জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি আলহাজ্ব আহসান আদেলুর রহমানকে অকৃতজ্ঞ বেইমান লুটেরা ভদ্রবেশী প্রতারক, লোভী ও বিশৃঙ্খলাকারী বলে অভিহিত করেছেন সৈয়দপুর উপজেলা জাপার আহবায়ক আলহাজ্ব সিদ্দিকুল আলম। রবিবার (২৪ জুলাই) রাত সাড়ে ৯ টায় স্থানীয় জাপা কার্যালয়ে উপজেলা ও পৌর কমিটির যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।

এসময় আরও বক্তব্য করেন, উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় জাপার ছাত্র বিষয়ক সহ সম্পাদক ফয়সাল দিদার দিপু, যুগ্ম আহবায়ক লাকী বসুনিয়া ও আলতাফ হোসেন।উপস্থিত ছিলেন পৌর যুগ্ম আহবায়ক শফিউল আলম সুজন, যুগ্ম আহবায়ক শামসুদ্দীন অরুন, পৌর সদস্য সচিব রাকিব খানসহ উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতৃবৃন্দ।

ইকু গ্রুপের এমডি আলহাজ্ব সিদ্দিকুল আলম আরও বলেন, এই আদেল কে সৈয়দপুরের রাজনীতিতে আমিই এনেছি এবং চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে অর্থ ও শ্রম দিয়ে এমপি বানিয়েছি। আশা ছিল জাপা’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লী বন্ধু মরহুম এইচ এম এরশাদ স্যারের ভাগিনা সাবেক এমপি ড. আসাদুর রহমানের ছেলে শিক্ষিত মানুষ অত্রাঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জনসেবার মাধ্যমে পার্টিকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে।

কিন্তু হায়, সে গুড়ে বালু। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই শুরু করেছে লুটপাট। গরীবের জন্য বরাদ্দকৃত সব অর্থই তসরুপ করে চলেছে। ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। যৎ সামান্য কাজ করলেও তা একচেটিয়াভাবে কিশোরগঞ্জ উপজেলায়। তাও আবার প্রতিটি প্রকল্পের কমিশন অগ্রীম নিয়ে তবেই ডিও লেটার প্রদান করেছে। আর সৈয়দপুর সম্পূর্ণরুপে বঞ্চিত।

অথচ জনগণকে জবাবদিহি করতে হয় জাপা নেতৃবৃন্দকে। কারণ আমরাই সৈয়দপুরবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিয়েছিলাম। আমাদেরকে দেখলেই মানুষ জানতে চায় এমপি কোথায়? সরকারী বরাদ্দ কোথায়? কোন উত্তর দিতে পারিনা। কারণ তিনি দলীয় সভা সমাবেশ দূরের কথা সরকারী কার্যক্রমেও অংশ নেননা। তিনি ব্যস্ত শুধু ডিও বাণিজ্য আর গিরিঙ্গি নিয়ে।

এক্ষেত্রে তার সহযোগী হলো আজীবন পার্টির নাম ভাঙ্গিয়ে চিটারী করে সাধারণ মানুষের অর্থ আর সম্পদ কুক্ষিগতকারী কয়েকজন চাটুকার। তাঁর মধ্য একজন হলো চাকুরী দেয়ার কথা বলে মানুষের টাকা নিয়ে প্রতারণাকারী একাধিক মামলার পলাতক আসামী কাজী মইনুল।

এদের সাথে ষড়যন্ত্র করে এমপি কুটচালে বর্ধিত সভায় নিজে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুমোদন দেয়া সৈয়দপুর উপজেলা ও পৌর আহবায়ক কমিটিকে অসাংবিধানিক বা অসাংগঠনিক কায়দায় তুচ্ছ করে মাত্র ৭ দিনের মাথায় অবৈধ পকেট কমিটি ঘোষণা করেছেন। যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনী ও পার্টিকে খণ্ডিত করার অপকৌশল মাত্র। একারণে আমরা ওই অনিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রম ও কমিটিকে মানিনা। তাই সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং কুচক্রী এমপিসহ তার সাগরেদদের সৈয়দপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি।

এর প্রেক্ষিতে তারা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে ওই অবৈধ ব্যক্তিরা পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে গায়ের জোরে আমার বহিষ্কার দাবী করেছে। এসময় তারা আমাকে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করাসহ নোংরামি করেছে। তাদের অশ্লীল কথাবার্তা ও অঙ্গভঙ্গি থেকে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে নিবেদিত প্রাণ কোন নেতাকর্মী যেমন রেহাই পায়নি, তেমনি পার্টির ভাবমূর্তিও মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। যা আমাদেরকে ব্যাথিত করেছে। পল্লী বন্ধু এরশাদের মৃত্যুর এই মাসে এহেন মানহানিকর কর্মকাণ্ড কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবেনা।

আমরা অচিরেই সাধারণ সভা করে এমপি ও তার দোসরদের অন্যায় অপকর্ম প্রমানসহ জনসম্মুখে প্রকাশ করবো। একারণে তারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে খামখেয়ালিপনা করছে। তবে এর কঠিন খেসারত দিতে হবে। আমরা সৈয়দপুর তথা নীলফামারী জেলায় জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করতে বদ্ধ পরিকর। এজন্যই ইতোমধ্যে জনসমর্থনে এগিয়ে থাকা বিভিন্ন দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের পার্টির সাথে সম্পৃক্ত করেছি। এটা তাদের পছন্দ হয়নি। কারণ যোগ্য নেতারা তাদের দূর্নীতি ও লুটপাট প্রতিহত করবে। যেন পার্টির প্রতি জনমানুষের যে ভালবাসা আছে তা অক্ষুণ্ণ থাকে।

ফয়সাল দিদার দিপু বলেন, এই কুচক্রীরা পার্টির ধ্বংসের খেলায় মেতেছে। এদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে। তাই এদের সৈয়দপুরের যেখানেই পাওয়া যাবে দিগম্বর করা হবে। আমাদের উপজেলা আহবায়ক একজন সিআইপি শিল্পপতি। তিনি দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর ধরে জাতীয় পার্টির কান্ডারী হয়ে অবদান রেখে চলেছেন। তার নেতৃত্ব আমরা পরিচ্ছন্ন রাজনীতি উপহার দিতে পেরেছি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে