গত দুই দশকে প্রায় তিনগুণ বেড়েছে বৈশ্বিক সম্পদের পরিমাণ। সম্পদ বাড়ার এ তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে সবার উপরে চীন।এ কারণে দেশটি এখন বিশ্বের অন্যতম ধনী রাষ্ট্র। সম্প্রতি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাককিনসি কর্পোরেশনের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

বিশ্বব্যাপী মোট যে আয় হয় তার ৬০ শতাংশ ১০টি দেশের দখলে। সেই ১০টি রাষ্ট্রের সম্পদের পরিমাণের ওপর গবেষণা চালিয়েছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি।

এক সাক্ষাৎকারে প্রতিষ্ঠানটির অংশীদার জ্যান মিশকে বলেন, আমরা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি ধনী।

তাদের হিসাব অনুযায়ী ২০২০ সালে বিশ্বের মোট সম্পদ পৌঁছেছে ৫১৪ ট্রিলিয়ন ডলারে, ২০০০ সালেও যা ছিল ১৫৬ ট্রিলিয়ন ডলার। এই সময় চীনের সম্পদের পরিমাণ সাত ট্রিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১২০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। অর্থাৎ এক তৃতীয়াংশই এসেছে চীনের হাত ধরে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালে মোট সম্পদের পরিমাণ ৯০ ট্রিলিয়ন ডলার, যা দ্বিগুণেরও বেশি। সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়া শীর্ষ দশের বাকি দেশগুলো হলো- যথাক্রমে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, মেক্সিকো ও সুইডেন।

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই অর্থনীতি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের। অথচ উভয় রাষ্ট্রেই দুই-তৃতীয়াংশ সম্পদ দখল করে রেখেছেন ১০ শতাংশ ধনী। প্রতিনিয়ত তাদের সম্পদের পরিমাণ বাড়ছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের মোট সম্পদের ৬৮ শতাংশ আবাসন ব্যবসায়ীদের দখলে। আবাসন খাতে সুদের হার কমে যাওয়া এর বড় একটি কারণ। দেখা গেছে, আবাসন খাতে জড়িত এক ব্যক্তি অন্যদের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি আয় করছেন। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদী হবে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে জ্যান মিশকে বলেন, মূল্য বাড়িয়ে সম্পদের পরিমাণ বাড়ানো অনেক প্রশ্নের জন্ম দেবে। এসব কার্যক্রমের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, আবাসন খাতের মূল্য বৃদ্ধি অনেককে বেকায়দায় ফেলে দেবে। খরচের তলানিতে পড়ে মালিকানা হারাবেন অনেকে। সেইসঙ্গে অর্থনৈতিক সংকটের বিষয়টিও রয়েছে।

২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের একটি সংকট দেখা গিয়েছিল। চীনেও এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। কারণ দেশটির আবাসন খাতে অতিরিক্ত ঋণ দেওয়া হয়েছে। এই ঋণ পরিশোধ না হলে সেখানকার আবাসন খাতে ধস নামতে পারে।

এছাড়া একটি খাতে সম্পদ বাড়লেও দীর্ঘমেয়াদী কোনো লক্ষ্য হাসিল হবে না। তাই দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ বাড়াতে আরও কার্যকর বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকবে সবাই। এতে বৈশ্বিক জিডিপির সুবিধা হবে। যদি তা না হয়, তাহলে আকস্মিকভাবে সম্পদ হ্রাস পেতে পারে। এক তৃতীয়াংশ কমে যেতে পারে বৈশ্বিক সম্পদের পরিমাণ।

ban/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে