কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ, (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় আলু চাষাবাদে লাভের মুখ না দেখলেও ওই জমিতে ভুট্টাচাষ করে নানা স্বপ্নের জাল বুনছেন চাষীরা।

জানা গেছে, এবার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় আগাম ও নাভী আলু চাষ হয়েছে ৬ হাজার ৬৬০ কেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় বৃষ্টিতে আগাম আলুবীজ পঁচে যায়। ফলে অনেক কৃষক একাধিকবার জমিতে আলু বীজ রোপন করেছিলেন। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় চাষীরা লাভের মুখ দেখতে পারেনি। এদিকে মৌসুমী আলু চাষে ফলন ভাল পেলেও আলুর দরপতনে মারাতক বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। প্রতিকেজি আলুর বর্তমান বাজার দর চলছে ৬ থেকে ৭ টাকা। এককেজি আলু উৎপাদনে চাষীর খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা। এতে করে চাষীরা প্রতি হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদে লোকসান গুনতে হয়েছে ৬৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা। এসব লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে আলু চাষের পরই জমিতে ভুট্টা চাষ করে নানা স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা। ভুট্টা চাষের জমিতে আর সার প্রয়োগ করতে হচ্ছেনা। দু একটি সেচ দিয়ে ফসল ঘরে তুলবেন তারা। ভুট্টা কাঁটা মারাই খরচ বাদে প্রতি হেক্টর জমিতে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন কৃষক। এতে কিছুটা হলেও আলু চাষের লোকসানের ধকল সামলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

মাগুড়া ইউনিয়নের ভুট্টাচাষী আনারুল ইসলাম ও আব্দুল হালিম জানান আলুতে লোকসান খাওয়ার পর লোকসান পুষিয়ে উঠতে একই জমিতে ভুট্টা চাষ করছি। একই কথা চাঁদখানা ইউনিয়নের নগরবন গ্রামের ভুট্টাচাষী কাশেম আলী জানান, তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। আলু চাষ করে তার লোকসান হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে ওই ৫ বিঘা জমিতে তিনি ভুট্টা চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন ভুট্টা বিক্রি করে আলুর লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন।

বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের আলু চাষী শামীম হোসেন জানান, তিনি এবার ২৩ বিঘা জমিতে আগাম আলু এবং ৬ বিঘা জমিতে নাভী আলু চাষ করেছেন। আগাম আলুতে কোন রকমে মুলধন পেলেও নাভী আলুতে লোকসান গুনতে হয়েছে। তিনি আলুর জমিতে ভুট্টা চাষ করে লাভের আশা করছেন। তিনি বলেন, গত বছর প্রতিকেজি ভুট্টা ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এবার সেরকম দাম পেলে আলুর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে। চাঁদখানা নগরবনের,শাহিন আলম, নিতাই বেলতলির শাহ আলমসহ এরকম হাজার হাজার চাষী আলুতে লোকসান গুনে ভুট্টাতেই সফলতার স্বপ্ন বুঁনছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ভুট্টার বহুবিধ ব্যবহার থাকার কারনে দিন দিন কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ভুট্টার চাষ বেড়েই চলেছে। মানুষের খাবারের পাশাপাশি ভুট্টা থেকে গো,মাছ ও হাঁস মুরগির খাদ্য তৈরী হয়। এ কারনে দিন দিন ভুট্টার চাষ বাড়ছে। তিনি আরো বলেন, আলুতে লোকসানের পর কৃষকরা যাতে সেই জমিতে ভুট্টা চাষ করে লোকসান পুষিয়ে নিতে পারে সেজন্য কৃষি অফিস থেকে সরকারীভাবে ভুট্টার বীজ সরবরাহসহ কৃষককে ভুট্টা চাষে সার্বক্ষনিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে