ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রথম সেশন ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বৃষ্টি। দ্বিতীয় সেশনে শুরু হয়েছিল পঞ্চম তথা শেষ দিনের খেলা। তাতে ফের বাধ সাধল বৃষ্টি। এই সেশনে ম্যাচের স্থায়িত্ব হলো মাত্র ১৩ বলের। ক্ষণিকের এই খেলায় কোনো উইকেট না হারিয়ে স্কোর বোর্ডে সাত রান যোগ করেছে বাংলাদেশ।

ব্যাট-বলের কয়েক মিনিটের খেলা চলকালীন শুরু হলো রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি। এরপরই ঝুম বৃষ্টি। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আকাশ ভেঙে নামল বৃষ্টি। সঙ্গে সঙ্গে মাঠ ছেড়ে উঠে গেলেন সবাই। তবে এই চলে যাওয়া প্রস্থান কিনা তার জন্য অপেক্ষা করতে হলো বিকেল পর্যন্ত। বল গড়াল মাঠে। ১৮.৩ ওভার টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ পায় বাংলাদেশ।

আজ বিকেলে চ্যালেঞ্জটা শুরুতেই আরো কঠিন করে দিলেন স্বাগতিক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। জহির খানের বাইরের বলে স্রেফ আত্মহত্যা করলেন তিনি। শর্ট খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষক আফসার জাজাইয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নিয়েছেন সাকিব। ভাঙল ১৮ রানের জুটি। ফেরার আগে ৫৪ বলে চারটি চারে ৪৪ রান করেছেন বাঁ-হাতি অলরাউন্ডার।

অধিনায়ক বাইশ গজ ছাড়ার পর মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার ব্যর্থ চেষ্টা করলেন সৌম্য সরকার। প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দিয়েয়েছেন রশিদ খান। এলবির ফাঁদে ফেলেন ১২ রানে থাকা মিরাজকে। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারলেন না তিনি। একট পরই দলকে এর খেসরাত দিতে হলো।

ব্যাট-প্যাডে লাগা সত্ত্বেও আম্পায়ার এলবি আউট দিয়ে দিলেন ‘নাইটওয়াচম্যান’ খ্যাত তাইজুল ইসলামকে। তাইজুলের আউটে বিরল এক কীর্তি হয়ে গেল রশিদ খানের। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে হাফসেঞ্চুরি ও দশ উইকেট নেওয়ার অনন্য এক অর্জন হয়ে গেল তার।

দ্বিতীয় ইনিংসে নয় উইকেটে ১৬৬ রান। নাঈম হাসানকে নিয়ে দশম উইকেট জুটিতে শেষ চেষ্টা সৌম্য করেছিলেন। কিন্তু বাঁচাতে পারেননি টেস্ট। শুধু আফগানদের স্বপ্নেরটা জয়টাকে বিলম্বিত করেছেন মাত্র। আর ২০ বল খেলতে পারলে, ১১ মিনিট টিকতে পারলেই অন্তত মান বাঁচানো ড্র করা যেতো। ৫৯ বলে ১৫ রানে ফিরে গেছেন সৌম্য। আট বলে এক রানে অজেয় থাকলেন শেষ ব্যাটসম্যান নাঈম।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৭৩ রানে। প্রথম ইনিংসে দল করেছিল ২০৫ রান। দুই ইনিংস মিলিয়ে সাকিবরা রান করেছেন আফগানিস্তানের প্রথম ইনিংসের চেয়ে সামান্য কিছু বেশি। চট্টগ্রাম টেস্ট শুরুর দিন টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে রহমত শাহ (১০২) ও আসগার আফগানের (৯২) ব্যাটিং দৃঢ়তায় প্রথম ইনিংসে ৩৪২ রান করেছিল আফগানরা।

ফিরতি ইনিংসে সফরকারীরা করেছে ২৬০ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ইব্রাহিম জাদ্রান (৮৭), আসগর (৫০), আফসারদের (৪৮*) সৌজন্যে আফগানরা পেয়েছিল ৩৯৭ রানের পাহাড়সম লিড। হিমালয়তুল্য ৩৯৮ রানের লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ৩০ রান করার পর থেকেই পথ হারাতে থাকে বাংলাদেশ।

এই ইনিংসে সাদমান ইসলাম ৪১ ও সাকিব ৪৪ রান করেছেন। এই দুজনের দৃঢ়তায় চট্টগ্রাম টেস্টে অন্তত ড্রয়ের আশায় ছিল বাংলাদেশ। এ জন্য স্বাগতিকরা চেয়েছিল প্রকৃতির দিকে। প্রকৃতি সায়ও দিয়েছিল তাতে। কিন্তু প্রায় আড়াই সেশন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার আশীর্বাদের পরও ড্রয়ের সুযোগটা কাজে লাগতে পারলেন না সাকিবরা। প্রথম ইনিংসে ২০৫ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর এবার দুশোও করতে পারলেন না তারা।

আফগানিস্তান বহুল প্রত্যাশিত জয়টা পেয়েছে ২২৪ রানের বিশাল ব্যবধানে। এই জয়ে একমাত্র টেস্টের সিরিজ নিশ্চিত করল আফগানরা। টেস্ট ক্রিকেটে তৃতীয় ম্যাচে এটা তাদের দ্বিতীয় জয় রশিদদের। এর আগে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে হারা দলটা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয়ের স্বাদ পায়।

দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্যে অবধারিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন রশিদ।

24N/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে