ডেস্ক রিপোর্ট :  দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের কাছে ৮ উইকেট সিরিজ জয়ের ইতিহাস হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। তবে সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়ার সুযোগ এখনো রয়েছে টাইগারদের সামনে। তৃতীয় ও শেষ টি-২০ জিতলেই ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মত সিরিজ জয়ের স্বাদ পাবে বাংলাদেশ। রোববার নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি।
নিজেদের মাটিতে কখনো টি-২০ সিরিজে হারেনি ভারত। তবে দেশের মাটিতে ভারতকে টি-২০ সিরিজে হারানোর পথ তৈরি করেছে বাংলাদেশ। জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করে টাইগাররা। দিল্লিতে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে জয় পায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। এরপর আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মার বিধ্বংসী ব্যাটিং-এ বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দীর্ঘায়িত হয়। ৬টি করে চার-ছক্কায় ৪৩ বলে ৮৫ রান করেন রোহিত। সিরিজে সমতা ফেরায় ভারত।
কিন্তু তারপরও সিরিজ জয়ের আশা ছাড়েনি বাংলাদেশ। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয়ার ব্যাপারে আশাবাদি বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় ম্যাচে আমরা ভালো অবস্থায় ছিলাম। কিন্তু ব্যাটিং-এ আমরা কিছু ভুল করেছি। তবে আমরা বিশ্বাস করি, আমরা ভারতকে চাপে রাখতে পারি এবং যেকোন দিনই তাদের হারাতে পারি।’
চলতি সিরিজেই ভারতকে এই ফরম্যাটে প্রথমবারের মত হারানোর নজির গড়ে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। এরমধ্যে ৯টিতে জিতেছে ভারত।
সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে দু’টি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশ থেকে বাদ পড়ছেন মোসাদ্দেক হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান। গ্রোয়েন ইনজুরিতে পড়েছেন মোসাদ্দেক। তার জায়গায় খেলবেন মোহাম্মদ মিঠুন। আর দু’ম্যাচে মাত্র ৪ ওভার বল করেছেন ফিজ। তার পরিবর্তে প্রায় এক বছর পর টি-২০ খেলতে নামবের আরেক বাঁ-হাতি আবু হায়দার। প্রায় এক বছর পর টি-২০ খেলতে নামবেন তিনি।
এখন পর্যন্ত ৯১টি টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে ৩০টি জিতেছে টাইগাররা। ওয়ানডেতের মত প্রশংসনীয় সাফল্য নেই বাংলাদেশের। তবে এ বছর ছোট ফরম্যাটে ভালো ফল করেছে তারা। ৬ ম্যাচ খেলে ৪টি জিতেছে। তৃতীয় ম্যাচের ফলাফলের আগে টি-২০ বিশ্বকাপের আগে এ বছর বাংলাদেশের পারফরমেন্স ছোট ফরম্যাটে সেরা-ই।
তাই এ বছরের পরিসংখ্যান বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসী রাখতে সহায়তা করবে। তবে দ্বিতীয় ম্যাচের পর স্পষ্টভাবে ফেভারিট ভারত।
ব্যাটসম্যানদের মত বাংলাদেশের বোলারাদের নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। দ্বিতীয় ম্যাচে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ছাড়া কোন বোলারই ভারতের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি। প্রথম ম্যাচে স্লো পিচ থাকায় সেখান থেকে ফায়দা নিতে পেরেছিলো বাংলাদেশের বোলাররা। দিল্লির মত নাগপুরের পিচ না হওয়াতে বোলাররা ভালো করতে পারেনি। তারপরও শেষ ম্যাচে সাফল্য পাবার ব্যাপারে আশাবাদি বাংলাদেশ।
জুয়ারির তথ্য গোপন করার অভিযোগে আইসিসি কর্তৃক এক বছরের নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার আগে খেলোয়াড়দের সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর দাবীতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিপক্ষে ধর্মঘটে নেতৃত্ব দানকারী সাকিব আল হাসানকে নিয়ে টালমাটাল অবস্থার মধ্যেও সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় বাংলাদেশের জন্য ছিল অনেক বড় স্বস্তির বিষয়।
প্রথম ম্যাচ জয়ের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুুদুল্লাহ রিয়াদ বলেছিলেন, সিরিজে তাদের হারানোর কিছুই নেই। যা তাদের ভালো করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলো। এখন যদি, ডোমিঙ্গোর বক্তব্য বিবেচনা করা হয় তবে আবারো চাপ বিহীন ক্রিকেট খেলতে পারবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দল : মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম, সৌম্য সরকার, আমিনুল ইসলাম, আরাফাত সানি, মোহাম্মদ নাঈম, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, আল-আমিন হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, আবু হায়দার রনি ও মোহাম্মদ মিঠুন।
ভারত দল : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, সঞ্জু স্যামসন, শ্রেয়াস আইয়ার, মনিষ পান্ডিয়া, ঋসভ পান্থ, ওয়াশিংটন সুন্দর, ক্রুনাল পান্ডিয়া, যুজবেন্দ্রা চাহাল, রাহুল চাহার, দিপক চাহার, খলিল আহমেদ, শিবম দুবে ও শারদুল ঠাকুর।

B/S/S/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে