‘আমরা শিখছি,’ বিদেশের মাটিতে যেকোনো হারের পর বাংলাদেশি অধিনায়কেরা সচরাচর এই একটা কথাই বলেন। আজ অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ড সফরের শেষ ম্যাচে হারের পরও অধিনায়ক লিটন দাস তাঁর পূর্বসূরিদের সুরেই কথা বললেন। এবারের সফর থেকে শিখে পরেরবার ভালো করার আশ্বাস দিলেন তিনি।

আজ অকল্যান্ডে বৃষ্টির কারণে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচ ১০ ওভারের ম্যাচে পরিণত হয়। ১৪১ রানের পাহাড় গড়ার জন্য নিউজিল্যান্ডের এটাই যথেষ্ট ছিল। ওই রান তাড়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ আবার অলআউট ৭৬ রানে। ১০ ওভারের ম্যাচে ৬৫ রানের বিশাল জয়! কিউই অধিনায়ক টিম সাউদিও হয়তো এতটা প্রত্যাশা করেননি। এক সফরে বাংলাদেশকে স্বাগতিকেরা ‘তিন ধরনের’ ক্রিকেটে হারানোর স্বাদ পেল। ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হওয়া বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচটা তো আসলে টি-টেন ফরম্যাটেই খেলল!

১০ ওভারে অলআউট হওয়ার মতো বিরল ঘটনাও দেখাল বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো অধিনায়কত্ব করতে নেমে ব্যর্থতার চূড়ান্ত দেখেছেন লিটন। কোথায় বোলারদের হতাশা ভুলবেন, উল্টো নিজে প্রথম বলেই আউট হয়েছেন শূন্য রানে। এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর ম্যাচ শেষে লিটন শোনালেন সেই মুখস্থ কথা, ‘ব্যাটিং ও ফিল্ডিংয়ে আমরা ভালো করতে পারছি না। তারই মাশুল গুনতে হয়েছে। উপমহাদেশের উইকেটে খেলে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও জানতে হবে, বাউন্সি উইকেটে কীভাবে খেলতে হয়। আমরা শিখছি এখানকার উইকেট ও কন্ডিশনে কীভাবে খেলতে হয়। আশা করি পরেরবার ভালো করব।’

বাউন্সি উইকেটে কীভাবে খেলতে হয়, সেটা এখনো শিখতে পারেনি বাংলাদেশ। অথচ বাউন্সি উইকেট আছে এমন দেশ, অর্থাৎ ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সফর করে নিউজিল্যান্ডেই। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত সাফল্যও ছিল। মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমানদের সেঞ্চুরি আছে নিউজিল্যান্ডে। অর্জনের ছোট তালিকায় অবশ্য লিটনের ভাগ নেই।

লিটন এর আগেও নিউজিল্যান্ড সফর করেছেন। ২০১৯ সালে তিন ওয়ানডে ইনিংসে করেছিলেন ৩ রান। এবারও তিনটি ওয়ানডে ইনিংস ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলে লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৫০ রান। নিউজিল্যান্ডে এখন পর্যন্ত ১১ ম্যাচ খেলে লিটনের গড় ৯! আর দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হিসেবে ধরলে পেসবান্ধব উইকেটে ২৬ ম্যাচে লিটনের রান ৩৮০। গড় ১৪.৬২। পারফরম্যান্সই বলছে, বাউন্সি উইকেটে কীভাবে খেলতে হয়, সেটি এখনো শেখেননি লিটন।

এই সিরিজে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলছেন মোহাম্মদ নাঈম, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, শরিফুল ইসলামরা। প্রত্যেকেই কোনো না কোনো ম্যাচে ভালো করেছেন। কিন্তু ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স ছিল না কারওই। তাঁরা এবারের নিউজিল্যান্ড অভিজ্ঞতা থেকে কী শিখলেন, এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা। যদিও দলের তুলনামূলক অভিজ্ঞ সৌম্য সরকার, লিটন, রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদদের উদাহরণ ‘শিক্ষা নেওয়া’র ব্যাপারে খুব একটা আশাবাদী হতে দিচ্ছে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে