এম ডি বাবুল প্রতিনিধি: র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানাধীন পারুয়া এলাকার দূর্গম পাহাড়ের ছিড়াটিলা গ্রামে কতিপয় দুষ্কৃতিকারীরা মো: আজিজুল হক শামীম/ এ্যালেন শামীম এর আস্তানায় মাদকদ্রব্য ক্রয় বিক্রয়ের জন্য মাদক মজুদ করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ আনুমানিক ১২:৩০ ঘটিকায় বর্ণিত দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি ১। মোঃ শাকিল হোসেন (২৭), পিতা- নুর হোসেন মুন্সি, সাং-ইউসুফ পুর, থানা-চন্দ্রগঞ্জ, জেলা-লক্ষীপুর, ২। মোঃ ফারুক (২২), পিতা- মৃত আব্দুল হামিদ, সাং-কোদালা, থানা-রাঙ্গুনিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম এবং ৩। মোঃ আরিফ (২২), পিতা-মোঃ মফিজ, সাং-ইউসুফ আলী চৌকিদারের বাড়ী, থানা-রাউজান, জেলা-চট্টগ্রামদের আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে ছিড়াটিলা দূর্গম পাহাড়ের ছোট দোচালা টিনের ঘরে বিশেষ কায়দায় রক্ষিত স্টিলের ০২টি ট্রাংকের ভিতর হতে ০৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, এসএস পাইপ ও সাইকেলের প্যাডেলের চাকতি দিয়ে বিশেষভাবে তৈরীকৃত ০৪টি দেশীয় অস্ত্র, ৪৪ বোতল ফেন্সিডিল, ১৮০ পিস ইয়াবা, ১০ কেজি গাঁজা ও মাদক আস্তানার নিরাপত্তার কাজে ব্যবহৃত ০৩টি সিসি ক্যামেরা এবং বিভিন্ন ডিভাইস জব্দসহ আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
আটককৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ অত্র অঞ্চলের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক সম্রাট মোঃ আজিজুল হক শামীম /এ্যালেন শামীম এর নেতৃত্বে ছিড়াটিলা পাহাড়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা মাদক ক্রয়-বিক্রয় এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল।
যেহেতু এলাকাটি দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চল এবং অপরিচিত কোন লোকজন দেখলেই মাদক আস্তানার সিন্ডিকেটের সদস্যরা সতর্ক হয়ে যেত, যার ফলে তাদের অবস্থান সনাক্তকরণ ছিল একটি কঠিন বিষয়। তথাপিও র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি চৌকষ আভিযানিক দলের সদস্যরা গোয়েন্দা তৎপরতায় পাহাড়ের মধ্য দিয়ে বিশেষ কৌশলে এলাকায় প্রবেশ করে অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম হয়। উল্লেখ্য, পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক সম্রাট মোঃ আজিজুল হক শামীম এ্যালেন শামীম’কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
মূলত তাদের আস্তানাটি দূর্গম পাহাড়ী জনশূন্য টিলা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হওয়ায়, সেখানে অভিযান পরিচালনা করা অত্যন্ত দূরূহ। তাছাড়া আস্তানার সদস্যরা এলাকায় নজরদারি কঠোর করার জন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করতো, যাতে এলাকায় না থাকলেও মোবাইলের সাহায্যে তারা নজরদারি অব্যাহত রাখতে পারে। চক্রটি এলাকায় মাদক ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তার, জমি ও পুকুর দখল, এলাকার লোকজনের ওপর শারীরিক অত্যাচার, ধর্ষণসহ নানাবিধ অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে আসছিল।
উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনায় গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ শাকিল হোসেন এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম এবং লক্ষীপুর জেলার বিভিন্ন থানায় চুরি, নাশকতা, হত্যাচেষ্টা এবং মাদকসহ সর্বমোট ০৯টি মামলা এবং আসামি মোঃ আরিফ এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের রাউজান এবং রাঙ্গামটির চন্দ্রঘোনা থানায় ০২টি মাদক আইনে মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি ও উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র এবং জব্দকৃত সরঞ্জামাদি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে