mm muzahid
এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

সুরভিত পুষ্পমাল্য ও অমিত সম্ভাবনার স্বপ্নময় জীবনে একরাশ স্বপ্ন আজ তোমাদের চোখে মুখে ভাসছে।তোমরা যারা এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছো হ্যাঁ তোমাদেরকেই বলছি।তোমরা হয়ত অনেকেই স্বপ্ন বুনছো মেডিকেল/বুয়েট/ঢাবি/জবিতে পড়ার।তোমাদের স্বপ্নকে সাধুবাদ জানাই।এসব জায়গায় ভর্তি পরীক্ষার কম্পিটিশন লেভেল সম্পর্কে প্রোপার নলেজ আছে তো?সে অনুযায়ী পড়ালেখা করছো তো?অনেকেই এই প্রস্তুতির ৩/৪মাস নিজেকে সম্পূর্ণ উজাড় করে দিয়ে পড়তে পারছোনা।আল্লাহ না করুক তুমি যদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাও।তখন তোমাকে অনেকেই মাথায় হাত বুলিয়ে কিছু সান্ত্বনা মূলক বাণী শোনাবে।যেমন-ভার্সিটি কোনো ম্যাটার না,মেইন হলো তোমার যোগ্যতা,তুমি যেখানেই পড়ো সেখান থেকে ভালো করো।এখন থেকে বিসিএস, চাকরির প্রস্তুতি একটু একটু করে নেয়া শুরু করো।এই শোককে শক্তিতে পরিণত করে নতুন উদ্যমে পড়ালেখা শুরু করো।দেখবে অর্নাস শেষ করার পর তোমার ঐ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু আর তোমার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য থাকবেনা।আমি বলি কি সব কথাই ঠিক।কিন্তু সমস্যা হলো তোমার ঐ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু নিজেকে গড়ার সুযোগ-সুবিধা আর পরিবেশ যতটা পাবে, তার সিঁকি ভাগ ও তুমি পাবেনা।সত্য বলতে দ্বিধা নেই একজন ঢাবির স্টুডেন্ট যতটা সুযোগ সুবিধা পাই, আমি জবির শিক্ষার্থী হওয়ায় ততটা পাইনা।এই সত্যকে মেনে নাও।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাওয়ার ফলে অনেকের জন্য অর্নাস লাইফটা জাহান্নাম হয়ে যায়।ঠিকমতো ক্লাস করেনা,নিয়মিত পড়াশোনা করেনা।এমনও অনেক মাস যায়,যে মাসে একবার ও বই খুলে দেখেনা।প্রতিটা মুহুর্ত সে হতাশায় ভুগতে থাকে।তার উপর চারপাশের মানুষের খোঁচানি কথা তো আছেই।হতাশা আসতে আসতে সে স্টাক ফিল করে।ফলে কনফিডেন্স লেভেল অনেক নিচে নেমে যায়।অনেকেই চায় ঘুরে দাঁড়াতে।হয়ত কেউ কেউ পারে।আবার অনেকেই পারেনা।এই বাস্তবতা মেনে নাও।ছোট ভাই/বোন,তুমি যদি ব্যর্থ হও।তাহলে ব্যর্থতার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী কিন্তু তুমি।তখন যত যার ই দোষ দাও না কেনো কোনো কাজ হবেনা।আর তুমি যদি সফল হও,তাহলে তোমাকে সবাই কনগ্রাজুলেট করবে।বিভিন্ন কোচিং তোমাকে ডাকবে সংবধর্ণা দেয়ার জন্য।তুমি পাবে স্বীকৃতি টপ মোস্ট মেধাবীদের একটা অংশ হিসেবে।বিলিভ মি,পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে বাঁচতে হলে একটা আইন্ডিটিটির খুব প্রয়োজন।আর এখন যদি পড়ায় মন বসাতে না পারো।তাহলে ঐ তিন নাম্বার হাতটাই সারা জীবন দেখিয়ে যেতে হবে।

একবার ভেবে দেখো তো,তুমি যাকে কখনো পাত্ত্বা দাওনি।সারা বছর এক কাপড়ে পড়ালেখা করে,তোমার সাথেই ইন্টার পড়েছে, সারা জীবন যে তোমার থেকে কম নাম্বার পেয়েছে,ইভেন এসএসসি, এইচএসসিতে ও জিপিএ কম,সে যদি নামী দামি কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয় আর তুমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এলাকা কোনো কলেজের শিক্ষার্থী হও।তখন তোমার কেমন লাগবে বলোতো?বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা চান্স তোমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কিভাবে একটা মানুষের লাইফ শেপ হয়ে যেতে পারে।স্কুল -কলেজে যে বন্ধুকে তুমি ক্ষ্যাত,আনস্মার্ট বলে ছোট করতে,তোমাদের পার্টিতে নিতে না,তাকে মানুষ হিসেবেই গণ্য করতে না,আসামাজিকের ট্যাগ লাগিয়ে দিতে। সময়ের ব্যবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সে তরুণদের আইডল হয়ে যেতে পারে।রিয়ালাইজ করো কি?

পরিশেষে বলব,তোমার আম্মু-আব্বু যেন তোমাকে পরিচয় দিতে লজ্জ্বা না পাই।এর চেয়ে বড় ব্যর্থতা সন্তান হিসেবে পৃথিবীতে আর কিছু হতে পারেনা।এমন একটা পরিচয় তৈরী করো।যেন তারা যেখানে যায়,সেখানেই তোমার গল্প করে।লাইফে এই পর্যন্ত যত ভুল করেছো সব শুধরানোর এখনই মোক্ষম সময়।মনে রাখবে জীবন একটাই।জীবনের দাবার গুটি ভুল চেলে দিলে তা আর ফেরানো যায় না।এর পর ও যদি পড়তে মন না বসে,তাহলে বলব তুমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার যোগ্য নও।সরি,মাইন্ড করোনা,ঐ যে মনীষী বলে গেছেন ” শিক্ষার শেকড় তেতো হলেও এর ফল মিষ্টি”।তাই সব সময় লেখাতে মিষ্টি কথা আসেনা,মাঝে মাঝে তিতার স্বাদ দিতে হয়।

 

এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
লেখক-*শর্ট টেকনিক

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে