জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারী সদরের কুন্দুপুকুর মাজারস্থ কবর থেকে ১৬টি কঙ্কাল চুরির অভিযোগ করেছেন মাজারের খাদেমসহ স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ওই চুরির ঘটনা ঘটে বলে জানান তারা। তবে আজ বুধবার (২০ এপ্রিল) ফজরের নামাজের সময় মাজার মসজিদের মসল্লিদের (নামাজী) নজরে এলে ঘটনাটি নিয়ে তোলপার শুরু হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগে জানাযায়, উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়নের কুন্দপুকুর মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে বুধবার সকালে ১৬টি কবরের মাটি খোড়া অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। তবে কবরগুলোতে দাফনের কাপড় পাওয়া গেলেও কঙ্কাল খুঁজে পাওয়া যায়নি। এতে করে ধারণা করা হচ্ছে ওই রাতেই এসব কবর থেকে কঙ্কাল চুরি করেছে দূর্বৃত্তরা।

ওই ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামের আশরাফুল হক (১৯) বলেন,’সকাল ১০টার দিকে কবরস্থানে এসে আমার বাবার কবরটা খোড়া দেখতে পাই। প্রথমে ধারণা করেছিলাম শেয়াল কুকুর খুড়েছে। পরে দেখতে পাই বেশ কয়েকটা কবরের একই অবস্থা। খবর পেয়ে, অনেকেই ছুটে এসে দেখেন এমন ১৭টি কবর খোড়া হয়েছে।

নীলফামারী পৌরসভার দক্ষিণ হারোয়া গ্রামের মো. ফারুক ইসলাম (৩৬) বলেন, ‘একবছর আগে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে আমার ভাজতি আরিফা (১২) মারা গেলে তাকে সেখানে দাফন দেওয়া হয়। আজ সকালে কঙ্কাল চুরির খবর পেয়ে এসে দেখি কবরটি খোড়া হয়েছে। কিন্তু তার কঙ্কালটি নিয়ে যায়নি। আমরা দেখার পর আবারও মাটি দিয়েছি।

একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৪৬) বলেন, ‘আমার বড়ভাই আজাহার আলী এবং বোন জিন্নাহ খাতুনের কবরে কঙ্কাল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দূর্বৃত্তরা ওই কঙ্কাল দুটি নিয়ে গেছে। স্থানীয়দের খবরে, পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন।’ তিনি জানান, ওই ১৭টির মধ্যে ১২ বছরের একটি মেয়ের কবর খোড়া হলেও তার কঙ্কাল নিয়ে যাইনি।

কুন্দপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন,’মঙ্গলবার রাতে ঝড়-বৃষ্টি ছিল। এই সুযোগে দূর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ এসে দেখে গেছেন, মাজার কমিটির সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ তিনিও ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। তবে কতটি কঙ্কাল চুরি হয়েছে সেটি না দেখে বলা সম্ভব না।

তিনি বলেন, স্থানীয়দের দেয়া তথ্য মতে সেখানে কবর খুড়ে কঙ্কাল চুরির ঘটনাটি ঘটতে পারে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে। পুলিশ তদন্ত করলে বিষয়টি নিশ্চিৎ হওয়া যাবে। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হবে।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রউপ বলেন, সেখানে পুলিশের একজন কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ যাওয়ার আগেই কবরের দাবিদাররা খোড়া কবরগুলো মাটি দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। কঙ্কাল চুরি গেছে এমন কেউ কিছু বলেননি। এ বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগও কেউ করেননি। এরই প্রেক্ষিতে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে