জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে পোল্ট্রি গবেষনা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের স্থায়ী কার্যালয় প্রতিষ্ঠায় প্রাথমিক ভাবে মাটি ভরাট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

সিডিউল বহিভুত ভাবে বালু ও মাটি দিয়ে ভরাট ও সীমানা প্রাচীরে নিম্ন মানের রড দিয়ে গ্রেটবিম ও পিলারের কাজ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

এমনকি কাজ শেষ করার আগেই প্রকল্পটির অর্থের প্রায় ৭০ ভাগ টাকা তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। প্রকল্পের প্রকৌশল বিভাগের তদারকিতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় সচেতন মহল।

কাজের গুণগত মানের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বত্বন কতৃপক্ষ অবগত না থাকায় অব্যাহত রয়েছে ওই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। গতকাল ৫ সেপ্টেম্বর সোমবার সরেজমিন গেলে ওই এলাকার জনগোষ্ঠি এসব অভিযোগ করেন।

জানা যায়, বাংলাদেশ প্রাণী সম্পদ গবেষনা ইন্সটিটিউটের অধিনে সৈয়দপুর উপজেলার কামার পুকুর ইউনিয়ন সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৮ একর জমি অধিগ্রহন করা হয় পোল্ট্রি গবেষনা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণ কাজ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মা এন্টার প্রাইজ ৩ কোটি ২০ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় নিচু জমিতে মাটি কিংবা বালু ভরাট ও ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫৪ হাজার ৫ শত টাকায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

সিডিউল মতে শুধু বালু দ্বারা ভরাটের কথা থাকলেও সেখানে মাটি ও বালু ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি এক নম্বর ইট, উন্নত সিমেন্ট, ১৬ এমএম বিএসআরএম, একেএস রড দ্বারা ২ হাজার ৩শত ৯০ ফুটের তিনটি গ্রেড বিম ও ২৬২টি পিলার ও কোপিং ২ হাজার ৩শত ৯০ ফুট নির্মাণ উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে এর চিত্র একেবারেই ভিন্ন। সেখানে স্থানীয় ইট ভাটার দুর্বল ইট, নামমাত্র পরিমানের সিমেন্ট ও নিম্ন মানের রড দিয়ে তৈরী করা হচ্ছে সিমানা প্রাচীন। আবার সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে কাজ সমাপ্ত না করেই ইতিমধ্যে ৭০ ভাগ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ওই প্রকল্পের কজন ব্যক্তি জানান।

এ নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মো: জহুরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে সব উপকরণের দাম বেশি। তাই মাঝে-মধ্যে এমন ইট কিংবা অন্যন্য উপকরণ থাকতেই পারে। তবে নিয়মিত এটি ব্যবহার করা হচ্ছে না। পোল্ট্রি গবেষনা প্রকল্পের প্রকৌশলী মো: অসিম জানান (কিছু ক্ষেত্রে) নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে না। তবে তার তত্বাবধানে নিম্নমানের এ কাজ কিভাবে হচ্ছে বিষয়টি জানতে চাইলেও তিনি বলেন, আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলী নিয়মিত পরির্দশন করেন ওই কাজ। তাই এ বিষয়ে তিনিই ভাল বলতে পারবেন। পোল্ট্রি গবেষনা প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আশরাফুল ইসলামের সাথে মোবাইল (০১৮১২০৪২১৫১) এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ নিয়ে সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো: মহসিনুল হক মহসিন বলেন, সরকার দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পুরণে গবেষনামুলক এ প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছেন। এটি পোল্ট্রি গবেষনায় মাইল ফলক ভুমিকা রাখবে। তবে এ প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ শুরু থেকেই অনিয়ম, এটা মেনে নেয়া যায় না। বিষয়টি তদন্তের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান তিনি।

জানতে চাইলে পোল্ট্রি গবেষনা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের পরিচালক সাজ্জাদ করিম বলেন, ওই প্রকল্প প্রাঙ্গন নির্মাণে আমাদের নিজস্ব প্রকৌশলী সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি নিয়মিত পরিদর্শনে যান নির্বাহী প্রকৌশলী। এরপরেও নিম্ন মানের নির্মাণ কাজ করার সত্যতা মিললে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে