আসাদ হোসেন রিফাত, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ  লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় মাঠের পর মাঠ সবুজ সমারোহ রোপা আমনের ক্ষেত দেখে মনে হয়, এ যেন আবহমান গ্রাম বাংলার উদ্ভাসিত এক রূপ। কৃষকের সোনালী স্বপ্ন যেন লুকিয়ে আছে সবুজের মাঝেই।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক মাসের ব্যবধানে চোখ খুললেই দেখা যায়, মনোমুগ্ধকর সবুজ ধান ক্ষেতের অপূর্ব দৃশ্য। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। শরতের অপরূপ সৌন্দর্যের প্রতিক কাশ ফুলসহ হালকা হাওয়ায় দোল খাচ্ছে দিগন্ত জুড়ে সবুজ আমন ধানের ক্ষেত। চলতি আমন মৌসুমে চারা রোপণের পর ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। প্রকৃতির বৈরি আবহাওয়ার পরেও সেচ দিয়ে আমন ধানের চারা রোপণ করেছন কৃষকরা। কখনো প্রখর রোদ, কখনো বৃষ্টিতে ভিজে ধান ক্ষেত পরিচর্যা করছেন কৃষক।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, বিগত বছরের তুলনায় এবার আমন মৌসুমে তেমন বন্যা আর বৃষ্টির সঙ্গে লড়াই করতে হয়নি কৃষকের। তাই আমন ধান চাষে এবারের চিত্র ভিন্ন।

মৌসুমের শুরুতে বন্যার প্রভাব পড়েনি। চারা রোপণের পর পরই দফায় দফায় বৃষ্টি আর রোপণকৃত ধানের চারা কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় দ্রুত বেড়ে ওঠছে। তাই সবুজে ছেয়ে গেছে ধান ক্ষেত। সারা দিন কৃষক আর কৃষি শ্রমিকের কর্মব্যস্ততায় মুখরিত ফসলের মাঠ। আর দিগন্ত জুড়ে সবুজের মাঝেই উঁকি দিচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের খোর্দ্দ বিছনদই গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, আমি কৃষি অফিসের পরামর্শে আমন ধানের বীজ বপন ও চারা রোপণ করেছি। ১২০ শতক জমিতে এবার ধান চাষ করেছি। এতে করে চাষে আমার ১৭-১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

গত বছরের তুলনায় এ বছর বৃষ্টিপাতের হার কম হওয়ায় ক্ষেতে সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপণ করেছি। এখন দুই-একদিন পর পর বৃষ্টি হচ্ছে। ক্ষেতের অবস্থা আপাতত ভালোই দেখা যাচ্ছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান ক্ষেতের চেহারা যথেষ্ট ভালো। আশা করছি, ফলনও ভালো হবে। ফলন ভালো হলে ৩৫-৪০ মণ ধান তুলতে পারবো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, হাতীবান্ধা উপজেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ২৩ হাজার ৫২৯ হেক্টর। এবার চলতি রোপা আমন মৌসুমে ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। তার মধ্যে স্বর্ণা জাতের- ১৩০০০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ও ব্রি- ৭৫,৭১,৮০,৭২,৫২ জাতের ৬০০০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। আশা করছি শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হবে।

তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় ক্ষেতের অবস্থা বেশ ভলো। ফলে এবার ধানের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ধান ক্ষেতের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে- কৃষকরা এবার লাভবান হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে