ডেস্ক রিপোর্টঃ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানসহ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের নেপথ্য কুশিলবদের মুখোশ উন্মোচন করতে একটি কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে ওঁতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি যে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সাথে যুক্ত ছিলেন সেটা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর বিদেশী টেলিভিশনে কর্নেল ফারুক ও রশিদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এই হত্যাকান্ড নিয়ে যে সমস্ত বই পুস্তক পরবর্তিতে প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোর মাধ্যমেও আজ স্পষ্ট হয়েছে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন।
হাছান মাহমুদ আজ গতকাল বিকেলে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান মোকারম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম বাবুল, রেজাউল করিম রাজা, এস এম জসিম উদ্দিন, রিদুয়ানুল হক টিপু, সেকান্দর আলম বাবর, মুক্তিযোদ্ধা রাজেন্দ্র প্রসাদ, আ হ ম নাছির উদ্দিন প্রমূখ।
হাছান মাহমুদ বলেন, আন্তর্জাতিক চক্র এবং এদেশে যারা বাংলাদেশ ও দেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা মুক্তিকামী মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল তাদের যোগসাজসে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে সরাসরি যুক্তদের বিচার হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের নীলককশা যারা প্রণয়ন করেছিল তাদের বিচার হয়নি।
তিনি বলেন, ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার স্বার্থে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পটভূমি যারা রচনা করেছে তাদের মূখোশ যদি উন্মোচন না করা যায় তাহলে ৫০ বছর পর কারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের কুশিলব ছিল, কারা পটভুমি রচনা করেছিল, কারা পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছিল তা অপ্রকাশিত থেকে যাবে। ইতিহাস ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা প্রয়োজন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর বিপর্যস্ত দেশকে উত্তরণ ঘটিয়ে বঙ্গবন্ধু যখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন একাত্তরের পরাজিত শক্তি যারা বাংলাদেশ চায়নি এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিরুদ্ধাচরণ করেছিল তারাই যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল।
হাছান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করায় তিনি স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনা করার যে স্বপ্ন এঁকেছিলেন সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। তিনি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের পরিচয় বদলে দিয়েছেন। স্বাধীনতার পরের দরিদ্র বাংলাদেশ এখন নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে রূপান্তরিত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কর্ণফুলি নদীর উপর কালুরঘাট সেতু নির্মাণের জটিলতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন বলে স্থানীয়দের আশ্বস্ত করে তথ্য মন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে আমার উদ্যোগে ও কেবিনেট সচিবের আয়োজনে ঢাকায় বৃহত্তর চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য একটা সমন্বয় সভা হয়েছে। সেখানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী, রেল, যোগাযোগ, নৌ পরিবহনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও চট্টগ্রামের মেয়রসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। ওখানেও কালুরঘাট সেতু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কালুরঘাট সেতু নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে সেটা নিরসনকল্পে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। এই জটিলতা নিরসন করে খুব সহসাই কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাসস

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে