ডেস্ক রিপোর্ট :উপকূলীয় জেলা ভোলার ৭উপজেলায় ২২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪২ টি সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ করা হচ্ছে। ‘বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রায়ণ প্রকল্প’র মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র অধীনে এসব স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টার নির্মিত হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রতিটি আশ্রায়ণ কেন্দ্র নিচতলা ফাঁকা রেখে তৃতীয় তলা পর্যন্ত সম্পন্ন হবে। দুর্যোগকালীন সময়ে প্রতিটি কেন্দ্রে ২ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে করে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় লাখো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
জেলা এলজিইডি সূত্র জানায়, এসব সাইক্লোন সেল্টারের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে ইতোমধ্যে ১০টির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। অন্যগুলোরও কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৯টি, দৌলতখানে ৩টি, বোরহানউদ্দিনে ২টি, লালমোহনে ৭টি, তজুমুদ্দিনে ৫টি, চরফ্যাসনে ১০টি দ্বীপ মনপুরা উপজেলায় ৬টিসহ মোট ৪২টি রয়েছে। অত্যাধুনিক ডিজাইনের এসব সাইক্লোন সেল্টারে সরাসরি অসুস্থ রোগীকে র‌্যামের মাধ্যমে দোতালায় উঠানো, গরু-ছাগল রাখা, বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ সব ধরনের আধুনিক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন বাসস’কে বলেন, ভোলা উপকুলীয় জেলা হওয়াতে এখানে সাইক্লোন সেল্টার অতি গুরুত্ব বহন করে। দুর্যোগের সময় এসব আশ্রয় কেন্দ্রই হয়ে উঠে সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল। ৪২টি সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ কাজ ছাড়াও ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আরো ১২টির কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রতিটিই বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার হিসাবে ব্যবহার করা হবে। এর মাধ্যমে দুর্যোগের আতংক অনেটাই কমে আসবে স্থানীয় বাসিন্দাদের।ত্র আরো জানায়, এসব সাইক্লোন সেল্টারে জলোচ্ছ্বাসের সময় পানি সহজে সরে যাওয়ার জন্য নিচতলা ফাঁকা রাখা হয়েছে। আর দ্বোতালা ও তিনতলায় অন্যন্য সময় যখন ঘূর্ণিঝড় থাকবেনা তখন স্কুল হিসাবে ব্যবহার করা হবে। এছাড়া দুর্যোগের সময় এখানে মানুষ, গবাদি প্রাণী, গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্রসহ অবস্থান করতে পারবেন। নতুন নতুন এসব আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনে দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ তৈরিতে সহায়তা করবে।জেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি’র উপ-পরিচালক মো: শাহাবুদ্দিন মিয়া আজ বাসস’কে জানান, জেলায় বর্তমানে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৫শ’ সাইক্লোন সেল্টার রয়েছে। দুর্যোগ মুহূর্তে এসব কেন্দ্রে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ অবস্থান করতে পারে। এসব সেল্টারের অবস্থাও বেশ ভালো। তাই নতুন ৪২টি সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ দীপাঞ্চলে দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় কাজ দেবে। তবে আমাদের চরাঞ্চলগুলোতে আরো সাইক্লেন সেল্টার নির্মাণ প্রয়োজন।
শাহাবুদ্দিন মিয়া আরো জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুষ দিন দিন সচেতন হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষ আগাম সতর্কতা সংকেত পাচ্ছে। এতে করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও অনেক কম হচ্ছে বর্তমানে।
জেলা রেডক্রিসেন্ট’র সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম বলেন, জেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ আমাদের অন্যতম দাবি ছিলো। কারণ এখানকার মানুষকে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করতে হয়। আর সাইক্লোন সেল্টার হলো ঝড়ের সময় অন্যতম প্রধান নিরাপদ স্থান। তাই জেলায় আধুনিক এসব আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণকে সরকারের একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন।এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, দূর্যোগের সময় সকল টিউবয়েল পানির নিচে তলিয়ে যায়। তাই সাইক্লোন সেল্টারগুলোতে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে বিশুদ্ধ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে