ডেস্ক রিপোর্টঃ গত বছর পর্যন্ত এক দশকে ইমিগ্র্যান্ট ও নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় ২ লাখ ৭৭ হাজার ৭২৭ বাংলাদেশি গেছেন আমেরিকায়। অপরদিকে, গত ৮ বছরে লাল-সবুজ পাসপোর্ট বিসর্জন দিয়ে মার্কিন সিটিজেন হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন ৬৮ হাজার ১৯৫ জন। ইউএস সিআইএস এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট থেকে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালে মোট ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪৬ বাংলাদেশি গেছেন গ্রিনকার্ড নিয়ে। অর্থাৎ তারা পারিবারিক কোটা অথবা ডিভি লটারি কিংবা অন্য কোন পন্থায় ইমিগ্র্যান্ট ভিসা লাভ করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী-১৭১৪৭ জন গেছেন ২০১৬ সালে। দ্বিতীয় বৃহৎ হচ্ছে ১৫৪৯৪, ২০০৯ সালে। ২০০৮ সালে ৯৪০৯, ২০১০ সালে ১৩২৮৭, ২০১১ সালে ১৫০১৯, ২০১২ সালে ১৩৭৭৪, ২০১৩ সালে ১০৬৯৩, ২০১৪ সালে ১২০৯৯, ২০১৫ সালে ১৪০৯৩, ২০১৭ সালে গেছেন ১২৩৩১ জন।

নন-ইমিগ্র্যান্ট তথা স্টুডেন্ট, ট্যুরিস্ট, বিজনেস, ব্যবসা, কূটনীতিক ভিসায় গেছেন ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩৮১ জন। সবচেয়ে ২০১৪ সালে ৩৫০২৫ জন। ২৮০৮০ জন গেছেন ২০১৩ সালে। ২০০৮ সালে ৮৬২৭, ২০০৯ সালে ১০৫৪৪, ২০১০ সালে ১১১০৬, ২০১১ সালে ১১২৩৮, ২০১২ সালে ১৫৯১১, ২০১৩ সালে ২৮০৮০, ২০১৫ সালে ২১৬৩৬, ২০১৬ সালে ১৭৭১৫ এবং ২০১৭ সালে গেছেন ১৪৪৯৯ জন বাংলাদেশি।

এর মধ্যে কতজন ফিরেছেন সে তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে অনেকেই বিবাহ, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় গ্রিনকার্ড লাভ করেন।

ইউএসসিআইএসের তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি (৯৯৪৯) সিটিজেনশিপ নিয়েছেন। সবচেয়ে কম ৬৯৭৯ জন সিটিজেন হিসেবে শপথ নেন ২০১০ সালে। ২০১১ সালে ৭৩৫, ২০১২ সালে ৮৪১৭, ২০১৩ সালে ৯৫৭১, ২০১৪ সালে ৭৪৭৫, ২০১৫ সালে ৯৭৫০ এবং ২০১৭ সালে ৮৬২৯ জন সিটিজেন হয়েছেন।
গ্রিনকার্ড পাবার ৫ বছর পরই সিটিজেন হওয়া যায় প্রচলিত রীতি অনুযায়ী। তবে এর সঙ্গে আরও কিছু বিধি অনুসরণ করতে হয়।

জানা গেছে, ডিভি লটারি থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ যাবার পর ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসার সংখ্যা কিছুটা কমেছে। তবে পারিবারিক কোটা বহাল থাকায় সে ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আগ্রহ অনুযায়ী পারিবারিক কোটাকে সংস্কারের যে উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে সেটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশিদের আগমনের হার ক্রমান্বয়ে কমবে বলে সকলের ধারণা। কেবলমাত্র মেধাবি এবং দক্ষতা, উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন স্বজনরাই তখন ইমিগ্র্যান্ট ভিসার যোগ্য হবেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী মনোভাবকে ধরাশায়ী করতে ৬ নভেম্বরের মধবর্তী নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম এবং ডেমোক্র্যাটরা এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ।

সিটিজেনশিপে ভারতীয়রা : গত বছর ৫০ হাজার ৮০২ জন ভারতীয় শপথ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন হিসেবে। আগের বছরের চেয়ে তা ৪ হাজার বেশী। ২০১৫ সালে শপথ নেন ৪২২১৩ জন ভারতীয়। অর্থাৎ, প্রতি বছর গড়ে ৪ হাজার জন করে বেড়েছে। গত বছর মোট ৭ লাখ ৭ হাজার ২৬৫ জন বিদেশী শপথ নেন আমেরিকার নাগরিক হিসেবে। আগের বছর সে সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬০। তারও আগের বছর ছিল ৭ লাখ ৩০ হাজার ২৫৯।

অর্থাৎ, সারাবিশ্বের লোকজনের সিটিজেনশিপ গ্রহনের পরিমাণ ক্রমেই বেড়েছে ভারতীয়দের। গত বছর সবচেয়ে বেশী মেক্সিকান শপথ নেন, ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৯। অনেক কম হলেও ভারতীয়রা হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম অভিবাসী এবং তৃতীয় শীর্ষে রয়েছে চীন ৩৭৬৭৪ জন। চতুর্থ ফিলিপাইন, ৩৬৮২৮। ডমিনিকান রিপাবলিকের ২৯৭৩৪ এবং কিউবার ২৫৯৬১ জন শপথ নিয়েছেন গত বছর।

গত বছর সিটিজেন হিসেবে শপথ গ্রহণকারিদের মধ্যে মহিলার সংখ্যা বেশি, ৩৯৬২৩৪ জন। গত বছর শপথগ্রহণকারি ভারতীয়দের মধ্যে ১২ হাজার জন বাস করছেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। এরপরে রয়েছেন নিউজার্সিতে ৫৯০০ এবং টেক্সাসে ৩৭০০।

B/P/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে