train

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা কোচগুলো দিয়ে ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-খুলনা পথে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ফলে এবারও লাল-সবুজের নতুন ট্রেনে ওঠার স্বপ্ন অধরা থাকছে রংপুর বিভাগের যাত্রীদের। এর আগে ভারত থেকে আনা কোচ দিয়েও ওই সব পথে ট্রেন চালু করা হয়েছে। এতে বঞ্চিত হয়েছেন রংপুর বিভাগের রেলযাত্রীরা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্র জানায়, সরকার উন্নত রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সম্প্রতি ভারত থেকে ১২০টি ব্রডগেজ লাইনের ৬০টি কোচ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের ঋণে দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের কাপুরথালা রেলকোচ কারখানায় কোচগুলো নির্মাণ করা হয়। ইতিমধ্যে ভারত কোচগুলো সরবরাহ করেছে। সেগুলো দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় যান্ত্রিক নিরীক্ষণ (ডি-প্রসেসিং) করা হয়। পরে তা রেলওয়ে পরিবহন বিভাগকে হস্তান্তর করা হয়।

সূত্র আরও জানায়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ইন্দোনেশিয়া থেকে নতুন আরও ৫০টি লাল-সবুজ রঙের আধুনিক কোচ আমদানি করা হয়। এগুলো বর্তমানে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ইয়ার্ডে অবস্থান করছে। গত বৃহস্পতিবার কোচগুলোর মধ্য থেকে ১৪টি কোচ দিয়ে তৈরি একটি বহর সৈয়দপুর-ঈশ্বরদী রেলপথে পরীক্ষামূলক যাত্রা সম্পন্ন করে। এগুলো ঢাকা-রাজশাহী ও ঢাকা-খুলনা পথে চালানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ট্রেন পরিচালনার ক্ষেত্রে রংপুর বিভাগকে কৌশলে বঞ্চিত করছেন রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সম্প্রতি রাজশাহী-ঢাকা পথে নতুন কোচ দিয়ে তিনটি ট্রেন চালু করা হয়েছে। সেখানকার পুরোনো কোচগুলো দিয়ে দিনাজপুর-ঢাকা পথে একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত মিটারগেজ (ছোট) লাইনের স্থলে রেলপথটি মিশ্র গেজে (ডুয়েল ও মিটারগেজ) রূপান্তর করা হয়। তখন থেকে এ লাইনে নতুন ট্রেন চালু করার দাবি করছেন এলাকাবাসী।

নীলফামারী-৪ আসনের সাংসদ ও বিরোধীদলীয় হুইপ শওকত চৌধুরী বলেন, নীলফামারীর চিলাহাটি-ঢাকা রুটে চলাচলকারী নীলসাগর ট্রেনটিকে নতুন কোচ দিয়ে সাজানোর ব্যাপারে রেল মন্ত্রণালয়ে চিঠি (ডিও লেটার) দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেনগুলো অন্য পথে নিচ্ছে, তা বোধগম্য নয়।

রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সৈয়দপুর কারখানা শাখার সম্পাদক মোখছেদুল মোমিন বলেন, ‘শুনেছি এবারও আমরা নতুন ট্রেন পাচ্ছি না। সব নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রাজশাহী ও খুলনাতে। এমনটি হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ইতিপূর্বে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শনে এসে বলেছিলেন, পর্যায়ক্রমে ঢাকা-দিনাজপুর, ঢাকা-চিলাহাটি পথে নতুন ট্রেন দেওয়া হবে। নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে দ্বিতীয় বহর চালু হবে। তবু সে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হচ্ছে না।’

শিল্পপ্রতিষ্ঠান ইকো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিদ্দিকুল আলম বলেন, উত্তরাঞ্চলে শিল্পবিপ্লব ঘটছে। এ এলাকায় উত্তরা ইপিজেড, দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা, সেনানিবাস ও বহু সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা রয়েছে। তারপরও কেন এ অঞ্চলে নতুন কোচ দেওয়া হবে না?

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শওকত জামিল বলেন, পর্যায়ক্রমে নীলসাগর, একতা ও দ্রুতযান ট্রেনে নতুন কোচ দেওয়া হবে। সৈয়দপুর-খুলনা পথে চলাচলকারী রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনকেও নতুন কোচ দিয়ে সাজানো হবে। তবে এসব নিয়ে এখনো পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়নি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে