জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক অলিউল হসান জুয়েল (২৬) সহ মহসিন আলী সাগর (৩৮) নামে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ সৈয়দপুরেরই ৩ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ’র চাচা শামীম (৪২) গুরুত্বর আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত) রাত সাড়ে ১২ টায় রংপুরের তারাগঞ্জে শলেয়াশাহ খারুভাজ সেতুর কাছে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ওই তিনজনসহ মোট ৯ জন নিহত এবং প্রায় ৬০ জন আহত হয়েছেন। নিহত ৭ জনের পরিচয় মিললেও দুইজন এখনও অজ্ঞাত।
নিহত জুয়েল উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। তিনি ওই ইউনিয়নের আদানীর মোড় এলাকার মৃত মঞ্জুরুল ইসলামের ছেলে। আর সাগর পৌর এলাকায় স্টেডিয়াম সংলগ্ন কুন্দল কলেজপাড়া মহল্লার সাবেক ফুটবল রেফারী মকবুল হোসেনের ছেলে।

অপরজন হলেন সৈয়দপুর শহরের ক্যান্টবাজার এলাকার মাহবুব আলম (৪৮)। এ ঘটনায় সৈয়দপুরের পাশ্ববর্তী নীলফামারীর সংগলশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক আকিবুজ্জামান আকিবও গুরুত্বর আহত হয়েছেন। নিহত দুইজনই সৈয়দপুর বাস টার্মিনালে বিভিন্ন পরিবহণের কমিশন এজেন্টের দায়িত্বে ছিলেন।

রাতে রংপুরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস পৌঁছে দিয়ে তারা জোয়ানা পরিবহনে সৈয়দপুরে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে ঢাকাগামী ইসলাম এন্টারপ্রাইজ নামেে বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই সাগরসহ ৫ জন নিহত হয়। আর জুয়েল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫ টায় মারা যায়। আর সকাল ১০ টায় মারা যায় মাহবুব আলম।

সৈয়দপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার হাসান টুটুল বলেন, জুয়েল ও সাগর ভাই অত্যন্ত সরল মনের মিশুক প্রকৃতির মানুষ ছিল। জুয়েল ছাত্রলীগের নিবেদীত প্রাণ ছিল। আমরা এক মহৎপ্রাণ ছাত্রনেতাকে হারিয়েছি। তাদের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।

কামারপুকুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জিকো আহমেদ বলেন, দলকে একত্রিত করে মানবিক কাজে সব সময় এগিয়ে থাকতো সে। দলের সকলের নিকট সে পছন্দনীয় এক লিডার ছিল। তাঁকে হারিয়ে আমরা সকলে স্তব্ধ।

ছাত্রলীগ এই নেতার অকাল মৃতুতে শোক জানিয়েছেন নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম আপেল ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সরকারসহ সৈয়দপুর আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ।

সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন বলেন, ‘ অলিউল হাসান জুয়েল ও মহসিন হোসেন সাগরের মৃত্যুতে দুটি পরিবারের স্বপ্নের মৃত্যু হয়েছে। দু’জনের মায়ের কান্না কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। ছেলে হারা মায়েদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই। দুর্ঘটনায় দায়ীদের যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় সরকারের কাছে এটাই দাবি।

সোমবার বাদ জোহর সৈয়দপুর সরকারী কলেজ মাঠে মহসিন হোসেন সাগরের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আর বাদ আসর শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে অলিউল হাসান জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তাকে স্থানীয় হাতিখানা কবরস্থানে দাফন করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে