মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ.কে.এম সুলতান মাহামুদ ও এএসআই সাদ্দামের বিরুদ্ধে টাকা দাবির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলার আগরপুর বাসস্ট্যান্ডস্থ হুযাইফা শিফা ডেন্টাল কেয়ারের সত্ত্বাধিকারী ডেন্টিস্ট মোছা. শিরিন আক্তার ওরুফে ফাতেমা।

সোমবার (২৬ জুলাই) দুপুরে কিশোরগঞ্জের বত্রিশস্থ শিরিন আক্তারের ফুফাত ভাইয়ের বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ডেন্টিস্ট মোছা. শিরিন আক্তার ওরুফে ফাতেমা।

সংবাদ সম্মেলনে মোছা. শিরিন আক্তার ওরুফে ফাতেমার স্বাক্ষরিত লিখিত এক অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, শিরিন আক্তারকে মারধোর, মেয়েকে অপহরণ ও ছেলের দাঁত ভাঙ্গার অভিযোগে গত ২ এপ্রিল কুলিয়ারচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগ নং-৫১৫। অভিযোগের জন্য দ্বায়িত্বরত অফিসার শিরিন আক্তারের নিকট ১০ হাজার টাকা দাবী করে। তাকে টাকা না দিয়ে তিনি কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ সুলতান মাহমুদের নিকট মামলার বিষয়টি নিয়ে গেলে তিনিও ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। আরো উল্লেখ করেন, পূনরায় কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ সুলতান মাহমুদ তাকে থানার বাহিরে নিয়ে গিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন আপনার কাজ করলে ৫০ হাজার টাকা দিতেই হবে। অন্যথায় আমার থানায় কোন কাজ হবেনা। আরো উল্লেখ করেন, স্থানীয় রামদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন উক্ত ঘটনায় জড়িত ও তার লোকজন তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।

শিরিন আক্তারের লিখিত অভিযোগ পত্রের কোথাও উল্লেখ করা হয়নি কত তারিখ ও কোন সময় কোথায় শিরিন আক্তারের নিকট ওসি এ.কে.এম সুলতান মাহমুদ ৫০হাজার টাকা দাবি করেছেন এবং দায়িত্বরত কোন অফিসার কত তারিখ ও কোন সময় কোথায় শিরিন আক্তারের নিকট ১০ হাজার টাকা দাবি করেছে এবং রামদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন টাকা চাওয়ার সময় কোথায় ছিলেন এবং তার কোন লোকজন তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে?

অথছ বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ সম্মেলন নিয়ে প্রকাশিত সংবাদগুলোতে দ্বায়িত্বরত অফিসারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এএসআই সাদ্দাম। কুলিয়ারচর থানা সূত্রে জানা যায়, এ থানায় এএসআই সাদ্দাম নামে কোন অফিসার নেই। আর কোন এএসআই শিশু অপহরণের অভিযোগ তদন্ত করতে পারে বলে মনে হয় না।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ পত্রে কেন উল্লেখ করা হয়নি দ্বায়িত্বরত কোন অফিসার কত তারিখ ও কোন সময় কোন স্থানে শিরিন আক্তারের নিকট ১০ হাজার টাকা দাবি করেছে এবং কোন কোন তারিখ ও কোন কোন সময়ে ওসি এ.কে.এম সুলতান মাহমুদ তার নিকট ৫০ হাজার করে টাকা দাবি করেছে? এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগকারী মোছা. শিরিন আক্তার ওরুফে ফাতেমা কোন উত্তরই দিতে পারেনি বরং এসব প্রশ্ন করায় শিরিন আক্তার এ প্রতিনিধির উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন আপনিকি বিচার করবেন? আমি যেখানে বলার সেখানে বলবো।

টাকা দাবীর তারিখ, সময় ও স্থানসহ কোন স্বাক্ষীর নাম বা প্রমাণ দিতে না পারায় টাকা দাবির ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করায় প্রশ্নবিদ্ধ দেখা দিয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে ওসি এ.কে.এম সুলতান মাহমুদ এবং কোন অফিসার শিরিন আক্তারের নিকট আদৌ ১০ এবং ৫০ হাজার টাকা করে দাবি করেছে, না কি শিরিন আক্তারের মনগড়া মতো কাজ না করায় কারোর প্ররোচনায় ওসি, অজ্ঞাত নামা অফিসার ও স্থানীয় রামদী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘটনা তৈয়ারি করে সংবাদ সম্মেলনের নাটক সাজিয়ে সাংবাদিকদের দিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ করিয়ে ওসি, অজ্ঞাত নামা অফিসার ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের মান সন্মান ক্ষুন্ন করেছে? তা গভীর ভাবে তদন্তের প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

এব্যাপারে রামদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মো. আলাল উদ্দিন বলেন, ওই মহিলা মিথ্য ঘটনা সাজিয়ে তাদের মান সন্মান ক্ষুন্ন করে আসছে। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবী করেন।

এ ব্যাপারে রামদী ইউনিয়নের বিট অফিসার এস আই মো. সাদ্দাম মোল্লার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই মহিলার নিকট টাকা দাবীর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ.কে.এম সুলতান মাহমুদ ওই মহিলার নিকট টাকা দাবীর কথা অস্বীকার করে বলেন, এসব বিষয়ে তিনি কিছুই জানেননা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে