আহমদ রেজা, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ বিষয়ক প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়েছে। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রস্তাবটি যৌথভাবে উত্থাপন করেছে। প্রস্তাবটিতে ১০৯টি দেশ সহ-পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, যা এযাবতকালের সর্বোচ্চ।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে।

এতে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা, রাখাইন রাজ্যে স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্ট করা এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ সংস্থার সব মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবে মিয়ানমারের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানসহ আঞ্চলিক রাষ্ট্রসমূহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগের কথা তুলে ধরা হয়েছে।

এতে আাসিয়ানে গৃহীত পাঁচ দফা সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তের অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউশনের তদন্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসাবে বাংলাদেশের মানবিক প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি এবং বাংলাদেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়েছে। ‘রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং’ নীতির আওতায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে জাতিসঙ্ঘের অন্যান্য দেশগুলোর প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় বাংলাদেশের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংহতি পাওয়ার দাবি রাখে।

এই মানবিক কর্মকান্ডের জন্য প্রচুর অর্থায়নের প্রয়োজন হয়। তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আমরা মানবিক বিবেচানায় আশ্রয় দিয়েছিলাম। বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠির মিয়ানমারে ফিরে যাাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টিতে আমরা দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় – উভয় ফ্রন্টে বহুমুখী ক‚টনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে