর্তী হয়ে পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করে জাতি হিসেবে আমাদের অপমান করেছে। আমরা এ অপমানের কারণ জানতে চাই।’
কাদের আরো বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক অপমানের কারণ সম্পর্কে সদুত্তর দিতে না পারলে ভবিষ্যতে অন্য কোন প্রকল্পে তাদের ফান্ড আসবে কি আসবে না তা গভীরভাবে ভেবে দেখা হবে।’
ওবায়দুল কাদের বুধবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগস্থ পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ট্যানারী শিল্প স্থানান্তর : পরিবেশ সংরক্ষণ ও জাতীয় উন্নয়ন’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আলোচক হিসেবে অংশ গ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)’র পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও ওয়াসার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডীন ও দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কানাডার আদালতে পদ্মাসেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ মিথ্যা প্রতিপন্ন হওয়ার মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে বাঙ্গালী চোরের জাতি নয়, বীরের জাতি।
তিনি বলেন, তাই পদ্মা সেতু শুধু সেতু নয়, পদ্মাসেতু দেশের গৌরব ও সক্ষমতার প্রতীক। এ সেতু দেশের এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সারা পৃথিবীতে দৃশ্যমান। আর আমাদের মতো গরীব দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, রাজধানীর হাজারীবাগ ও তার আশে পাশের ট্যানারীগুলো সরানোর জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছে। ঢাকা শহরকে রক্ষা করতে হলে এ শিল্প স্থানান্তর করা খুবই জরুরী।
রাজনীতি ঠিক হয়ে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ শিল্পের মালিকরা যত দ্রুত এ শিল্প স্থানান্তর করবে ততই মঙ্গল।
অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, রাজধানীর হাজারীবাগ ও তার আশেপাশের এলাকার ২২০টি ট্যানারীর মধ্যে বেশির ভাগ ট্যানারীরই কোন বর্জ্য শোধানাগার নেই। প্রতিদিন এ সকল ট্যানারী থেকে ১৫ হাজার ৮শ’ ঘনমিটার বর্জ্য মিশ্রিত পানি সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে মিশছে।
তিনি বলেন, এর মধ্যে ১৭ হাজার ৬শ’ কেজি জৈব বর্জ্য এবং ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ক্রোমিয়াম পরিবেশকে মারাত্মকভাবে বিষাক্ত করছে।
অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ বলেন, ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর মতো এক সময় যুক্তরাজ্যের টেমস নদীর অবস্থা ছিল। কিন্তু টেমস তার অবস্থার পরিবর্তন করে বর্তমান রূপ পেয়েছে। তাহলে বুড়িগঙ্গাকেও আমরা টেমস নদীর মতো করতে পারব।
তিনি বলেন, পরিবশে রক্ষা করার দায়িত্ব শুধু সরকারের হতে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। সকলকে এ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, ট্যানারী শিল্পের বর্জ্যে পানি দূষিত হওয়ায় ইলিশ মাছের প্রজনন স্থান চাঁদপুর থেকে ভোলায় চলে গেছে। কারণ ইলিশ মাছ স্বচ্ছ পানি ছাড়া ডিম পারে না।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে