ডেস্ক রিপোর্ট :  জেলায় অর্ধশতাধিক প্লাবন ভূমিতে চলছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ। তুলনামূলক নিচু জমিতে কার্পু, রুই, চিংড়ি, শিং জাতীয় মাছ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে অনেক যুবক। উদ্বুদ্ধ হচ্ছে অনেকেই। সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে আশাতীতভাবে। উপজেলা প্রশাসন বলছে, প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষিদের সবসময় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
চাঁদপুরে অনেক ভূমি রয়েছে যেগুলো ছয়-সাত মাস পানিতে তলিয়ে থাকে। বছরের বাকি সময় পানি শুকিয়ে যায়। যার ফলে বছরের অর্ধেক সময় এসব ভূমিতে কোনো ফসল চাষ করতে পারেন না চাষিরা। তাই এসব প্লাবন ভূমিকে কাজে লাগাতেই শুরু করা হয় মাছ চাষ। এ মাছ চাষে লাভবান ও সাফল্য আসায় প্লাবণ ভূমিতে এখন মাছ চাষে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে তুলনামুলক নিচু এলাকার জমিতে ফসল না হওয়ায় মাছ চাষের জন্যে লিজ দিয়ে আর্থিকভাবে উপকৃত হচ্ছেন জমির মালিকপক্ষও। মতলব উওর, কচুয়া ও ফরিদগঞ্জের বিশাল এলাকার প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ হচ্ছে। মতলবের তিতারকান্দি এলাকার মাছ চাষি হারুন শেখ বলেন, বছরের অর্ধেক সময় আমার এ জমি পানিতে ডুবে থাকে। কোনো ফসল হয় না। আমরা বেকার থাকি। ফসল না হওয়াতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই। এখন অনেকে এ জমিতে মাছ চাষ করতে আগ্রহী হয়েছে। বর্তমানে চাঁদপুরের কয়েকটি প্লাবন ভূমি রয়েছে যেখানে মাছ চাষে প্রায় কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে। পাশাপাশি লাখ লাখ টাকা লাভের মুখ দেখছেন ব্যবসায়ীরা। এ লাভের অংশ কোনো ব্যক্তি বিশেষ পায় না। এর সাথে অনেকই সম্পৃক্ত অনেকেই এ লভ্যাংশ পায়। বিশেষ করে যারা জমির মালিক, জেলে শ্রেণি , তত্ত্বাবধানকারি চাষিরা তারাও এ লাভের অংশ পায়।
প্লাবন ভূমিতে দীর্ঘ দু’বছর ধরে মাছ চাষ করছেন রফিক তালুকদার ও মকসুদ তালুকদার। তারা বলেন, আমরা প্লাবন জমিগুলো লিজ নিয়ে কার্পু জাতীয় মাছে চাষ করি। এখন আমরা প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ করলেও আমাদের তেমন প্রশিক্ষণ নেই। সরকারিভাবে যদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় তবে আমরা উপকৃত হতাম।
মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছে এসব প্লাবন ভূমিকে শনাক্ত করা হয়েছে। প্লাবন ভূমিকে মাছ চাষের উপযোগী করার জন্য সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৫১টি প্লাবন ভূমি শনাক্ত করেছে জেলা মৎস্য বিভাগ। এগুলোতে মাছ চাষ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চাষিদের মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের কারিগরি সহায়তা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সফিকুর রহমান বলেন, চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলার উদ্যোক্তরা প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এ দিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। আমরা কিছু প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। আশা করি, এসব উদ্যোক্তারা প্রশিক্ষণ নিলে তারা মাছ চাষে আরো সাফল্য অর্জন করতে পারবেন। বর্তমানে চাঁদপুরে ৫১টি প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ হচ্ছে। এর সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছে কয়েক শ মানুষ। প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ লাভবান হওয়ায় আগামীতে আরো অনেকেই এ ব্যবসায় আগ্রহী হবেন।

বি/এস/এস/এন


একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে