aslam_chowdhury

বিডি নীয়ালা নিউজ(১৫ই মে১৬)-অনলাইন প্রতিবেদনঃ  ভারতে ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’র এজেন্টের সাথে ‘সরকার উৎখাতের বৈঠকের’ অভিযোগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে পেলেই গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার। সেজন্য তার দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

রোববার বেলা ১২টার দিকে সিএমপিতে বিট পুলিশিং কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার এ তথ্য জানান।

তিনি বলেছেন, ‘ইতোমধ্যে তার দেশ ত্যাগে স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে চিঠি দেয়া হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাকে আমরা পেলেই গ্রেপ্তার করব।’

প্রসঙ্গত, ‘জেরুজালেম অনলাইন ডটকম’ পত্রিকায় চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়েছে, ‘ইসরাইলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির প্রধান মেন্দি এন সাফাদি সম্প্রতি ভারত সফর করেছেন। সেখানে বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করেছেন তিনি।

এন সাফাদি বলেছেন, ‘শিগগিরই সবক্ষেত্রে বাংলাদেশের দরজা ইসরাইলিদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। বাংলাদেশের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন তারা। নতুন সরকার ইসরাইলের সঙ্গে পূর্ণ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলবে।’

তবে ‘জেরুজালেম অনলাইন ডটকম’-এ প্রকাশিত ওই সংবাদের গ্রুপ ছবিতে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীকে দেখা যায় নি। তবে ওই সংবাদের সূত্র ধরে দেশের একটি পত্রিকা আসলাম চৌধুরীর সাথে এন সাফাদির বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরে সচিত্র সংবাদ প্রকাশ করে। এরপরই তৎপর হয়ে উঠে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীসহ দেশের বেশ কয়েক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনা বিষয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

এঘটনায় সাতজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে দুজন হলেন মোসাদের বাংলাদেশি এজেন্ট। এজেন্ট সিপন কুমার বসুর বাড়ি খুলনায় আর বিবেক দেবের বাড়ি ভারতের কলকাতায়। সাতজনের মধ্যে জামায়াত ঘরানার চার নেতা, চট্টগ্রাম বাড়ি ঢাকায় বিএনপি ঘরনার একটি পত্রিকায় কর্মরত এক সাংবাদিকও রয়েছেন বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘ওদের নিজস্ব বৈঠক ছিল, সরকার উৎখাতের বৈঠক নয়। দিল্লি সফরকালে ট্যুরিস্ট বাসে চলার সময় সিপন বাবুর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয়ের পরে আমরা লোটাস টেম্পলে তাদের সাথে একটি ছবিও তুলি। পরে ওদের নেতা মেন্দি এন সাফাদির সাথে বৈঠক হয়। এতে আমার কোনো সম্পৃক্ততা ছিলো না। আমি গেছি ব্যবসায়িক কাজে। আমি মোসাদ সম্পর্কে জানতাম না। এখন লেখালেখির পর ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার সম্পর্কে জানি।’

অভিযোগ আছে, বিএনপি রাজনীতিতে খুবই অল্প সময়ে পাকাপোক্ত অবস্থানে আসলাম চৌধুরী। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলে জিয়া পরিষদের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতিতে আসেন তিনি। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আসলাম চৌধরী সীতাকুণ্ড আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। তবে দলে তার প্রভাব দ্রুত বাড়তে থাকে। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হন। এর কয়েক বছর যেতে না যেতে ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল তিনি উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হন। আর সম্প্রতি বিএনপির কেন্দ্রীয় সম্মেলন শেষে হন দলের যুগ্ম মহাসচিব।

এর আগে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি নগরীর নাসিমন ভবনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আসলাম চৌধুরী। সাড়ে পাঁচ মাস কারাবন্দি থাকার পর ওই বছরই ১৫ জুন বিকেলে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি। মুক্তি পাওয়ার পর ওইদিন বিকেলে আবারও কারাফটক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দায়ের হওয়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর জন্য পুলিশ আবেদন করলেও আদালত তাকে জামিন দেন। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে আছেন।

 

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে