ডেস্ক রিপোর্ট: পদ্মায় অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় মাদারীপুরের শিবচরে একটি তিন তলা স্কুলভবন, মাদ্রাসাসহ শতাধিক ঘর-বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এর দু’দিন আগে বিদ্যালয় সংলগ্ন দ্বিতল বিশিষ্ট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনসহ শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যায়। এনিয়ে গত এক সপ্তাহে একটি স্কুল ভবন, একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ২ শতাধিক ঘর বাড়ি স্থাপনা বিলীন হয়ে ভয়াবহ ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।

এরআগে আগস্ট মাসে এই ৩টি ইউনিয়নেই একটি মাদ্রাসা, ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি, ব্রিজ কালভার্ট, ফসলি জমি পদ্মা নদী গর্ভে বিলীন হয়।  এখনো ভয়াবহ ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে চরাঞ্চলের ৪টি স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, হাসপাতালসহ বহু স্থাপনা ফসলি জমি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে প্রথম দফা আগস্টে শিবচর উপজেলার চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ি ও বন্দরখোলা এই ৩ টি ইউনিয়নে ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দেয়। সে দফায় একটি মাদ্রাসা, ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি, ব্রিজ কালভার্ট, ফসলি জমি পদ্মা নদী গর্ভে বিলীন হয় । আবারো দ্বিতীয় দফা ভাঙ্গনে বুধবার সকালে কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের তিন তলা বিশিষ্ট মাগুরখন্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে বিদ্যালয়ের ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখা-পড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। একই দিন কাঁঠালবাড়ি আশরাফিয়া মাদ্রাসাসহ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এর আগে সোমবার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনসহ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখনো ভাঙন মুখে রয়েছে ৩টি স্কুল ভবনসহ ৪টি স্কুল, ২টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র-কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন হাটবাজারসহ ৩ ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, হাজারো বসত বাড়ি। এছাড়া আড়িয়াল খা নদী তীরবর্তী সন্নাসীরচর ও শিরুয়াইল ইউনিয়ন দুটিও আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক দিনের অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধিতে তীব্র স্রোতের তোড়ে নদী ভাঙ্গন ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। দ্বিতীয় দফা ভাঙ্গনে চরাঞ্চলের ৩ ইউনিয়নের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভাঙ্গন কবলিতরা ঘর বাড়ি নিয়ে অন্যত্র সরে যাচ্ছে। ঝুঁকিতে রয়েছে বিস্তীর্ণ জনপদ। 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তীব্র স্রোত থাকায় ভাঙ্গন এলাকা খুবই ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিলীন হওয়া বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া যাতে বন্ধ না হয় তার বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আল নোমান বলেন, নদীতে প্রচন্ড স্রোত রয়েছে। ভাঙ্গনের গতিও ভয়াবহ। নদীতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, নদী ভাঙন রোধে বড় একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেটি হলে নদী ভাঙ্গন থেকে মাদারীপুরবাসী রক্ষা পাবে বলে আশা করছি। তবে আপাতত জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা চলছে।

B/P/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে